আয়ন
ইতোমধ্যে রাজা জুথাসে (Xuthus) সাথে ক্রেউসার বিবাহ হয়। কিন্তু দীর্ঘদিন তাঁদের কোন সন্তান না হলে— এর কারণ জানার জন্য উভয়ে ডেলফির মন্দিরে আসেন। মন্দিরের পুরোহিত তাঁকে বলেন যে, ভবিষ্যতে তাঁর সন্তান হবে। তবে এই মুহূর্তে মন্দির থেকে বের হয়ে যাঁকে সামনে পাবে, তাঁকেই দত্তক হিসাবে গ্রহণ করতে পারে। এরপর জুথাস মন্দিরে থেকে বের হয়ে প্রথম আয়নকে দেখতে পায়। ক্রেউসা এই মন্দিরের দাসরূপী আয়নকে গ্রহণ করতে পারলেন না। তিনি ভাবলেন যে, মন্দিরের পুরোহিতরা ষড়যন্ত্র করে, এই দাসকে রাজপুত্র বানানোর চেষ্টা করছে। তাই ক্রেউসা আয়নকে হত্যা করার ষড়যন্ত্র করতে লাগলেন। জুথাস আয়নকে আনুষ্ঠানিকভাবে পোষ্যপুত্র হিসাবে গ্রহণ করার জন্য একটি উৎসবের আয়োজন করেন। এই অনুষ্ঠানের আরম্ভেই ক্রেউসা মদের সাথে গর্গন নামক ড্রাগনের বিষাক্ত রক্ত মিশিয়ে— এক দাসীর হাত দিয়ে আইয়নের কাছে পাঠায়। আয়ন এই মদ পান করার আগে দেবতার উদ্দেশ্যে কিছুটা উৎসর্গ করে মাটিতে নিক্ষেপ করলেন। এই সময় কয়েকটি ঘুঘু এসে এই মদ মাটি থেকে পান করার সাথে সাথে মৃত্যুবরণ করে।
এরপর যে দাসী আইয়নের জন্য এই মদ এনেছিল, তাঁকে জেরা করে প্রকৃত বিষ প্রদানকারীর কথা জানতে পারেন। মন্দির বিষ প্রয়োগে হত্যার প্রচেষ্টা করার জন্য— পুরোহিতরা ক্রেউসাকে মন্দির অপবিত্র করার অভিযোগে অভিযুক্ত করলেন। ক্রেউসা এরপর এ্যাপোলোর বেদীর কাছে আত্মসমর্পন করলেন। এরপর মন্দিরের বাইরে বিপুলসংখ্যক জনতা ক্রেউসার শাস্তির দাবী তুলে চিৎকার করা শুরু করে। ইতোমধ্যে মন্দিরে পূজারিণী জনতার সামনে আইয়নের জন্মবৃত্তান্ত প্রকাশ করলে— আয়ন ও ক্রেউসার মধ্যে দ্বন্দ্ব মিটে যায়। এরপর দেবী এথেনা এসে জনসাধারণের ভিতরের দ্বন্দ্বকে মিটিয়ে বন্ধুত্বের সৃষ্টি করেন।
আয়ন রাজপ্রাসাদে আশ্রয় পেয়ে রাজকুমাররূপে প্রতিপালিত হতে থাকেন। পরে তাঁর সাথে বিবাহ হয় এ্যাগিলসের রাজকুমারী হেলিসের (Helice) সাথে। রাজা ইরেকথিয়াসের মৃত্যুর পর ইনি এথেন্সের রাজা হন।
সূত্র :
http://www.paleothea.com/
greek myth/Robert Graves, cassel & comoany, fourth edition 1995
Mythology/Edith Hamilton/New American Library, 1969
http://www.pantheon.org/areas/mythology/europe/greek/