বাংলাদেশের জলবায়ু
বাংলাদেশ ক্রান্তীয়
জলবায়ু অঞ্চলে অবস্থিত। কিন্তু সমুদ্রের সন্নিকটে বলে এখানকার শীত ও গরমের তীব্রতা
প্রচণ্ডরূপ ধারণ করে না। বাংলাদেশের গড় তাপমাত্রা ২৪.৪০ ডিগ্রী সেলসিয়াস থেকে ২৬.৭০
ডিগ্রী সেলসিয়াস। বাংলাদেশের গড় বৃষ্টিপাত প্রায় ২০.৩ সেলসিয়াস।
নতিশীতোষ্ণ মণ্ডলে অবস্থিত বাংলাদেশ ষড়ঋতুর
দেশ। এজন্য আবহাওয়া চরম উষ্ণতা বা শৈত্য থেকে মুক্ত। মার্চের শেষ দিক
থেকে গ্রীষ্মকাল আরম্ভ হয়ে মে মাস পর্যন্ত বহাল থাকে। কিন্তু জুন মাসে সাধারণত
মৌসুমী বায়ুর প্রকোপে বৃষ্টিপাত আরম্ভ হয়। তখন উষ্ণতা অনেক কমে যায়, কিন্তু
বাতাসে আর্দ্রতা বেড়ে যায়। বর্ষাকাল জুন মাসে আরম্ভ হয়ে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত
স্থায়ী হয়। বর্ষায় এদেশে বৃষ্টিপাত হয় প্রচুর। বাংলাদেশে বাৎসরিক বৃষ্টিপাতের
পরিমাণ ১৫০০ মি.মি. থেকে ৪০০০ মি. মি. পর্যন্ত। সাধারণত দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলেই
বৃষ্টিপাতের পরিমাণ সর্বাধিক। আসামের চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ পৃথিবীতে
সবচেয়ে বেশি। বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল থেকে চেরাপুঞ্জির দূরত্ব মাত্র ৮০ মাইল।
পৃথিবীর ভারি বৃষ্টিপাত অঞ্চলেই বাংলাদেশ অবস্থিত। আবহাওয়ার বৈচিত্র্যের সাথে
সামঞ্জস্য রেখে এবং বাংলা মাসের বিচারে
এই দুই মাসে একটি করে ঋতু ধরা হয়। দেখুন:
বাংলাদেশের ঋতুচক্র।
সাধারণত গ্রীষ্মকালের প্রারম্ভে দেশে
আবহাওয়া কিছুটা অনিশ্চিত থাকে।। এ সময়ে মাঝে মধ্যেই কালবৈশাখী নামক ঝড় সৃষ্টি হয়। ঝড়ের যথেষ্ট গতি থাকলেও প্রচণ্ডতা
তুলনামূলক কম। এদেশে প্রচণ্ড ঝড়-বৃষ্টি হয়ে থাকে সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে। এই
ঝড় ঘূর্ণিবায়ুর আকারে তীব্র গতি নিয়ে সমুদ্র থেকে আরম্ভ হয়ে বাংলাদেশের উপকূলে
আঘাত করে। এই ঝড়কে
ঘূর্ণিঝড় বলা হয়। এই ঝড়ের জন্য জলোচ্ছ্বাসের
সৃষ্টি হয় এবং জানমালের ক্ষতির পরিমাণ আজও অত্যধিক। এছাড়া বর্ষাকাল প্রবল বৃষ্টি
এবং নদীবাহিত জলপ্রবাহের কারণে বন্যার সৃষ্টি হয়। অবশ্য বাংলাদেশের প্রধান প্রধান
নদীতে ভারতের বাঁধ তৈরির কারণে প্লাবনের পরিমাণ অনেকটা কমে গেছে।