ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা শহরে অবস্থিত, বাংলাদেশের অন্যতম বিশ্ববিদ্যালয়। এটি এশিয়ার সেরা ১০০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ৬৪তম। এখানে প্রায় ৩৭,০০০ ছাত্র-ছাত্রী এবং ১,৮০৫ জন শিক্ষক রয়েছে।

১৯১২ খ্রিষ্টাব্দের ২১ জানুয়ারি তৎকালীন ভাইসরয় লর্ড হার্ডিঞ্জ ঢাকা সফরে আসেন। আর ২রা ফেব্রুয়ারি তিনি ঢাকাতে একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পক্ষে-বিপক্ষে মতামত
ঢাকাতে একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হবে- এই ঘোষণার পর, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পক্ষে বিপক্ষে তর্ক-বিতর্ক উপস্থাপিত হতে থাকে। পশ্চিম বাংলার মুসলমানদের ধারণা ছিল, ঢাকাতে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হলে, পশ্চিম বঙ্গের মুসলমানদের জন্য কোনো সুফল বয়ে আনবে না। তাই পশ্চিমবঙ্গেই বিশ্ববিদ্যালয় হওয়াটাই লাভজনক। সে সময়ে পশ্চিমবঙ্গের মুসলমানদের এই ভাবনাকে স্বার্থপরতা হিসেবে অভিমত দিয়েছিলেন। এছাড়া পূর্ব বাংলার কিছু মুসলমানরা মনে করেছিলেন, ১০ হাজার জনের মধ্যে একজন মাত্র স্কুল পর্যায়ে পাশ করতে পারে। যেখানে কলেজ পর্যায়ে তাদের ছাত্রসংখ্যা খুবই কম হয়. সেখানে বিশ্ববিদ্যালয় হলে সেখানে মুসলমান ছাত্রদের সংখ্যা খুবই কম হবে। তাঁর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবর্তে পূর্ববঙ্গে প্রাইমারি এবং হাইস্কুল সংখ্যা বাড়ানোর প্রস্তাব করেন। এছাড়া পশ্চিমবঙ্গের কিছু হিন্দু ব্যক্তিবর্গ মনে করেছিলেন যে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হলে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট বরাদ্দ কমে যাবে। এই ভয়েই তাঁরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরোধিতা করেছিলেন।

এই সময় চব্বিশ পরগণার জেলা মহামেডান অ্যাসোসিয়েশন ১৯১২ খ্রিষ্টাব্দের ১১ ফেব্রুয়ারি, ঢাকায় প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের বিরোধিতা করে এই মর্মে বিবৃতি দেয় যে, সমগ্র প্রদেশের মুসলমানদের শিক্ষাগত স্বার্থে পক্ষপাতদুষ্ট প্রভাব পড়বে এবং তাদের মধ্যে বিবাদের সৃষ্টি করবে। মৌলানা মুহাম্মদ আলী কলকাতার দি কমরেড পত্রিকায় একটি প্রবন্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রস্তাবটির তীব্র প্রতিবাদ করেন। তাঁর মতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটি আঞ্চলিক মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবর্তে আলিগড়ে প্রস্তাবিত সর্বভারতীয় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিই বেশি যুক্তিসঙ্গত। প্রয়োজনে ঢাকায় পূর্ববঙ্গের মুসলমানদের জন্য একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবর্তে কলেজ প্রতিষ্ঠার দাবি করা যেতে পারে। সে-কলেজটিও আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকবে। মৌলানা মুহাম্মদ আলী আশ্বস্ত করেন যে, আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় ভারতের সকল মুসলমানদের জন্য শিক্ষা নিশ্চিত করবে।

