ব্যক্তিবাচক বা পুরুষবাচক সর্বনাম
(
Perrsonal
pronoun )
সর্বনাম


যে সকল সর্বনাম ব্যক্তিবিশেষের বা ব্যক্তিসমূহকে নির্দেশ করে বা এদের পরিবর্তে ব্যবহৃত হয়, তাদেরকে ব্যক্তিবাচক সর্বনাম বলা হয় এরই অপর নাম পুরুষবাচক সর্বনাম   

ব্যাখ্যা :
উপরে সূত্রে এমনকিছু নির্দিষ্ট শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে, যার অর্থ ব্যাখ্যা করার অপেক্ষা রাখে  সূত্রে যা নির্দেশিত করা অর্থে বা তার পরিবর্তে ব্যবহার করা যায় এমন অর্থে ব্যবহৃত শব্দকে সর্বনাম বলা হচ্ছেএই শব্দগুলো হলো- ব্যক্তিবিশেষ, ব্যক্তিসমূহ এখানে ব্যক্তি বলতে শুধু মানুষ নয় এই ব্যক্তি মানুষ, প্রাণী বস্তু হতে পারে যেমন-

            মানুষ্যবাচক :        নূপুর ভালো মেয়েনূপুরের অনেক খেলনা আছে
                                    
নূপুর ভালো মেয়েতার (বা এর) অনেক খেলনা আছে

             প্রাণীবাচক :         গরু চতুষ্পদী প্রাণীগরুর একটি লেজ আছে
                                  
  গরু চতুষ্পদী প্রাণীএর একটি লেজ আছে

             বস্তুবাচক :           বইটি দেখবইটির মলাটের রঙ লাল
                                  
  বইটি দেখএর মলাটের রঙ লাল

বাংলা ব্যাকরণে, পৃথকভাবে প্রাণী বা বস্তু নির্দেশক সর্বনামের সংজ্ঞা নেইএক্ষেত্রে ব্যক্তিবাচক সর্বনাম দিয়েই প্রাণী বা বস্তুবাচক বিশেষ্যের প্রতিস্থাপন করা হয়এক্ষত্রে মনুষ্যবাচক সর্বনামের যত ধরণের ব্যবহার পাই, তার সগুলোরূপ প্রাণী বা বস্তুবাচকের ক্ষেত্রে বসে না

সূত্রে বলা হয়েছে- ব্যক্তিবিশেষের বা ব্যক্তিসমূহের নির্দেশের কথাএখানে ব্যক্তিবিশেষ হলো একবচন এবং ব্যক্তিসমূহ বহুবচন অর্থে ব্যবহার করা হবে

সূত্রে পুরুষবাচক শব্দটি পেয়েছি এখানে পুরুষ শব্দটি পুরুষজাতিকে বুঝায় না এটিও ব্যাকরণের একটি পরিভাষা মাত্র ব্যক্তিবাচক সর্বনামের রূপভেদের প্রধান অংশ জুড়ে রয়েছে পুরুষএই কারণে, পুরুষ সম্পর্কে আলোচনা শেষ না করে, পরবর্তী আলোচনায় যাওয়াটা একরকম অসম্ভবতাই এখানে পুরুষ সম্পর্কে আলোকপাত করবো

পুরুষ 
ব্যক্তিবাচক সর্বনামগুলো বাক্যে বিভিন্ন নিদের্শনায় ব্যবহৃত হয়এদের পৃথক পৃথকভাবে শনাক্ত করা হয় 'পুরুষ' পরিভাষা দ্বারা এর ইংরেজি সমার্থ শব্দ হলো- Person বিশেষ্য ও সর্বনাম পুরুষকে নির্দেশ করে, বিশেষণ এবং অব্যয়ের ক্ষেত্রে বিষয়টি নিষ্ক্রিয় থাকেএই বিচারে পুরুষকে প্রাথমিকভাবে দুটি ভাগে ভাগ করতে পারি এই ভাগ দুটি হলো-

            বিশেষ্য-পুরুষ : নায়রা গান গায়
           
সর্বনাম-পুরুষ : সে গান গায়

উল্লেখ্য বিশেষ্য অর্থা নামবাচক পদ, সে কারণেই  বিশেষ্য-পুরুষকে সব সময়ই নাম-পুরুষ হিসাবে বিবেচনা করা হয়একই কারণে বিশেষ্য-পুরুষের পরিবর্তে যে সর্বনাম-পুরুষ ব্যবহৃত হয়, তাকেও নাম-পুরুষের ভিতরেই ধরা হয় এই বিচারে উপরের দুটি বাক্যে 'নায়রা' এবং 'সে' উভয়ই নাম পুরুষ উল্লেখ্য এই সূত্রে উভয়ক্ষেত্রেই ক্রিয়ারকাল অনুসরণে একই ক্রিয়াপদরূপ নির্ধারিত হয়

ব্যক্তিবাচক সর্বনাম-পুরুষের প্রকরণ
ব্যক্তিবাচক সর্বনাম, পুরুষ হিসাবে তিনটি প্রাথমিকভাবে তিনটি ভাগে বিভাজিতএই ভাগ তিনটি হলো- উত্তম পুরুষ, মধ্যম পুরুষ ও নাম পুরুষএর ভিতরে মধ্যম পুরুষ তিনটি উপভাগে বিভাজিতএই ভাগ তিনটি হলো- (সাধারণ, তুচ্ছার্থ ও সম্ভ্রমাত্মক) পক্ষান্তরে নাম পুরুষ দুটি উপভাগে বিভাজিত এই ভাগ দুটি হলো- (সাধারণ ও সম্ভ্রমাত্মক)  

. সংখ্যামানের বিচারে পুরুষের বচন নির্ধারিত হয়এক্ষেত্রে এই মান একটি হলে হবে একবচন এবং একের অধিক হলে বহুবচন
. বাচ্যের পরিবর্তনে পুরুষের রূপান্তর ঘটেযেমন কর্তৃবাচ্যে 'আমি' কিন্তু ভাববাচ্যে 'আমার'
 
ঘ. পুরুষ সাধু ও চলতি রীতি অনুসরণে রূপ পাল্টায়

উপরেরর সূত্র অনুসরণে আমরা ব্যক্তিবাচক সর্বনামের ক্ষেত্রে যে সকল নির্দেশনা পাই, এবার তার সাথে বিস্তারিত পরিচিত হওয়া যাক উপরের সূত্রে পুরুষের যে প্রাথমিক তিনটি ভাগ পাওয়া গেছেতা হলো-উত্তম পুরুষ, মধ্যম পুরুষ ও নাম পুরুষএই সূত্র থেকেই বিষয়টির আলোচনা করবো

উত্তম পুরুষ : বক্তা নিজেই উত্তম পুরুষএক্ষেত্রে পুরুষ স্বয়ং সিদ্ধ বলেই কোন বিশেষ্যের পরিবর্তে বসার দরকার পড়ে নাএকই কারণে, সম্ভ্রমাত্মক বা তুচ্ছার্থ বিচারে এর রূপ পাল্টায় নাযেমন- কেউ যদি বলে- আমি উত্তম বা আমি অধম, তা হলে ভাবগতভাবে উত্তম-অধমের পার্থক্য নির্ধারিত হলেও আমি শব্দের লেখ্য বা কথ্য রীতিতে কোনো পার্থক্য লক্ষ্য করা যায় না  অবশ্য, এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, পুরো বাক্যের বিচারে উভয় 'আমি'-র ক্ষেত্রে উচ্চারণের ভাবগত পার্থক্য স্পষ্ট হয়ে উঠবেএই সকল বিচারে আমরা উত্তম পুরুষের  যে তালিকা পাই, তা হলো- আমি, আমরা, আমার, আমাকে, আমাদিগকে, আমাদেরকাব্যে- মম, মদীয়, মোর, মোরা ব্যবহৃত হয় যেমন-

          একবচন              বহুবচন
            আমি                  আমরা
, মোরা 
            আমার                 আমাদের
            আমাকে               আমাদেরকে
            মম
, মদীয়            মোরা, মোদের

মধ্যম পুরুষ : প্রত্যক্ষভাবে নির্দেশিত ব্যক্তি বা শ্রোতাবক্তা হলো উত্তম পুরুষমধ্যম পুরুষকে তিনটি ভাগ করা হয় এই বিভাজন বাঙালী সংস্কৃতের ঐতিহ্যের সাথে সম্পর্কিতসম্মান প্রদর্শন, তুচ্ছার্থ, স্নেহ, প্রীতি ইত্যাদির বিচারে মধ্যম পুরুষের মান নির্ধারিত হয়ে থাকেব্যাকরণে এই মান তিনটি- সাধারণ, সম্ভ্রমাত্মক ও তুচ্ছার্থ হিসাবে বিবেচিত হয় এক্ষেত্রে আমরা যে তালিকাটি পাই তা হলো-

সাধারণ মধ্যমপুরুষ : সামাজিক মর্যাদার বিচারে- সাধারণ মধ্যমপুরুষ, বিচারে সম্ভ্রমাত্মক ও তুচ্ছার্থের মধ্যবর্তী স্তর হিসাবে বিবেচিত হয়এই জাতীয় ব্যক্তিবাচক সর্বনামগুলো হলো- তুমি, তোমরা, তোমাকে, তোমাদিগকে, তোমার, তোমাদের

সম্ভ্রমাত্মক মধ্যমপুরুষ : সম্মানিত ব্যক্তির ক্ষেত্রে ব্যবহৃত সর্বনামগুলো হলো সম্ভ্রমাত্বক সর্বনাম  এই জাতীয় ব্যক্তিবাচক সর্বনামগুলো হলো-আপনি, আপনাকে, আপনার, আপনারা, আপনাদের

তুচ্ছার্থ মধ্যমপুরুষ : সামাজিক মর্যাদার বিচারে বা বয়সে যারা ছোট, তাদের ক্ষেত্রে স্নেহ বা তুচ্ছার্থে এই জাতীয় সর্বনাম ব্যবহার করা হয়এই জাতীয় ব্যক্তিবাচক সর্বনামগুলো হলো-সে, তোর, তোরা, তাদের, তোকে

বাস্তবে এই সকল শব্দ দ্বারা সামাজিক মর্যাদা পুরোপুরি নির্দেশিত হয় নাবাঙালী সংস্কৃতিতে বাবা, মামা, চাচা, দাদী, নানী ইত্যাদি সম্মানজনক ব্যক্তিদেরকে আমাদের অনেক পরিবারে তুমি সম্বোধন করা হয় আবার বড়রাও ছোটদেরকে তুমি সম্বোধন করে থাকেনএখানে তুমি শব্দটি স্থান বিশেষে সম্ভ্রমাত্মক বা সাধারণ মানের হয়ে যেতে পারেস্বামী-স্ত্রী, প্রেমিক-প্রেমিকার তুমি সম্বোধন অত্যন্ত গভীর হৃদ্যতার পরিচায়ক হলেও বন্ধুর সাথে তুমি বললে, তাতে হৃদ্যতার ঘাটতি থাকে কারণ বাঙালী সমাজে ঘনিষ্ট বন্ধুর সম্বোধন হয় তুইদীর্ঘদিনের গভীর সম্পর্ক, তারপরেও দুজন বন্ধু আপনি বা তুমি সম্বোধন করে, এমন ঘটনা বিরল নয় তবে তা ব্যতিক্রমী সম্বোধন বলেই বিবেচনা করা হয়নিজের বাবা যদি ছেলেকে তুই বলে, তা হবে স্নেহের ডাক কিন্তু শ্বশুর বাবা যদি জামাইকে শুরু থেকে তুই বলা শুরু করে, তবে প্রতিবেশীরা হয়তো শ্বশুর বাবার এই সম্বোধনকে শোভন মনে করবেন না

অতি সম্মানিত ব্যক্তি বা পরম আরাধ্য ব্যক্তি, সৃষ্টি কর্তার নৈকট্য প্রকাশের ক্ষেত্রে আপনির পরিবর্তে তুমি ব্যবহার করে থাকিঅত্যন্ত সম্মানিত ব্যক্তির উদ্দেশ্যে রচিত অভিনন্দন পত্রে তুমি সম্বোধন লক্ষ্য করা যায়কিম্বা প্রার্থনার সময়, আশ্বস-বিশ্বাস ইত্যাদি বিবিধ কারণে যখন সৃষ্টিকর্তাকে সম্বোধন করা হয়, তখন তুমি ব্যবহার করা হয় যেমন- অকূল পাথারে খোদা তুমিই ভরসা মম

বচনভেদে এই ব্যক্তিবাচক সর্বনামগুলোর পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়সাধারণ, সম্ভ্রমাত্মক ও তুচ্ছার্থের বিচারে এই পার্থক্য ভিন্ন ভিন্ন শব্দমান প্রদান করে থাকে নিচের তালিকায় এর রূপভেদ দেখানো হলো-

                                    একবচন                    বহুবচন
            সাধারণ             
 তুমি                               তোমরা
                                    তোমাকে                          তোমাদিগকে
                                   
তোমার                            তোমাদের

            সম্ভ্রমাত্মক           আপনি                            আপনারা
                                    আপনাকে.                        আপনাদেরকে, আপনাদিগকে
                                    আপনার                           আপনাদের

            তুচ্ছার্থ               তুই                                তোরা
                                    তোর                              তোদের
                                   
তোকে                            তোদেরকে

নাম পুরুষ : বিশেষ্য অর্থাৎ নামবাচক পদ, সে কারণেই  বিশেষ্য পুরুষকে সব সময়ই নাম-পুরুষ হিসাবে বিবেচনা করা হয়একই কারণে বিশেষ্য পুরুষের পরিবর্তে যে সর্বনাম-পুরুষ ব্যবহৃত হয়, তাকেও নাম-পুরুষের ভিতরেই ধরা হয় মধ্যম পুরুষের মতোই- এই পুরুষও মর্যাদার বিচারে তিনটি শ্রেণীতে ভাগ করা হয়ে থাকেএই ভাগ তিনটি হলো- সাধারণ, সম্ভ্রমাত্মক হিসাবে বিবেচিত হয়বচনভেদে এই ব্যক্তিবাচক সর্বনামগুলোর যে পার্থক্য পাওয়া যায়, তা নিচের তালিকায় দেখানো হলো-

