১৪৯১
দেবযানীর মনে প্রথম প্রীতির কলি জাগে।
নব-ঘন-পরশে
দেব-গুরু-কুমার ভোলে সঞ্জীবনী-মন্ত্র,
নব-সুর-ছন্দ |
ভাবসন্ধান:
নবন্দন রাগটি কাজী নজরুল ইসলাম সৃষ্ট। এই রাগে গান বাঁধার সময়, তিনি হিন্দু
পৌরাণিক মহাকাব্য মহাভারতের আদি পর্বের '৬৬-৬৭ অধ্যায়ের কচ- দেবযানী সম্পর্কিত
উপখ্যান অনুসরণ করেছেন। দেবতাদের আচার্য বৃহস্পতির পুত্র কচ, অসুরদের আচার্য
শুক্রাচার্যের কাছে গোপনে মৃতসঞ্জীবনী বিদ্যা লাভের উদ্দেশ আসেন। নানা প্রতিকূলতা
সহ্য করে কচ মৃতসঞ্জীবনী বিদ্যা লাভ করে। এই সময় শুক্রাচার্যের কন্যা দেবযানী তাঁকে
নানাভাবে সাহায্য করেন। এই সময় দেবযানী কচের প্রতি গভীরভাবে অনুরক্ত হয়। সঞ্জীবনী
মন্ত্র লাভের পর কচের বিদায়কালে, দেবযানী তাঁকে বিবাহ করার প্রস্তাব রাখেন। কিন্তু
কচ তাঁকে গুরুকন্যা ভগ্নীসম, এই বাক্যে তাঁকে প্রত্যাখ্যান করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে
দেবযানী কচকে বলেন "হে কচ! তুমি আমাকে প্রত্যাখ্যান করিলে তোমার
সঞ্জীবনীবিদ্যা ফলবতী হইবে না।"
গানের প্রথমাংশে কুমারী দেবযানীর প্রথম প্রণয়ের অভিব্যক্তি প্রকাশিত হয়েছে।
সঞ্চারীতে দেখা যায়, কচ দেবযানীর আহ্বানে সাড়া দিতে গিয়ে সঞ্জীবনী মন্ত্র
ভোলে এবং সে প্রণয়ের আকাঙ্ক্ষা জেগে উঠে। জেগে উঠে নতুন সুর ও ছন্দ। পূজার বেদি হয়ে
উঠে যৌবনারাগে রঞ্জিত। এই অংশটুকু মহাভারতের কচ-দেবযানীর কাহিনির সাথে মেলে না।
এটুকু বাদ দিলে বলা যায়, গানটি একটি গাঢ় প্রণয়সঙ্গীত।
১. প্রকাশ ও গ্রন্থভুক্তি:
নজরুল-সঙ্গীত সংগ্রহ (নজরুল ইন্সটিটিউট,মাঘ, ১৪১৭। ফেব্রুয়ারি,২০১৪) নামক গ্রন্থের
নবরাগ (নজরুল ইন্সটিটিউট, সেপ্টেম্বর ২০০৫) দ্বিতীয় গান । পৃষ্ঠা: ৪-৫।
নজরুলগীতি অখণ্ড রাগ-প্রধান গান। গান সংখ্যা ৮৭৩। দেবযানী-নবনন্দন তাল (হরফ, কলিকাতা। ২৩ জানুয়ারি ২০০৪)।
সুনির্বাচিত নজরুল গীতির স্বরলিপি চতুর্থ খণ্ড। গান: ৭২। সাহিত্যম, কলিকাতা (সেপ্টেম্বর ১৯৭৮)। পৃষ্ঠা: ১৫৫-১৫৬।
একশো গানের নজরুল স্বরলিপি, প্রথম খণ্ড। গান সংখ্যা ৪২। দেবযানী-নন্দন তাল। হরফ কলিকাতা ১লা জানুয়ারি ২০০০। পৃষ্ঠা: ১০৫-১০৭।
২. রেকর্ড সূত্র: রেকর্ড তথ্য নাই।
৭. সঙ্গীত বিষয়ক তথ্যাবলী:
রাগ: দেবযানী।
তাল:
নব
নন্দন।
গ্রহস্বর: পা।