—
জোরে বক্ষোদুয়ার আঁটি ॥
পরানটাকে গলিয়ে ফেলে দিস নে, রে ভাই পথে ঢেলে
মিথ্যে অকাজ—
ওরে নিয়ে তারে চলবি পারে কতই বাধা কাটি,
পথের কতই বাধা কাটি॥
দেখলে ও তোর জলের ধারা ঘরে পরে হাসবে যারা
তারা চার দিকে—
তাদের দ্বারেই গিয়ে কান্না জুড়িস, যায় না কি বুক ফাটি,
লাজে যায় না
কি বুক ফাটি ?
দিনের বেলা জগৎ-মাঝে সবাই যখন চলছে কাজে আপন গরবে
তোরা পথের
ধারে ব্যথা নিয়ে করিস ঘঁটাঘঁটি—
কেবল করিস ঘঁটাঘঁটি॥
ক. রচনাকাল ও স্থান: ২৬ ভাদ্র, ১৩১২ বঙ্গাব্দ। গিরিড।
গানটি রবীন্দ্রনাথের ৪৪ বৎসর ৩-৪ মাস বয়সের রচনা।
উল্লেখ্য, ১৯০৫ খ্রিষ্টাব্দের ১ সেপ্টেম্বর [শুক্রবার ১৬ ভাদ্র ১৩১২ বঙ্গাব্দ] তারিখে তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের শীতকালীন রাজধানী সিমলা থেকে
বঙ্গভঙ্গের নির্দেশ জারি করা হয়। এই নির্দেশ বলা হয়- ১৯০৫ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ই অক্টোবর (৩০ আশ্বিন ১৩১২ বঙ্গাব্দ)থেকে বঙ্গভঙ্গ কার্যকরী হবে। এই ঘোষণার
সাথে সাথে বঙ্গবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে এবং বঙ্গভঙ্গ আইন বাতিলের জন্য প্রতিবাদে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। বিশেষ করে, তৎকালীন বঙ্গের রাজধানী
কলকাতায় বঙ্গভঙ্গ আইন বাতিলের জন্য আন্দোলন তীব্রতর হয়ে ওঠে।
২৬ ভাদ্র রবীন্দ্রনাথ গিরিডিতে ছিলেন। তিনি বঙ্গভঙ্গ আইন বাতিলের জন্য প্রতিবাদে ২৩টি স্বদেশী গান রচনা করেন। উল্লিখিত গানগুলির
মধ্যে এই গানটি ছিল।