ইথিওপিয়া'র
বৃহত্তম জাতি।
ইথিওপিয়া'র
মোট জনসংখ্যার প্রায় ৩৪.৫ ভাগ মানুষ এই জাতির।
এই জাতিসত্তার উৎপত্তি সম্পর্কে প্রাগৈতিহাসিক কোনো দিকনির্দেশনা পাওয়া যায় না।
এদের কোনো লিখিত ইতিহাসও নেই।
ভাষাতাত্ত্বিকদের মতে, এদের ভাষার নাম ওরোমো। উল্লেখ্য এই ভাষাটি আফ্রো-এশিয়াটি
ভাষা পরিবারের অংশ। এদের আদি নিবাস ছিল
ইথিওপিয়া'র
দক্ষিণাঞ্চলের শ্যামো ও স্টেফানিয়ে হ্রদের তীরবর্তী অঞ্চলে। ধারণা করা হয় খ্রিষ্টীয়
প্রথম সহস্রাব্দের শুরুর দিকে এরা পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব আফ্রিকায় ছড়িয়ে পড়েছিল। এরা
নিজেদের 'গাড্ডা' নামক শাসন পদ্ধতির মাধ্যমে রাজ্য গড়ে তুলেছিল।
১২৭০ খ্রিষ্টাব্দে ইথিওপিয়ার সোলোমোনিক সাম্রাজ্যের পত্তন ঘটেছিল। এই রাজ্যটি
আবসিনিয়ান সাম্রাজ্য হিসেবে অভিহিত হয়ে থাকে। এর পাশাপাশি সোমালি মুসলিম সম্রাজ্যে
শুরু হয়েছিল ১৪১৫ খ্রিষ্টাব্দে। এই সাম্রাজ্যের নাম ছিল আদাল সালতানাৎ। ১৪৪৩ থেকে
১৫৫৩ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত উভয় সাম্রাজ্যের মধ্যে সংঘটিত হয়েছিল। এই সময় ওমোরো
ভাষাগোষ্ঠীর মানুষ ইথিওপিয়ান ও আদাল সালাতানাতের বিরাট ভূখণ্ড দখল করে নেয়।
১৪৬০ খ্রিষ্টাব্দে প্রথম ইউরোপিয়ানদের কাছে আবিসিনিয়ার ম্যাপ উপস্থাপন করেন
ইটালিয়ান মানচিত্র প্রণয়নকারী
Fra Mauro। তিনি তাঁর মানচিত্রে
ওরোমোদের অধিকৃত অঞ্চলকে
Galla
নামে অভিহিত করেছিলেন।
ওরোমোদের ঐতিহাসিক বিস্তারিত তথ্যাদি প্রথম
প্রণয়ন করেছিলেন ইথিওপিয়ান ধর্মযাজক আব্বা বাহ্রে। ১৫৯৩ খ্রিষ্টাব্দে রচিত এই
গ্রন্থটির নাম ছিল Zenahu le
Galla। এরপর অনেকে এদের সম্পর্কে
গ্রন্থাদি রচনা করেছেন। এসব গ্রন্থাদি থেকে জানা যায় যে, এরা ছিল মূলত পশুচারণকারী
জাতি। আদিতে এই জাতির কোনো প্রতিষ্ঠত রাজা ছিল না। তবে এরা নির্বাচনের মাধ্যমে
দলনেতা তৈরি করতো। দলনেতাকে এরা লুবা নামে অভিহিত করতো। এদের ভিতরে দুটি দল অত্যন্ত
শক্তিশালী হয়ে উঠেছিল। এই দল দুটি ছিল আফ্রে এবং সাদাকা। খ্রিষ্টীয় ১৬শ শতকে এই
দুটি দল একত্রিত হয়ে শক্তিশালী হয়ে উঠেছিল। পরে আফ্রে গোষ্ঠীর সাথে চারটি দল এবং
সাদাকা গোষ্ঠীর সাথে তিনটি দল যুক্ত হয়ে ওমোরো জনগোষ্ঠী গ্যাল্লা অধ্যুষিত বিশাল
ভূখণ্ডের শাসক হয়ে উঠে।
ওরোমো পৌরাণিক
চরিত্র