মৌলানা আকরম খাঁ আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে, সরকার বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অর্থ বরাদ্দ করলে সাধারণ মুসলমানদের শিক্ষা-সংক্রান্ত বিশেষ সুযোগ-সুবিধা দানের ক্ষেত্রে অর্থের ব্যবস্থা করবেন না। মুসলমানদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা অপেক্ষা প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি (প্রাথমিক ও মাধ্যমিক) শিক্ষার প্রয়োজনীয়তার ওপর তিনি গুরুত্ব আরোপ করেন। ব্যারিস্টার আবদুর রসুল আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় মুসলমানদের পক্ষে ‘বিলাসিতা’ বলে আখ্যা দিয়েছিলেন। তাঁর মতে, কয়েকজন ভাগ্যবানের জন্য অর্থ ব্যয় না করে বেশিরভাগ মানুষের জন্য তা ব্যয় করা উচিত। দি মুসলমানের মতে প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয় হবে একটি অসাম্প্রদায়িক প্রতিষ্ঠান, ফলে বাংলার মুসলমানের বিশেষ কিছু লাভ হবে না। বরং গরিব অথবা যোগ্য মুসলমান ছাত্রদের বিশেষ বৃত্তির ব্যবস্থা এবং দু-একটি প্রথম শ্রেণির কলেজ ইত্যাদি স্থাপন করলে মুসলমানদের মধ্যে শিক্ষাবিস্তার সম্ভব হবে।

তবে ইস্টার্ন বেঙ্গল অ্যান্ড আসাম মুসলিম লিগ সর্বসম্মতিক্রমে ওই প্রস্তাবকে স্বাগত জানায়। তারা মনে করেছিলেন যে, ঢাকাতে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হলে- পূর্ববাংলায় শিক্ষাবিস্তারে নতুন বেগের সঞ্চার হবে। ওই বছরেই সলিমুল্লাহ সরকারের নিকট বাংলার পূর্বাংশের মুসলমানদের জন্য পৃথক তহবিল সৃষ্টির একটি নতুন প্রস্তাব উত্থাপন করেন। কিন্তু দি মুসলিম পত্রিকায় ওই দাবি সমর্থিত হয় নি। বলা হয়েছিল, ওই দাবি ‘শিক্ষাগত বিভাগ’ সৃষ্টি করে পূর্ব ও পশ্চিম বাংলার মধ্যে বিচ্ছিন্নতা বৃদ্ধি করবে। ওই প্রস্তাবের পরিবর্তে সমগ্র বাংলা প্রেসিডেন্সিতে মুসলিম শিক্ষাবিস্তারে উদ্যোগগ্রহণ ও নিয়ন্ত্রণের জন্য এক ‘স্পেশাল মহামেডান এডুকেশন অফিসার’ নিয়োগের দাবি করা হয়।

১৯১২ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ই ফেব্রুয়ারি রাসবিহারী ঘোষের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল লর্ড হার্ডিঞ্জের সাথে সাক্ষাৎ করেন এবং ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের বিরোধিতামূলক একটি স্মারকলিপি পেশ করেন। এই সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সবচেয়ে বিরোধী ছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায় এবং রাজনীতিবিদ সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ১৯১২ খ্রিষ্টাব্দের ২৭শে মে ব্যারিস্টার রবার্ট নাথানের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটির অন্যান্য সদস্যবৃন্দ ছিলেন- ডি আর কুচলার, ড. রাসবিহারী ঘোষ, নবাব সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী, নবাব সিরাজুল ইসলাম, ঢাকার প্রভাবশালী নাগরিক আনন্দ রায়, ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ ডব্লিউ এ টি আর্চিবল্ড, জগন্নাথ কলেজের অধ্যক্ষ ললিতমোহন চট্টোপাধ্যায়, ঢাকা মাদরাসার তত্ত্বাবধায়ক শামসুল উলামা আবু নসর মুহম্মদ ওয়াহিদ, মোহাম্মদ আলী (আলিগড়), প্রেসিডেন্সি কলেজের (কলকাতা) অধ্যক্ষ এইচ এইচ আর জেমস, প্রেসিডেন্সি কলেজের অধ্যাপক সি ডব্লিউ পিক এবং সংস্কৃত কলেজের (কলকাতা) অধ্যক্ষ সতীশচন্দ্র আচার্য।

