মার্গ সঙ্গীত
ভারতীয় শাস্ত্রীয়
সঙ্গীতের প্রাচীন নাম।
মার্গ অর্থ হলো- পথ। শাস্ত্রীয় বিধি বা পথ অবলম্বনে সৃষ্ট
সঙ্গীতকে বলা হয় মার্গ সঙ্গীত। বর্তমানে এই বিশেষ প্রকরণের সঙ্গীতকে বলা হয়
শাস্ত্রীয় সঙ্গীত।
প্রাচীন
গান্ধর্ব-সঙ্গীতের
শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের ধারাকে মার্গসঙ্গীত হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। মতঙ্গের রচিত
বৃহদ্দেশী গ্রন্থে মার্গ সঙ্গীত সম্পর্কে বলা হয়েছে- আলাপাদি ক্রিয়াদ্বারা নিবদ্ধ
রূপকে নলা হয় মার্গ দুটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। ভাগ দুটি হলো- নিবদ্ধ ও নিবদ্ধ।
উল্লেখ্য শাস্ত্রীয় সঙ্গীতরে বাইরে লৌকিক গানগুলোকে বলা হয়েছে দেশী গান। উল্লেখ্য
নাট্যশাস্ত্রে গান্ধর্ব
সঙ্গীতকে তিনটি ভাগ করা হয়েছে।
- স্বর গন্ধর্ব: গান্ধার গানের মূল উপাদান স্বর।
উৎপত্তি স্থানের বিচারে স্বর দুই প্রকার। এই প্রকার দুটি হলো- কণ্ঠ ও বীণা নামক
তত যন্ত্র।
স্বরগান্ধার্ব গানে স্বর ছিল চার
প্রকার। এগুলো হলো- বাদী,
সম্বাদী, বিবাদী, অনুবাদী।
- কণ্ঠ গন্ধর্ব: মানুষের কণ্ঠে ধ্বনিত হতে
পারে- এমন স্বর, গ্রাম, অলঙ্কার, বর্ণ, স্থান, জাতি, ও সাধারণ স্বর।
- বীণা গান্ধার: কাষ্ঠবীণায় ধ্বনিত হয় এমন
স্বর, গ্রাম, মূর্ছনা, তাল, স্থান, বৃত্তি, সাধারণ স্বর, বর্ণ, অলঙ্কার,
ধাতু, শ্রুতি এবং প্রণালীবদ্ধ বিধিস্বর।
- তাল গন্ধর্ব: গন্ধর্ব গানে তালের ব্যবহার বিধিই হলো তাল গন্ধর্ব।
[দেখুন: গন্ধর্ব তাল]
- পদনিয়ম গান্ধার: গীতের অংশকে তিনি নাম দিয়েছেন
বস্তু এবং আলাপের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশ 'বিদারী'। সঙ্গীতে যা কিছু অক্ষর দিয়ে
তৈরি হয়, তাই হলো পদ। সঙ্গীতের বাণী বা পদ গঠিত হয়, স্বর,
ব্যঞ্জন, সন্ধি, বিভক্তি, নাম (বিশেষ্য) অাখ্যাত (ক্রিয়াপদ),
উপসর্গ, নিপাত, তদ্ধিত, ছন্দ, বৃত্ত, জাতি, মাত্রাবৃত্ত।
পদ দুই প্রকার হয়ে থাকে। প্রকার দুটি হলো- নিবদ্ধ ও অনিবদ্ধ।
এর ভিতরে ধ্রুবা গানে নিবদ্ধ পদ ব্যবহৃত হতো। অনিবদ্ধ গানে অক্ষর, ছন্দ, যতি
থাকলেও তালের ব্যবহার ছিল না।
সূত্র :
- রবীন্দ্রনাথের ব্রহ্মসংগীত। দিলীপকুমার বিশ্বাস। দেশ সাহিত্য সংখ্যা
১৩৯৩।
- বাঙালির রাগসঙ্গীত চর্চা। দীলিপকুমার মুখোপাধ্যায়।
- বৃহদ্দেশী। রাজ্যেশ্বর মিত্র সম্পাদিত। ১৯৯২
-
ভারতীয় সঙ্গীতকোষ। বিমলাকান্ত রায়চৌধুরী/বৈশাখ ১৩৭২
- সঙ্গীতচন্দ্রিকা। গোপেশ্বর বন্দ্যোপাধ্যায়