Apollo Belvedere, ca. 120-140 CE.

এ্যাপোলো
ি Ἀπόλλων, Apollōn >ইংরেজি apollo
গ্রিক সঙ্গীত, যুদ্ধাস্ত্রবিদ্যা, আলো ও সত্যের দেবতা। 
এঁর অপর নাম ফিবোস (Phoebus)

দেবরাজ
জিউস-এর লেটো গর্ভে জন্মগ্রহণ করেন ইনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন ডেলস দ্বীপে। চমৎকার দেহ সৌন্দর্যের কারণে গ্রিক কবিতায় নন্দিত হয়েছেন। ইনি সঙ্গীতের দেবতা হিসাবে বন্দিত হয়েছে। তাঁর বাদন যন্ত্র ছিলো স্বর্ণ-বীণা। এঁর সহচরী হিসাবে ছিলেন মিউজ কন্যারা। ইনি মানুষের মধ্যে শিল্প-কলার বিকাশে অত্যন্ত যত্নবান ছিলেন। একই সাথে ইনি তীরন্দাজদের কাছে অস্ত্রদেবতা হিসাবে পূজিত হতেন। আলো ও সত্যের দেবতা হিসাবে ইনি পূজিত হতেন গ্রিসের এ্যাপোলো মন্দিরগুলোতে। সূর্যের আলোর প্রতীক হিসাবে ইনি সূর্য দেবতা হিসাবে পূজিত হতেন। তিনি ভবিষ্যৎ-বাণী বলার ক্ষমতা অর্জন করেছিলেন। এ্যাপোলো এই ক্ষমতা অর্জন করেছিলেন প্যান-এর কাছ থেকে।

লিটোর সাথে
জিউস-এর মিলনের ফলে লেটো গর্ভবতী হন। এই সংবাদ জেনে হেরা লেটোর শাস্তি প্রদানের জন্য একটি দৈতকার অজগর সাপ পাঠান। লেটো হেরা'র ভয়ে পালিয়ে ডেলসের নিকটবর্তী অর্টিজিয়াতে গিয়ে লুকিয়ে থাকেন। সাতমাস গর্ভধারণের পর লেটো প্রথমে জন্ম দেন আর্তিমিসকে। পরে ইনি একটি ছোট প্রণালী পার হয়ে ডেলিন পর্বতের কাছে পৌঁছান। সেখানে নয়দিন গর্ভযন্ত্রণা ভোগ করার পর একটি জলপাই ও খেজুর গাছের মধ্যবর্তী স্থানে এ্যাপোলোর জন্ম দেন।

সাত মাস গর্ভাধারণের পর এ্যাপোলোর জন্ম হয়েছিল। সে কারণে ইনি জন্মমূহূর্তে ছিলেন বেশ দুর্বল।
লেটো  হেরা'র ভয়ে এ্যাপোলো ও আর্তেমিসের প্রতিপালনের ভার থেমিস-এর কাছে অর্পণ করেন। থেমিস-এর যত্নে এ্যাপোলো দ্রুত বড় হয়ে উঠেন এবং তীর-ধনুক প্রার্থনা করেন। তার এই প্রার্থনা অনুসারে হেফ্যাস্টাস এ্যাপোলোর তীর-ধনুক তৈরি করে দেন। এরপর ইনি হেরা'র প্রেরিত অজগরটিকে মারার জন্য পারনাসাস পর্বতে চলে আসেন। এই সাপটির সাথে যুদ্ধ হলে- সাপটি পরাজিত ও আহত হয়ে ডেলফি ধরিত্রী মাতার মন্দিরে পালিয়ে যান। এ্যাপোলো এই সাপটির অনুসরণ করে ডেলফিতে এসে সাপটিকে হত্যা করেন। এই সাপটির নামানুসারে এই শহরের নাম রাখা হয়- ডেলফিন (Delphyne)

ধরিত্রী মাতা
জিউস-র কাছে গিয়ে এ্যাপোলোর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। জিউস এ্যাপোলোকে ডেলফির মন্দিরে গিয়ে আত্মশুদ্ধির জন্য এবং সেখানে পাইথন ক্রীড়ায় অংশ করতে আদেশ দেন। এ্যাপোলো জিউস-এর এই আদেশ অমান্য করে আগিয়ালেয়াতে (Aigialaea) পরিশুদ্ধের জন্য যান। সেখানে তিনি তাঁর বোন আর্তিমিসের সাথে কিছুদিন কাটান। কিন্তু এই জায়গাটি অপছন্দ হওয়ায় ইনি জাহাজে করে ক্রিটে-এর টারাহাতে চলে আসেন।

এরপর ইনি গ্রিসে ফিরে আসেন। ইনি প্রথমে খুঁজে বের করেন ছাগল-পাযুক্ত আর্কেডিয়ান দেবতা
প্যানকে (Pan)। ইনি প্যানকে খুশি করে ডেলফির মন্দির দখল করেন। তারপর ইনি সেখানকার মন্দিরে নিজস্ব পুরোহিত নিয়োগ করেন। এ্যাপোলোর মা লেটো এই সংবাদ শুনে আর্তিমিসের সাথে করে ডেলফিতে আসেন। তিনি কিছু ধর্মীয় অনুষ্ঠান করতে ইচ্ছা করলে, টাইটাস (Titus) নামক এক দৈত্য তাতে বাধা দেয়। এই বিষয়টি যখন এ্যাপোলো ও আর্তিমিস শুনলেন, তখন একযোগে এই দৈত্যকে আক্রমণ করে তীরের আঘাতে হত্যা করলেন।

এরপর এ্যাপোলো হত্যা করলেন অর্ধ-ছাগল অর্ধ-মানরূপী মার্সিয়াসকে
(Marsyas)। এই প্রাণীটি ছিল দেবী
সিবেলে (Cybele) অনুসারী। উল্লেখ্য, একদিন এথেনা স্ট্যাগের হাড় থেকে একটি দুই নল বিশিষ্ট বাঁশি তৈরি করেন এবং দেবতাদের এক ভোজ উৎসবে এই বাঁশিটি ইনি বাজিয়ে শোনান। এই বাঁশি শুনে হেরা এবং এ্যাফ্রদাইতি,  এথেনা'র পিছনে দাঁড়িয়ে মৃদু মৃদু হাসতে থাকেন। উৎসবের অন্যান্য সভ্যরা কিন্তু এই বাদন উপভোগ করেন। এরপর এথেনা ফ্রিগিয়ান (Phrygian) জঙ্গলে চলে যান। এখানে একটি ঝর্ণার ধারে দাঁড়িয়ে বাঁশিটি বাজাতে শুরু কারণ। এরপর ইনি ঝর্ণার পানির ভিতরে ফুটে উঠা তাঁর চেহারা লক্ষ্য করেন। ইনি লক্ষ্য করেন যে, তাঁর চেহারার রঙ পরিবর্তিত হয়ে ঈষৎ নীলাভ বর্ণ ধারণ করেছে এবং তাঁর চিবুক হাস্যজনকভাবে স্ফীত হয়ে উঠছে। এতে এথেনা অত্যন্ত রেগে গিয়ে বাঁশিটি ঝর্নার পানিতে ফেলে দেন এবং ইনি বলেন যে এই বাঁশি তুলবে সে অভিশপ্ত হবে।

এই অভিশাপের কথা না জেনেই মার্সিয়াস এই বাঁশিটি পানি থেকে তুলে বাজাতে শুরু করেন। এই বাদন শুনে স্থানীয় বাসিন্দারা অত্যন্ত আনন্দিত হন। এবং এরা বলেন যে
এই বাদন এ্যাপোলোর চেয়ে ভালো। ক্রমে ক্রমে এই আলোচনা এ্যাপোলোর কানে পৌঁছে। ফলে এ্যাপোলো মার্সিয়াসকে তাঁর সাথে প্রতিযোগিতায় নামতে বলেন। এই প্রতিযোগিতায় বিচারক হিসাবে নিয়োজিত হন মিউজ কন্যারা। বিচারকরা উভয়ের বাদনকে প্রশংসা করেন। পরে এ্যাপোলো তাঁর বীণাতে বিভিন্ন সঙ্গীত কৌশল দেখাতে শুরু করলে, মার্সিয়াস প্রতিযোগিতায় হেরে যান। পরে ইনি মার্সিয়াসকে শাস্তি দেন। এর পর ইনি দ্বিতীয়বার সঙ্গীত প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করেন এবং প্যানকে পরাজিত করেন। পরে ইনি সঙ্গীতের দেবতা হিসাবে স্বীকৃতি লাভ করেন।

একবার
জিউস- গর্ব ও ধৃষ্টতা অসহ্য হওয়াতে হেরা, পোসেইডোন, এ্যাপোলো অন্যান্য অলিম্পাস-এর অধিবাসীরা ঘুমন্ত জিউস-কে বন্দী করেন। তাঁরা প্রথমে একটি চামড়ার তৈরি পাতলা ফিতা দিয়ে ১০০টি গিট্টুতে জিউস-কে বেঁধে ফেললেন। এই ষড়যন্ত্রে থেকে একমাত্র হেস্টিয়া  নিজেকে বিরত রাখেন। পরে থেটিস-এর সাহায্যে জিউস মুক্ত হয়ে এ্যাপোলো ও পোসেইডোনকে শাস্তি স্বরূপ রাজা লাওমেডানের  দাস হিসাবে নিযুক্ত করেন।  লাওমেডান এই দুই দেবতাকে দিয়ে ট্রয় নগরীর বাইরে একটি দুর্ভেদ্য প্রাচীর তৈরি করিয়েছিলেন।

থিবিসের রানি নাইয়োবি সাতটি কন্যা এবং সাতটি পুত্রের মা ছিলেন। এই কারণে নাইয়োবি লেটো-কে কটুকথা বলেছিলেন। পরে এ্যাপেলো তার পুত্রদের এবং আর্তেমিস তার কন্যাদের হত্যা করেছিল। কথিত আছে এই সন্তানদের মধ্যে একটি পুত্র এবং একটি কন্যা রক্ষা পেয়েছিল।

ইনি প্রথম যৌবনে বিভিন্ন জলপরী, মানবীকে যৌনসঙ্গী হিসাবে গ্রহণ করলেও বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ থেকে নিজেকে বিরত রাখেন। তাঁর যৌনসঙ্গীরা ছিলেন


তথ্যসূত্র :
greek myth
/Robert Graves, cassel & comoany, fourth edition 1995
edith hamilton mythology/new american library