১৯১৩ খ্রিষ্টাব্দের জানুয়ারি মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়-সংক্রান্ত কমিটির প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল। ওই প্রতিবেদনে ধর্মনিরপেক্ষ শিক্ষাদানের ব্যবস্থার কথা থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলাম ধর্ম-সংক্রান্ত শিক্ষার পরিকল্পনাও পেশ করা হয়েছিল। তাছাড়া উচ্চবিত্ত মুসলমানদের জন্য ঢাকায় একটি কলেজ স্থাপনের প্রস্তাবও করা হয়েছিল। এই বছরেই ভারত সচিব নাথান কমিটির রিপোর্ট অনুমোদন করেন। কিন্তু, এই সময় প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পথে প্রতিবন্ধকতা দেখা দেয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য ঢাকার নবাব স্যার সলিমুল্লাহ অত্যন্ত সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। ১৯১৫ খ্রিষ্টাব্দে নবাব সলিমুল্লাহর মৃত্যু ঘটলে, নবাব সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী এবং আবুল কাসেম ফজলুল হক শক্ত হাতে এই উদ্যোগের হাল ধরেন।

১৯১৭ খ্রিষ্টাব্দের মার্চ মাসে ইমপিরিয়াল লেজিসলেটিভ কাউন্সিলে টাঙ্গাইলের ধনবাড়ির নবাব সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী সরকারের কাছে অবিলম্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিল পেশের আহবান জানান। একই সাথে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর লর্ড চেমসফোর্ড কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যাসমূহ তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠন করেন। সে-কমিশনের ওপরই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে পরামর্শ দেওয়ার দায়িত্ব প্রদান করা হয়। এই কমিশনের প্রধান ছিলেন মাইকেল স্যাডলার।

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন (স্যাডলার কমিশন) ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সুপারিশ করে। কিন্তু এই কমিশন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে সরকারি বা স্টেট বিশ্ববিদ্যালয় করার নাথান কমিটির প্রস্তাব সমর্থন করে নি। এই সময় ঢাকা কলেজের আইন বিভাগের সহ-অধ্যক্ষ ড. নরেশচন্দ্র সেনগুপ্ত পূর্ণ স্বায়ত্তশাসনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল শক্তিরূপে অভিহিত করেন এবং তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের কাঠামো তৈরি করে দেন। এই সময় একই কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও অর্থনীতির অধ্যাপক টি সি উইলিয়ামস আর্থিক বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ণ স্বাধীনতা দাবি করেন।

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন ঢাকা শহরের কলেজগুলোর পরিবর্তে বিভিন্ন আবাসিক হলকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউনিটরূপে গণ্য করার সুপারিশ করে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় কাউন্সিল হাউসের পাঁচ মাইল ব্যাসার্ধ এলাকাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতাভুক্ত এলাকা বলে গণ্য করার কথাও বলা হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন তেরোটি সুপারিশ করে এবং কিছু রদবদলসহ তা ১৯২০ খ্রিষ্টাব্দের ১৩ই মার্চ ভারতীয় আইন সভা 'দি ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যাক্ট (অ্যাক্ট নং-১৩) ১৯২০' পাশ করে। ভারতের তদানীন্তন গভর্নর জেনারেল ১৯২০ খ্রিষ্টাব্দের ২৩শে মার্চ তাতে সম্মতি প্রদান করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা
১৯২১ খ্রিষ্টাব্দের ১লা জুলাই থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যক্রম শুরু করে। সে সময়ের ঢাকার সবচেয়ে অভিজাত ও সৌন্দর্যমণ্ডিত এলাকা ছিল রমনা। এই রমনার প্রায় ৬০০ একর জমিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায় আনা হয়েছিল।  প্রতিবছর ১লা জুলাইকে "ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস" হিসেবে পালন করা হয়।
 ১৯২০ খ্রিষ্টাব্দের ১লা ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন পি জে হার্টগ। উল্লেখ্য , স্যাডলার কমিশনের অন্যতম সদস্য ছিলেন লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক রেজিস্ট্রার পি জে হার্টগ।

