যে তোমায় ছাড়ে ছাড়ুক, আমি তোমায় ছাড়ব না মা!
আমি তোমায় চরণ—
মা গো, আমি তোমার চরণ করব শরণ, আর কারো ধার ধারব না মা॥
কে বলে তোর দরিদ্র ঘর, হৃদয় তোর রতনরাশি—
আমি জানি গো তার মূল্য জানি, পরের আদর কাড়ব না মা॥
মানের আশে দেশবিদেশে যে মরে সে মরুক ঘুরে—
তোমার ছেঁড়া কাঁথা আছে পাতা, ভুলতে সে যে পারব না মা!।
ধনে মানে লোকের টানে ভুলিয়ে নিতে চায় যে আমায়—
ও মা, ভয় যে জাগে শিয়র-বাগে, কারো কাছেই হারব না মা॥
ও মন অসার মায়ায় ভুলে রবে
কতকাল এমনি ভাবে।
এ সব ভোজবাজীপ্রায়, (মন রে) কেউ কারও নয়,
দেখতে দেখতে কোথায় যাবে
সুখের আশে দেশ-বিদেশে
ভ্রমিতেছে নিশি-দিবে
তবু হল না সুখ, (মন রে) সদাই অসুখ
সুখের সে পথ চিনবি কবে ॥
যাদের এখন দিয়ে প্রাণধন
করছ যতন আপন ভেবে
যেদিন পাবে অক্কা, (মন রে) সবি ফক্কা
সঙ্গে তাদের কউ না যাবে
আপন যে জন, লও তার শরণ
ভববন্ধন এড়াইবে।
ভেবে বলছে গগন এবার বুঝি
আমার ( সাধের ) মানব জনম এমনি যাবে ॥
সূত্র: শতগান : সরলাদেবী
রবীন্দ্রসঙ্গীত গবেষণা গ্রন্থমালা-৩য় ভাগ/প্রফুল্লকুমার দাস। পৃষ্ঠা ৯৭।