য (ণ্যৎ)
সংস্কৃত কৃৎপ্রত্যয়। পাণিনি মতে-ঋহলোর্ণ্যৎ। অর্থাৎ এর ঋ-কারান্ত ও ব্যঞ্জনবর্ণান্ত ণ্যৎ হয়। গ্রন্থভেদে এর লিখিত রূপের বিভিন্ন রূপ লক্ষ্য করা যায়। যেমন-
 
২.১. ণ্যৎ । সমগ্র ব্যাকরণ কৌমুদী। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর।
 
২.২. ঘ্যাণ্। সরল বাঙ্গালা অভিধান। সুবলচন্দ্র মিত্র।
 
২.৩. য। বাঙ্গালা ভাষার অভিধান। জ্ঞানেন্দ্র দাস।
 
২.৪ য (ণ্যৎ)। বঙ্গীয় শব্দকোষ। হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বাংলা একাডেমী ব্যবহারিক বাংলা অভিধান।
 

এই গ্রন্থে এই প্রত্যয় য (ণ্যৎ) হিসাবে উল্লেখ করা হবে। কারণ এই প্রত্যয়ের ণ্ এবং ৎ ইৎ হয় এবং য ক্রিয়ামূলের সাথে যুক্ত হয়।

এই বিধি হিসাবে- এই প্রত্যয় ব্যবহারের জন্য- যে দুই ধরণের ধাতুর তালিকা পাওয়া যায়- তা হলো-
    
. ঋ-কারান্ত ধাতু : কৃ, ধৃ, সৃ, স্মৃ ইত্যাদি
    
. ব্যঞ্জনবর্ণান্ত ধাতু : কত্থ, ছিদ্, ত্যজ্, বচ্, বহ্, বিদ্, বুধ্, ভক্ষ্, ভজ্, ভিদ্, ভুজ্, মন্, যজ্, যুজ্, শ্বস্,  সিচ্, হস্।

এই প্রত্যয় যুক্ত হলে- ক্রিয়ামূলের বানানে বিশেষ পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। যেমন-
২.১. ধাতুর শেষ ব্যঞ্জন
বর্ণ- চ থাকলে ক হয় এবং জ  থাকলে গ হয়। যেমন-
                
পচ্ +য (ণ্যৎ)= পাক্য,
                
ভুজ +য (ণ্যৎ)=ভোগ্য

২.২ তবে আবশ্যক অর্থে এই চ এবং জ অপরিবর্তিত থাকে। যেমন-
                
পচ্ +য (ণ্যৎ) (আবশ্যকার্থে)= পাচ্য,
                
ভুজ +য (ণ্যৎ) (আবশ্যকার্থে)=ভোজ্য

 

২.৩. প্র উপসর্গযুক্ত বচ্ এবং ঋচ, রুচ, যাচ ও ত্যাজ ক্রিয়ামূলের পরে চ এবং জ যথাক্রমে ক এবং গ হয় না। যেমন- কৃ>কার্য 

প্রবাচ্য, অর্চ্য, রোচ্য, যাজ্য, ত্যাজ্য।
                 

২.৪. এই প্রত্যয় ক্রিয়ামূলের আদ্য স্বরবর্ণ পরিবর্তন করে। এই পরিবর্তন যে রীতিতে হয়, তা হলো-
        অ>আ 
   বচ্ (বলা) + (ণ্যৎ) =বাচ্য
       
>এ      সিচ্ (সেচন করা) + (ণ্যৎ) = সেচ্য
        উ
>ও      যুজ্ (যুক্ত করা) + (ণ্যৎ) = যোজ্য
       
>আর   (গমন করা) +য (ণ্যৎ)=আর্য্য>আর্য।
                   
কৃ (করা) + (ণ্যৎ) =কার্য্য>কার্য  
        এ্য>এ্যা  
Öত্যজ (ত্যাগ করা)+য (ণ্যৎ)=ত্যাজ্য

২.৫. অমা-পূর্বক বস্ ক্রিয়ামূলের পরে এই প্রত্যয় ব্যবহৃত হলে- অমাবাস্য এবং নিপাতনে অমাবস্যা হয়।
 

এই প্রত্যয় যুক্ত হয়ে যে সকল শব্দ গঠিত হয়েছে, তার তালিকা নিচে তুলে ধরা হলো-কাট্য, গ্রাহ্য, বাচ্য