বৌদ্ধ
ধর্মের প্রতি অনুরক্ত হয়ে সম্রাট
অশোক ২৫০
খ্রিষ্টপূর্বাব্দের দিকে এই তীর্থভূমি পরিদর্শনে এসেছিলেন। তিনি এই গ্রামের
প্রজাদের রাজস্ব এক-অষ্টমাংশ হ্রাস করেছিলেন। তিনি অশোকের আগমনের স্মারক হিসেবে
এখানে একটি অশোক স্তম্ভ স্থাপন করা হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে অশোক স্তম্ভকে কেন্দ্র
করেই এই ঐতিহাসিক ও পৌরাণিক স্থানটি পুনরাবিষ্কার করা হয়। ষষ্ঠ শতকে বিখ্যাত চীনা
সন্ন্যাসী ও পর্যটক ফা হিয়েন ভারতীয় উপমহাদেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান
পরিদর্শনের সময় কপিলাবস্তু ও লুম্বিনীতে আসেন। তিনি তাঁর সুবিখ্যাত ভ্রমণকাহিনীতে
সম্রাট অশোকের স্মারক স্তম্ভের বর্ণনা দেন এবং গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান হিসেবে
লুম্বিনির উল্লেখ করেন। এই স্তম্ভটি তৈরি করা হয়েছিল একটি অখণ্ড পাথর দিয়ে।
এর শীর্ষভাগে ছিল অশ্বমূর্তি। তবে এই অশ্বমূর্তিটি ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল কোনো এক সময়।
১৮৯৬ খ্রিষ্টাব্দে নেপালের তৎকালীন শাসক খাদগা সোমেশ্বর রানার উদ্যোগে নেপালী
প্রত্নতত্ববিদরা ফা হিয়েনের ভ্রমণকাহিনী,বৌদ্ধপুরাণ ও ইতিহাসগ্রন্থ সুত্ত
নিপোতা,বৌদ্ধ ইতিহাস গ্রন্থ মহাবংশসহ অন্যান্য গ্রন্থ এবং বিভিন্ন প্রত্নতাত্বিক
নিদর্শনের সাহায্যে অশোক স্তম্ভটি খুঁজে বের করেন। আর এর মাধ্যমেই গৌতম বুদ্ধের
জন্ম স্থানটি নির্দেশ করা সম্ভব হয়। এছাড়া ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে আরও অনেক অশোক
স্তম্ভ আবিষ্কৃত হয়েছে। উল্লেখ্য অশোক তাঁর বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী স্ত্রী বিদিশার
পরামর্শে সারনাথে গৌতম বুদ্ধের দীক্ষাস্থলকে স্মরণী করে রাখার জন্য একটি স্তম্ভ
স্থাপন করেন। ১৯০৫ খ্রিষ্টাব্দে পুরাতত্ত্ব বিভাগের খনন কার্যের সময় এই
অশোকস্তম্ভটি উদ্ধার করা হয়। ১৯৫০ খ্রিষ্টাব্দে ভারত সরকার এই স্তম্ভের চিত্রকেকে
রাজকীয় প্রতীক হিসেবে গ্রহণ করেছে।
এখানে অসংখ্য বৌদ্ধ মন্দির রেয়েছে। এর
ভিতরে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য মন্দিরটি হলো 'মায়াদেবীর মন্দির'। এছাড়া এখানে 'লুম্বিনী
ইন্টারন্যাশনাল রিসার্চ ইনস্টিটিউট' নামে একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ১৯৯৭
খ্রিষ্টাব্দে ইউনেস্কো লুম্বিনীকে
ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের অন্তর্ভুক্ত করা