অর্কেষ্ট্রা
ইংরেজি: orchestra
বাংলা সমনাম: ঐকতানবাদন, বৃন্দবাদন।

orchestra শব্দটি ইউরোপীয় ভাষায় প্রবেশ করে গ্রিক ὀρχήστρα থেকে। প্রাচীন গ্রিসে এই শব্দটি শুধু সম্মেলক অর্থে ব্যবহৃত হতো। খ্রিষ্টীয় ১৮শ-১৯শ অব্দের ভিতরে সম্মেলক বাদন প্রক্রিয়া অর্কেষ্ট্রা হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। কিন্তু বিংশ শতাব্দীতে অর্কেষ্টা একটি বিশিষ্ট স্থানে পৌঁছায়। বিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগের ভিতর ইউরোপের বাইরে অন্যান্য সংস্কৃতিতে ছড়িয়ে পড়ে। ভারতবর্ষে বিংশ শতকের পূর্বভাগে ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ বিখ্যাত নৃত্যশিল্পী উদয়শঙ্করের সঙ্গে বিদেশ সফর শেষে দেশে প্রত্যাবর্তনের পর দেশিয় বাদ্যযন্ত্র সমন্বয়ে প্রথম বৃন্দবাদন প্রচলন করেন। মাইহার-রাজের সভাসঙ্গীতজ্ঞ পদে অধিষ্ঠিত থাকাকালে তিনি ‘মাইহার স্ট্রিং ব্যান্ড’ নামে এ অর্কেস্ট্রা দল গঠন করেন। তাঁকে অনুসরণ করে তাঁর অনুজ ওস্তাদ আয়েত আলী খাঁ রামপুর রাজের সভাসঙ্গীতজ্ঞ পদে অধিষ্ঠিত থাকাকালে ‘রামপুর স্ট্রিং ব্যান্ড’ প্রবর্তন করেন। এরপর তিমিরবরণ, পণ্ডিত রবিশঙ্কর, ওস্তাদ আলী আকবর খান, ওস্তাদ ফুলঝুরি খান, ওস্তাদ আবেদ হোসেন খান, ওস্তাদ মীর কাশেম খান, ধীর আলী মিয়া, সমর দাস, দেবু ভট্টাচার্য, ওস্তাদ খাদেম হোসেন খান, ওস্তাদ বাহাদুর হোসেন খান, সাদের আলী, ধীর আলী মিয়া প্রমুখ শিল্পী নানাসময়ে বৃন্দবাদন পরিচালনায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন।
 

বর্তমানে অর্কেষ্ট্রা হলো সম্মিলিতভাবে বাদ্যযন্ত্র বাজানোর সাঙ্গীতিক পারিভাষিক শব্দ। ইউরোপীয় অর্কেস্ট্রার যন্ত্রবিন্যাস প্রধানত চার প্রকার যন্ত্রের ব্যবহার করা হয়। এই প্রকারগুলো হলো ততযন্ত্র, শুষিযন্ত্র, ঘন এবং আনদ্ধ বাদ্যযন্ত্র। কখনো কখনো এর সাথে যুক্ত হয় পিয়ানো এবং সেলেস্টা। বর্তমানে ৫ম উপকরণ হিসেবে ব্যবহৃত হয় কীবোর্ড ।

 

ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথমার্থে বিথোভেন (Beethoven) অর্কেষ্ট্রার একটি আদর্শ রূপ দেন। কিন্তু তার সকল সিম্পফোনিতে একই রকম যন্ত্র ব্যবহার করেন নি। বিথোভেন-এর আদর্শে অনেকেই অর্কেষ্ট্রাকে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছেন। এঁদের অনেকই নানা রকম যন্ত্র ব্যবহার করে অর্কেষ্ট্রায় নতুনত্ব আনার চেষ্টা করেছেন। এসব অর্কেষ্ট্রার কিছু কিছু আদর্শগত রূপ লাভ করেছে। নিচে কিছু উল্লেখযোগ্য অর্কেষ্ট্রার যন্ত্রবিন্যাস তুলে ধরা হলো।