ওয়াকা
Waaqaa

ইথিওপিয়া'র বৃহত্তম জাতগোষ্ঠি ওরোমোদের পৌরাণিক কাহিনি অনুসারে তিনি পরম স্রষ্টা। তিনি এক এবং অদ্বিতীয়। তিনি সকল ক্ষমতার উৎস, পরমজ্ঞানী। তিনিই এই বিশ্বজগৎ তৈরি করেছেন। তিন সকল জীবের প্রাণদানকারী এবং মৃত্যুর অধিকর্তা। তিনি পরম সত্য ধারণ করেন এবং সুবিচারক। এই বিশ্বাস থেকে সৃষ্টি হয়েছে য়াকেফ্‌ফান্না ধর্মের।

য়াকা বাস করেন আকাশে। এই কারণে এদের কাছে ওয়াকা পরম স্রষ্টা এবং আকাশ সমার্থক। তিনি স্বর্গকে পৃথিবীকে দূরে স্থাপন করেছেন। আর স্বর্গকে ঢেকে রেখেছেন নক্ষত্র দিয়ে। ওয়াকা সব সময় মানুষের উপকার করেন এবং কখনো কাউকে শাস্তি দেন না।

তিনি পরম পিতা এবং আদি মাতা হলেন পৃথিবী।
ধারণা করা হয়, এই ধর্মমতের ক্রমবিকাশের সূত্রে পরবর্তী সময়ে সৃষ্টি হয়েছে আব্রাহামীয় একেশ্বরবাদের (ইহুদি, খ্রিষ্টান ও ইসলাম)।

য়াকেফ্‌ফান্না ধর্মমতে আদিকালে পৃথিবী ছিল সমান। কোনো পাহাড় ছিল না, আগুন বা বৃষ্টি ছিল না। সে সময়ে ওয়াক একজন পুরুষ মানুষ তৈরি করেছিলেন। কিন্তু এই মানুষটি প্রকৃতির সাথে যুদ্ধ করে টিকে থাকার উপযোগী ছিল না। তাই তিনি মানুষের কল্যাণের জন্য, ওই আদিম মানুষটিকে একটি কফিন বানাতে বললেন। ওয়াকের নির্দেশে মানুষটি একটি কফিন তৈরি করলে, ওয়াক এই মানুষটিকেই কফিনে পুরে মাটিতে পুঁতে ফেললেন। এরপর সাত বছর ধরে অগ্নি ও বৃষ্টি বর্ষণ করলেন। এর ফলে পৃথিবীতে পর্বতের সৃষ্টি হলো। এরপর মাটির ভিতর থেকে কফিন তুলে, মানুষটিকে জীবন দান করলেন।

এরপর ওয়াকা দেখলেন এই মানুষটি নিঃসঙ্গ দশায় নিরানন্দে জীবনযাপন করছে। ওয়াক মানুষটির একাকীত্ব ঘুঁচানোর জন্য তাঁর শরীর থেকে রক্ত গ্রহণ করেলেন। চারদিন পর এই রক্ত থেকে পৃথিবীর নারীর সৃষ্টি হলো। পরে তিনি এই নারীপুরুষকে বিবাহ দিলেন। কালক্রমে এদের ৩০টি সন্তান জন্মগ্রহণ করলো। এই দম্পতি মনে করলেন যে, ওয়াক-কে এত সন্তান জন্মদানের সংবাদ জানানোটা লজ্জার ব্যাপার। তাই তাঁরা ১৫টি সন্তানকে ওয়াকের কাছ থেকে লুকিয়ে রাখলেন। কিন্তু বিষয়টি ঠিকই জানলেন। তিনি বিষয়টি ওই দম্পতিকে না জানিয়ে লুকানো সন্তানদেরকে প্রাণী এবং দানবে পরিণত করেছিলেন।


সূত্র: