সামীপ্য-নির্দেশবাচক
(Near demonstrative)
সর্বনাম
সর্বনাম
এই জাতীয় সর্বনাম প্রচ্ছন্ন নির্দেশ বহন করে এবং নৈকট্য প্রকাশ করে। যেমন- ওই দিকে যাও। এখানে উত্তর, দক্ষিণ ইত্যাদি সুইনির্দিষ্ট কোন বিশেষ্যের পরিবর্তে বসেছে এবং দূরত্ব ও দিকের বিচারে নৈকট্য প্রকাশ করেছে। এই জাতীয় সর্বনাম যেভাবে নির্দেশিত হওয়া উচিৎ তার উদাহরণ নিচে তুলে ধরা হল-
সর্বনাম (সামীপ্য-নির্দেশবাচক, অদূর)। ওই দেখা যায় তাল গাছ
প্রত্যক্ষ,
পরোক্ষ,
দুরত্ব,
নিকটস্থ ইত্যাদি নির্দেশনায়
ব্যবহৃত সর্বনামকে সামীপ্যবাচক বলা হয়।
এই জাতীয় সর্বনামগুলো
হলো-
অই, এ, এই,
ঐ,
সেই
ব্যাখ্যা : এখানে সামীপ্য বলতে বুঝানো হয়েছে সান্নিধ্য, নৈকট্য। এক্ষেত্রে সান্নিধ্য হতে পারে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ। আবার দূরত্বের বিচারে হতে দূরত্বের বিচারে বা নিকটস্থের বিচারে। যেমন-
প্রত্যক্ষ: অই বিষয় আমি স্বয়ং শুনেছি।
পরোক্ষ : অই বিষয় আমি
লোকমুখে শুনেছি।
নিকটস্থ: ধেনু চরায়ে অই কাননে অদূর।
দূরস্থিত: অই দেখা যায়
তাল গাছ
নির্দেশক (বিষয়): অই দুঃখে আমার দিন রাত যায়।
(ব্যক্তি) : অই কি জানে স্ত্রীকলা।
কবিকঙ্কন-চণ্ডী।
বুদ্ধিস্থ: অই মম তপ,
অই মম জপ।
স্বপ্নপ্রয়াণ/দ্বিজ্রেনাথ ঠাকুর।)
দশাস্থ : ওই দুঃখে আমার জনম গেল।
ওই অবস্থা থেকে আমার মুক্তি নেই।
নিকটস্থ, দূরস্থিত সর্বনামগুলো দিকের বিচারে সুনির্দিষ্ট বা অনির্দিষ্ট হতে পারে। সুনির্দিষ্ট বলতে বক্তা জানেন এমন দিক বুঝায়। যেমন-ধেনু চরায়ে অই কাননে অদূর। এখানে বক্তা জানেন কানন কোন দিকে। কিন্তু ‘ওই কুহরিল পিক ললিত উচ্ছ্বাসে/হেমচন্দ্র- বাক্যে জানা যায় না যে, কোকিল ঠিক কোন দিকে কুহরিল।
সাকল্যবাচক (inclusive) সর্বনাম
যে সকল সর্বনাম দ্বারা সমষ্টিগত ভাব প্রকাশ পায়, তাকেই সাকল্যবাচক সর্বনাম বলা হয়। যেমন- আদ্যোপান্ত, সকল, সব, সবাই, সমুদয়, তাবত্।
ব্যাখ্যা :
ক।
এখানে সাকল্য বলতে
বুঝানো হয়েছে সকল।
সমষ্টিগত পরিচয় যায়,
এমন বিশেষ্যের পরিবর্তে এই
সর্বনাম ব্যবহৃত হয়।
খ।
এই সর্বনাম কোন না কোন
ব্যক্তিবাচ্য সর্বনামকে অনুসরণ।
এক্ষেত্রে কোনো কোনো
সময় ব্যক্তিবাচ্য উহ্য থাকতেও পারে।
যেমন- আমার সকল নিয়ে বসে
আছি সর্বনাশের আশায়।