পাঠ ও পাঠভেদ:
যে দিন ফুটল কমল কিছুই জানি নাই,
আমি ছিলেম অন্যমনে।
আমার সাজিয়ে সাজি তারে আনি নাই,
সে যে রইল সঙ্গোপনে॥
মাঝে মাঝে হিয়া আকুলপ্রায়
স্বপন দেখে চমকে উঠে চায়,
মন্দ মধুর গন্ধ আসে হায়
কোথায় দখিন-সমীরণে॥
ওগো, সেই সুগন্ধে ফিরায় উদাসিয়া
আমায় দেশে দেশান্তে।
যেন সন্ধানে তার উঠে নিশ্বাসিয়া
ভুবন নবীন বসন্তে।
কে জানিত দূরে তো নেই সে,
আমারি গো আমারি সেই যে,
এ মাধুরী ফুটেছে হায় রে
আমার হৃদয়-উপবনে॥
পাঠভেদ:
তথ্যানুসন্ধান
ক. রচনাকাল ও স্থান:
রবীন্দ্রনাথের পাণ্ডুলিপি
RBVBMS 229
পাণ্ডুলিপিতে লিখিত এই গানের শেষে- গানটি রচনার তারিখ ও স্থানের উল্লেখ আছে- '২৬ চৈত্র/১৩১৮/শিলাইদহ।
উল্লেখ্য,
১৩১৮ বঙ্গাব্দের ১১ চৈত্র বিশ্রামের উদ্দেশ্যে শিলাইদহের উদ্দেশ্যে রওনা দেন।
চৈত্র মাসের ৩১ তারিখ রবীন্দ্রনাথ শান্তিনিকেতনে ফিরে আসেন। ১৭ই চৈত্র থেকে
৩০শে চৈত্রের ভিতরে তিনি মোট আটটি গান রচনা করেন। এর ভিতরে ২৬শে চৈত্রে [সোমবার
৮ এপ্রিল] তিনি এই
গানটি রচনা করেছিলেন।
এই বিচারে
গানটি
রবীন্দ্রনাথের ৫০ বৎসর ১১ মাস অতিক্রান্ত বয়সের রচনা।
খ. প্রকাশ ও গ্রন্থভুক্তি:
গ্রন্থ
কাব্যগ্রন্থ নবম খণ্ড (১৩২৩ বঙ্গাব্দ, ১৯১৬ খ্রিষ্টাব্দ)। গীতিমাল্য-১৭। পৃষ্ঠা: ৩০৬। [নমুনা]
দ্বিতীয় খণ্ড, প্রথম সংস্করণ (বিশ্বভারতী, আশ্বিন ১৩৩৮ বঙ্গাব্দ)। পৃষ্ঠা: ৪১৩-৪১৪ [নমুনা প্রথমাংশ, শেষাংশ]
অখণ্ড, তৃতীয় সংস্করণ (বিশ্বভারতী, ১৩৮০) পর্যায়: পূজা-১৩৭, উপবিভাগ: বিরহ-১০। পৃষ্ঠা: ।
সঙ্গীত-গীতাঞ্জলি (১৯২৭ খ্রিষ্টাব্দ, ১৩৩৪ বঙ্গাব্দ)। ভীমরাও শাস্ত্রী-কৃত স্বরলিপি-সহ মুদ্রিত হয়েছিল।
GITANJALI (Song offerings) । নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্ত গীতাঞ্জলি (১৯১২ খ্রিষ্টাব্দ)। ২০ সংখ্যক গান।
ইংরেজী গীতাঞ্জলি'তে রবীন্দ্রনাথ-কৃত অনুবাদ :
On the day when the lotus bloomed, alas, my mind was straying, and I knew it not. My basket was empty and the flower remaind unheeded.
Only now and again a sadness fell upon me, and I started up from my dream and felt a sweet trace of a strange fragrance in the south wind.
That vague sweeetness made my heart ache with longing and it seemed to me that it was the eager breath of the summer seeking for its completion.
I knew not
then that it was so near, that it was mine, and that this perfect sweetness had
blossomed in the depth of my own heart.
রেকর্ডসূত্র:
প্রকাশের কালানুক্রম:
এ সকল গ্রন্থাদির পরে, ১৩৩৮ বঙ্গাব্দের আশ্বিন মাসে প্রকাশিত গীতবিতান -এর দ্বিতীয় খণ্ড, প্রথম সংস্করণে স্থান পেয়েছিল। এরপর এই গ্রন্থের প্রথম খণ্ড, দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশিত হয়েছিল ১৩৪৮ বঙ্গাব্দের মাঘ মাসে। এই সংস্করণে গানটি অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল পূজা, পর্যায়ের 'বিরহ' উপবিভাগে। ১৩৭১ বঙ্গাব্দের আশ্বিন মাসে প্রকাশিত অখণ্ড গীতবিতানের পূজা, পর্যায়ের 'বিরহ' উপবিভাগে ১৩৭ সংখ্যক গান হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। এরপর অখণ্ড গীতবিতানের তৃতীয় সংস্করণ পৌষ ১৩৮০ বঙ্গাব্দের পৌষ মাসে গানটি পূজা, পর্যায়ের 'বিরহ' উপবিভাগেই অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল।
স্বরলিপিকার:
ভীমরাও শাস্ত্রী।
[সঙ্গীত গীতাঞ্জলি
থেকে স্বরবিতান-৪১-এ
গৃহীত হয়েছে]
[ভীমরাও
শাস্ত্রী
-কৃত স্বরলিপির তালিকা]
সুর ও তাল:
স্বরবিতান একচত্বারিংশ (৪১) খণ্ডের ( বঙ্গাব্দ) গৃহীত স্বরলিপিতে রাগ-তালের উল্লেখ নেই। উক্ত স্বরলিপিতে ছন্দোবিভাজন দেখানো হয়েছে, ৩।২।২ ছন্দ; এই বিচারে এই ছন্দটিকে ‘
রাগ : বাহার-পঞ্চম। তাল: তেওরা। [রবীন্দ্রসংগীত: রাগ-সুর নির্দেশিকা , সুধীর চন্দ, প্যাপিরাস, ডিসেম্বর ২০০৬], পৃষ্ঠা ৭৬।
রাগ :
খাম্বাজ। তাল:
তেওরা।
[রাগরাগিণীর এলাকায়
রবীন্দ্রসংগীত, প্রফুল্লকুমার চক্রবর্তী, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সংগীত আকাদেমি,
জুলাই ২০০১], পৃষ্ঠা ১৩২।
[তেওরা
তালে নিবদ্ধ রবীন্দ্রসঙ্গীতের তালিকা]
গ্রহস্বর: ধা।
লয়: মধ্য।