বিষয়:
রবীন্দ্রসঙ্গীত।
গান সংখ্যা:
শিরোনাম:
এল যে শীতের
বেলা বরষ-পরে।
পাঠ ও পাঠভেদ:
এল যে শীতের বেলা বরষ-পরে।
এবার ফসল কাটো, লও গো ঘরে॥
করো ত্বরা, করো ত্বরা, কাজ আছে মাঠ-ভরা―
দেখিতে দেখিতে দিন আঁধার করে॥
বাহিরে কাজের পালা হইবে সারা
আকাশে উঠিবে যবে সন্ধ্যাতারা―
আসন আপন হাতে পেতে রেখো আঙিনাতে
যে সাথি আসিবে রাতে তাহারি তরে॥
তথ্যানুসন্ধান
ক. রচনাকাল ও স্থান: ভারতীর পত্রিকার কার্তিক ১৩২৯ সংখ্যায় একটি গান প্রকাশিত হয়। ধারণা করা হয়, এই গানটিও আশ্বিন মাসেই রচিত হয়েছিল। এই বিচারে বলা যায় গানটি রবীন্দ্রনাথের ৬১ বৎসর ৫ মাস বয়সের রচনা।
খ. প্রকাশ ও গ্রন্থভুক্তি:
গ্রন্থ:
গীতবিতান-এর প্রকৃতি (উপ-বিভাগ: শীত-৩) পর্যায়ের ১৭৮ সংখ্যক গান।
গীতিচর্চ্চা (পৌষ ১৩৩২)।নবগীতিকা ২ (১৩২৯ বঙ্গাব্দ )।
প্রবাহিনী (বিশ্বভারতী ১৩৩২)। ঋতুচক্র ৫৩। পৃষ্ঠা: ১৫৮-১৫৯। [নমুনা: প্রথমাংশ, শেষাংশ]
স্বরবিতান পঞ্চদশ (১৫, নবগীতিকা দ্বিতীয় খণ্ড) খণ্ডের (চৈত্র ১৪১৩ বঙ্গাব্দ) নবম গান। পৃষ্ঠা ২৯-৩০।
পত্রিকা:
প্রবাসী (অগ্রহায়ণ সংখ্যা ১৩২৯ বঙ্গাব্দ)। (ভারতী পত্রিকা থেকে গৃহীত)
ভারতী
(কার্তিক ১৩২৯ বঙ্গাব্দ)।
দিনেন্দ্রনাথ
ঠাকুর-কৃত স্বরলিপি-সহ মুদ্রিত।
গ. সঙ্গীত বিষয়ক তথ্যাবলী:
স্বরলিপিকার: দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর। [স্বরবিতান পঞ্চদশ (১৫, নবগীতিকা দ্বিতীয় খণ্ড) খণ্ডের (চৈত্র ১৪১৩ বঙ্গাব্দ) দ্বিতীয় গান। পৃষ্ঠা ২৯-৩০।]
সুর ও তাল: স্বরবিতান পঞ্চদশ (১৫, নবগীতিকা দ্বিতীয় খণ্ড) খণ্ডের (চৈত্র ১৪১৩ বঙ্গাব্দ) গৃহীত মূল স্বরলিপির সুরভেদ/ছন্দোভেদ অংশে ১৩২৯ সংস্করণের দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর-কৃত একটি সুরান্তর দেখানো হয়েছে। উক্ত স্বরলিপিতে কোন রাগ-তালের উল্লেখ নেই। এতে গানটি ৩।৩ মাত্রা ছন্দে দাদরা তালে নিবদ্ধ। গানটি ইমন রাগে বাঁধা। এ প্রসঙ্গে ড. দেবজ্যোতি দত্ত মজুমদার তাঁর রবীন্দ্রসংগীতের ক্রমবিকাশ ও বিবর্তন গ্রন্থে লিখেছেন (পৃ: ২৩৫)-
"এল যে শীতের বেলা" গানটিতে স্বরের ও লয়ের পরিবর্তনের মাধ্যমে কথা ও সুরের অপূর্ব সামঞ্জস্যের পরিচয় পাওয়া যায়। এই গানটি ইমন রাগের উপর ভিত্তি করে বাঁধা হয়েছে। সঞ্চারীতে 'বাহিরে কাজের পালা হইবে সারা/আকাশে উঠিবে যবে সন্ধ্যাতারা' অংশে হঠাৎ কোমল ঋষভ ও কোমল ধৈবতের ও দুই মধ্যমের প্রয়োগে ইমন রাগ পূরবী রাগে পরিবর্তিত হয়েছে— কারণ এখানে 'সন্ধ্যাতারা' কথায় সন্ধ্যা সূচিত হচ্ছে। শুধু তাই নয়, গানটির অন্তরাতে, 'করো ত্বরা ত্বরা' অংশে লয়ের আড়ীতে যে তাড়াহুড়ো ভাব ফুটিয়ে তোলা হয়েছে, সঞ্চারীর ন"বাহিরের কাজের পালা" অংশে লয়ের আর সেই তাড়াহুড়োর বা ত্বরান্বিত করার আর ইঙ্গিত নেই গানের লয়ও যেন অনেকটা শ্লথ বা মন্থর হয়ে এসেছে, কারণ এই অংশে কাজ শেষ করার পর একটা অবকাশের ইঙ্গিত আছে।
রাগ: ইমন-পূরবী। তাল: দাদরা [রবীন্দ্রসংগীত : রাগ-সুর নির্দেশিকা । সুধীর চন্দ। (প্যাপিরাস, ডিসেম্বর ২০০৬)। পৃষ্ঠা: ৩৮]।
গ্রহস্বর: গা।
লয়: মধ্য।