তিনটি অনুষদ ও ১২টি বিভাগ নিয়ে একটি আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে এর যাত্রা শুরু হয়। এই সময় কলা, বিজ্ঞান ও আইন অনুষদের অন্তর্ভুক্ত ছিল সংস্কৃত ও বাংলা, ইংরেজি, শিক্ষা, ইতিহাস, আরবি, ইসলামিক স্টাডিজ, ফারসী ও উর্দু, দর্শন, অর্থনীতি ও রাজনীতি, পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, গণিত এবং আইন। প্রথম শিক্ষাবর্ষে বিভিন্ন বিভাগে মোট ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ছিল ৮৭৭ জন এবং শিক্ষক সংখ্যা ছিল মাত্র ৬০ জন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শুধু মুসলিম ছাত্রদের জন্য স্থাপিত প্রথম আবাসিক হল সলিমুল্লাহ মুসলিম হল। এই হলের প্রথম প্রোভোস্ট নিযুক্ত হন ইতিহাস বিভাগের রিডার স্যার এ এফ রহমান। উল্লেখ্য ১৯২৯ খ্রিষ্টাব্দের ২২শে আগস্ট বাংলার গভর্নর ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর স্যার স্ট্যানলি জ্যাকসন ঢাকার প্রয়াত নবাব বাহাদুর স্যার সলিমুল্লাহর নামানুসারে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের’ ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করেন। ১৯৩১-৩২ শিক্ষাবর্ষে এর ভবন নির্মাণের কাজ শেষ হয়।

ঢাকার বলিয়াদির জমিদারের প্রচেষ্টায় জগন্নাথ হল নির্মিত হয়। জগন্নাথ হলের নামকরণ হয় তাঁর পিতা জগন্নাথ রায় চৌধুরীর নামে। জগন্নাথ রায় চৌধুরীর নামেই ঢাকার জগন্নাথ কলেজেরও নামকরণ করা হয়েছিল। জগন্নাথ হলের প্রথম প্রভোস্ট ছিলেন আইন বিভাগের প্রথম অধ্যাপক নরেশচন্দ্র সেনগুপ্ত। উল্লেখ্য অধ্যাপক নরেশচন্দ্র সেনগুপ্তের উৎসাহে জগন্নাথ হলের প্রথম বার্ষিক সাহিত্যপত্র বাসন্তিকা ১৯২৩ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত হয়। নরেশচন্দ্র সেনগুপ্তের পর প্রভোস্ট হন ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. রমেশচন্দ্র মজুমদার।

১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে পাকিস্তান নামক স্বাধীন রাষ্ট্রের অন্তর্গত তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের শিক্ষা ব্যবস্থার অধীনে চলে আসে সে সময় পূর্ববাংলার ৫৫ টি কলেজ এ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হয়। ১৯৪৭-৭১ সময়ের মধ্যে ৫টি নতুন অনুষদ, ১৬টি নতুন বিভাগ ও ৪টি ইন্সটিটিউট প্রতিষ্ঠিত হয়।

পাকিস্তান নামক রাষ্ট্রের শুরু থেকেই পশ্চিম পাকিস্তানিদের সাথে পূর্ব-বাংলার মানুষের সংঘাত শুরু হয়। এর প্রাথমিক স্তরে ছিল ভাষা-আন্দোলন। এই আন্দোলন থেকে শুরু করে ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে সংঘটিত স্বাধীনতা যুদ্ধ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে গৌরবময় ভূমিকা। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের মার্চ মাসে পাকিস্তানি সৈন্যদের 'অপারেশন সার্চলাইট'-এর অন্যতম লক্ষ্য ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। এছাড়া ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের প্রধান শিকার ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ।