ধনুবাদ্যযন্ত্র
ধনুকাকৃতির বাদ্যন্ত্রের সাধারণ নাম।

মূল ধনু শব্দটির মূলে রয়েছে ধন ক্রিয়ামূল। এর ভাবগত অর্থ শব্দ। বঙ্গীয় শব্দকোষের মতে এর রূপতাত্ত্বিক বিশ্লেষণ- ধন্ (শব্দ)+ উ। কর্তৃবাচ্য। এর সাধারণ অর্থ বৃত্যংশের চাপ।  প্রাচীন ভারতে শর নিক্ষেপ করার জন্য,  বিশেষভাবে বাঁকানো অবলম্বনের সাথে রজ্জু ব্যবহার করে যে যন্ত্র তৈর করা হতো, তার নাম ছিল ধনু বা ধনুক।

মানব সভ্যতার ঊষালগ্নে শিকারীরা ধনুকের সাহায্যে তীর নিক্ষেপের সময় রজ্জুর আন্দোলনে বোঁ জাতীয় শব্দের অনরণন শুনতে পেতো।  সেই সূত্রে শব্দ উৎপাদনকারী যন্ত্র হিসেবে তীরনিক্ষেপক এই যন্ত্রের নামকরণ করেছিল ধনু। ধনু থেকে উৎপন্ন শব্দটি স্নিগ্ধ ও মনোমুগ্ধকর। আদিকালের মানুষ ধনুকের রজ্জুজাত ধ্বনিকে সঙ্গীতোপযোগী ধ্বনি হিসেবে গ্রহণ করেছিল। এই সূত্রে সৃজনশীল মানুষ তীরনিক্ষেপক ধনুকে ধনুবাদ্যযন্ত্রে পরিণত করেছিল। তীরনিক্ষেপক ধনুর রজ্জু টানলে, এর বাঁকানো কাঠামো আরো বেশি বাঁকা হয়। মূলত দূরে তীর নিক্ষেপের শক্তি সঞ্চয়ের জন্য বাঁকানোর উপযোগী কাঠামোকে নমনীয় করা হয়। কিন্তু ধনুবাদ্যন্ত্রের কাঠামো করা হতো অনমনীয় হাড় বা কাঠ দিয়ে।

প্রায় খ্রিষ্টপূর্ব ৬০০০ অব্দের দিকে মেসোপটেমিয়া অঞ্চলে প্রাপ্ত নমুনা থেকে এই যন্ত্রের প্রাচীনত্ব অনুমান করা যায়। এই সময়ে ধনুবাদ্যযন্ত্রে এর বাঁকানো কাঠামো হিসেবে ব্যবহার করা হতো হাড়, কাঠ জাতীয় উপকরণ।  এরা শব্দের অনুরণন বৃদ্ধির জন্য। সেকালের  এই জাতীয় বাদ্যযন্ত্রে তারের বদলে প্রাণী শুষ্ক নাড়ি। পরবর্তী সময়ে এই যন্ত্র থেকে উদ্ভব হয়েছিল ঘাত ততযন্ত্র এবং ছড় তাড়িত ততযন্ত্র। 

গুকিন (Guqin): চীনদেশীয় সঙ্গীতে
সাত তারের ঘাত বাদয্যন্ত্র। চীনা ততবাদ্যন্ত্রের ইতিহাসে একে বাদ্যযন্ত্রের পিতা বা যোগীদের বাদ্যযন্ত্র নামে অভিহিত করা হয়। এতে কোনো ছিল না। এই যন্ত্রে আদি নমুনা পাওয়া গিয়েছিল জেং-এর মারকুইস য়ি-এর সমাধিস্থলে। এই যন্ত্রের বয়স ধরা হয়ে থাকে খ্রিষ্টপূর্ব ৪৩৩ অব্দ।

এই যন্ত্রটিতে স্বরস্থান নির্ণয়ের জন্য ১৩টি চিহ্ন ব্যবহার করা হয়। সব মিলিয়ে এতে চার অক্টেভ স্বর পাওয়া যায়। এর বাদন পদ্ধতি মৌলিক তিনটি বাদন প্রক্রিয়া বিভাজিত। এই ভাগ তিনটি হলো- সান, ফান এবং আন