                                    একবচন                        বহুবচন
             সাধারণ             সে                                 তারা, তাহারা
                                       তাকে                              তাদেরকে
                                      
তার                               তাদের
                                       তাহাকে                           তাহাদিগকে
                                      
তাহার                             তাহাদের

            সম্ভ্রমাত্মক              তিনি                               তাঁরা, তিনারা, তাঁহারা
                                       তাঁকে                              তাঁদেরকে, তাঁহাদেরকে
                                      
তাঁর                                তাঁদের, তাঁহাদের
                                       তাঁহাকে                            তাঁহাদিগকে
                                      
ইনিই                               ইনারা, এঁরা
                                       ইঁহাকে                              ইঁহাদিগকে
                                      
ইঁহার                                ইঁহাদের
                                       উনি                                 উনারা
                                      
এঁকে                              এঁদেরকে
                                       এঁর                                এঁদের
                                      
ওঁর                                ওঁদের
                                       ওঁ                                  ওঁরা

            তুচ্ছার্থ                   ইহা                                ইহারা
                                      
এ                                  এরা
                                       উহা                               উহারা
                                      
ও                                  ওরা
                                      
                                  ওরা
                                       ওর                                ওদের

ব্যক্তিবাচক সর্বনাম-পুরুষের একটি স্তর থেকে অপর স্তরে রূপান্তরের ক্ষেত্রে কিছু রীতি অনুসৃত হয় এই রীতিগুলো হলো-
সাধু-চলতি রূপান্তর :
সাধু রীতির হ্রাস লোপ পেয়ে চলতি রূপ-প্রাপ্ত হয় যেমন-

                                    সাধু                    চলতি
                                    তাহা                   তা
                                   
তাহারা                তারা

কিন্তু সাধু রীতিতে যে সকল শব্দে দিগকে থাকে, সেখানে চলতিরূপে দেরকে যুক্ত হয় যেমন-

                                    সাধু                    চলতি
                                    আপনাদিগকে        আপনাদেরকে
                                   
আমাদিগকে          আমাদেরকে

*তাহাদিগকে তাদেরকে* প্রথম সূত্র অনুসারে হ লোপ পেয়েছে

 ৩সাধু রীতির ই ধ্বনি এ ধ্বনিতে পরিণত হয়

                        সাধু                    চলতি                ব্যাখ্যা
                         ইহা                    এ                    প্রথম সূত্র অনুসারে হ লোপ পেয়েছে
                        
ইহাদিগকে           এদেরকে            প্রথম ও দ্বিতীয় সূত্র অনুসারে হ ও লোপ পেয়েছে এবং                                                                       
                                                                        
দিগকে-র পরিবর্তে দেরকে যুক্ত হয়েছে

                        
ইহাদের               এদের                প্রথম সূত্র অনুসারে হ লোপ পেয়েছে

 সাধু-চলতি রূপান্তর : সম্ভ্রাত্মক সর্বনামের আদ্যবর্ণে চন্দ্রবিন্দু বসে যেমন- 

            ইহাকে >ইঁহাকে     ইহাদিগকে>ইঁহাদিগকে        ইহাদের>ইঁহাদের                   ইহার>ইঁহার
            একে>এঁকে          এর>এঁর                         এদের>এঁদের                      এদরকে>এঁদেরকে
            এরা>এঁরা            ও>ওঁ                             ওদের>ওঁদের                       ওর>ওঁর 
            ওরা>ওঁরা            তাকে>তাঁকে                     তাদের>তাঁদের                     তাদেরকে>তাঁদেরকে          
            তার>তাঁর            তারা>তাঁরা                       তাহাদের>তাঁহাদের                তাদেরকে>তাঁহাদেরকে       
            তাহাকে>তাঁহাকে    তাহাদিগকে>তাঁহাদিগকে      তাহার>তাঁহার                      তাহারা>
তাঁহারা

ৎসম সর্বনামের ঈয়-প্রত্যয়জাত রূপান্তর : তৎসম সর্বনামে ষষ্ঠী বিভক্তি অর্থে ঈষৎ যুক্ত হলে, সর্বনামজাত বিশেষণ, সর্বনামে পরিণত হয় যেমন-

            মত্ +ঈয় =মদীয় (আমার)
            তত্ +ঈয় =তদীয় (তাহার) 

করণকারকে অনুসর্গের পূর্বে সর্বনামের সাথে এ বা কে বিভক্তি যুক্ত হয় যেমন-
           তাকে দিয়ে এ কাজ হবে না
           তার দ্বারা এ কাজ হবে না