Aphrodite of Menophantos |
এ্যাফ্রদাইতি
ইংরেজি :Aphrodite।
(æfrəˈdaɪti/
af-rə-DY-tee;
গ্রিক:
Ἀφροδίτη)
গ্রিক প্রেম ও সৌন্দর্যের দেবী
এঁর সমতুল্য রোমান দেবী হলেন-
ভেনাস (Venus)।
এ্যাফ্রোডাইতির জন্ম নিয়ে বিভিন্ন মতামত পাওয়া যায়। যেমন―
১. ক্রোনাস তাঁর পিতা ইউরেনাস-এর অণ্ডকোষসহ পুরুষাঙ্গ কেটে সমুদ্রে ফেলে দিলে, সেখান থেকে এই দেবীর জন্ম হয়।
২. ইনি সমুদ্রের ফেনা থেকে আপনা-আপনি জন্মলাভ করেন। এরপর ইনি একটি সামুদ্রিক শামুকের খোলের ভিতর ধীরে ধীরে বিকশিত হয়ে পূর্ণযৌবনা হয়ে উঠেন। এই খোলের উপর চড়ে সমুদ্রের তরঙ্গে ভেসে ভেসে এসে পৌছান সাইথেরা (Cythera) দ্বীপের উপকুলে এবং জন্মক্ষণের নগ্নতা নিয়েই ইনি এই দ্বীপে প্রথম পা রাখেন। পরে ইনি সাইপ্রাসে চলে আসেন।
৩. হোমারের ইলিয়াডের মতে― দেবরাজ জিউস- ঔরসে ডাওনের (Dione) গর্ভে এঁর জন্ম হয়েছিল।
গ্রিসে এই দেবীকে দেখানো হয়, পুষ্পশোভিত
রথের উপর। এই দেবীর রথ বাহিত হয় কপোত বা বনহংস। এঁর সহচরী ছিলেন ওরিয়াড নামক
পার্বত্য পরীর দল। এঁর কটিতে ছিল একটি অলৌকিক বন্ধনী ছিল। এই বন্ধনী কেউ দেখলে তার
মধ্যে অপরিসীম প্রেম ও যৌনসম্ভোগ ইচ্ছা জাগ্রত হয়ে উঠতো। ইনি তাঁর অলৌকিক ক্ষমতা
বলে সবার মধ্যে যৌন-প্রেম জাগ্রত করতে পারতেন। গ্রিক পুরাণের আদিকালে এই দেবীকে
উত্তম পোষাকে সজ্জিতা হিসাবে বর্ণনা বা চিত্রিত করা হয়েছে। কিন্তু পরবর্তীকালে
পৃথিবীর বিভিন্ন ভাস্করেরা তাঁর নগ্নমূর্তি নিমর্মাণ করেন।
হেফ্যাস্টাস-এর সাথে এঁর বিবাহ হয়েছিল।
হেফ্যাস্টাস পঙ্গু ও কুৎসিত ছিল বলে―
ইনি তাঁকে ঘৃণা করতেন। তাঁর অপর গোপন প্রেমিক ছিল রণদেবতা এ্যারিজ
(Ares)।
হেফ্যাস্টাস যখন কোন কাজে
বাইরে যেতেন, তখন এ্যাফ্রদাইতি
ও
এ্যারিজ
মিলিত হতেন। এদের এই গোপন প্রণয়কাহিনী সূর্য দেবতা হিফ্যাস্টসকে জানান। এরপর
হিফ্যাস্টস একটি সূক্ষ্ম লৌহজাল নির্মাণ করে শয্যার উপর বিছিয়ে রেখে বাড়ির বাইরে
যান। যথাসময়ে এ্যাফ্রদাইতি
ও
এ্যারিজ নগ্ন হয়ে উক্ত বিছানায় শয়ন করলে, এই জালে ধরা
পড়ে যান। এরপর হিফ্যাস্টস বাড়িতে ফিরে নগ্ন অবস্থায় উভয়কে রেখেই, অন্যান্য
দেবদেবীদের ডেকে দেখান। পরে পসাইডনের অনুরোধে এই জাল থেকে হিফ্যাস্টস তাঁদেরকে
মুক্ত করেন।
এ্যারিজ ছাড়াও এঁর বহু প্রেমিক ছিল। এর মধ্যে বিখ্যাত ছিল এ্যাডনিস। কথিত আছে
গোপন সম্ভোগকালে বন্যশুকরের উৎপীড়নে এ্যাডনাস মারা গেলে―
মৃত্যুপুরীর রাণী ও
জিউস-এর
মধ্যস্থতায় এ্যাফ্রিদাইতি তাকে ছয়মাসের জন্য কাছে পেতেন। অন্য ছয় মাস এ্যাডেনাস
মৃত্যুপুরীতে থাকতেন।
বিখ্যাত ট্রয় যুদ্ধের পিছনে ইনি জড়িত ছিলেন। একবার প্যালাস
এথেনা,
হেরা
ও এ্যাফ্রদাইতি
সৌন্দর্য
প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হয়ে প্যারিসের কাছে উপস্থিত হলে, প্যারিস
এ্যাফ্রদাইতিকে
সর্বশ্রেষ্ঠা সুন্দরী ঘোষণা করেন। এরপর ইনি প্যারিসের উপর খুশি হয়ে, পৃথিবীর
শ্রেষ্ট সুন্দরী হেলেনেকে উপহার দেন এবং প্যারিস কর্তৃক হেলেনের অপহরণে সাহায্য
করলে ট্রয়যুদ্ধের সূত্রপাত হয়। গ্রিক দার্শনিক
প্লেটো এই দেবীর দুটি দিকের পরিচয়
দিয়েছেন। একটি দিক হলো- দেহগত ইন্দ্রিয় লালসা, অপরটি হলো- বিশুদ্ধ প্রেমের
আত্মিক দিক।
গ্রিক পুরাণে প্রেমের দেবতা
হিসাবে
এরসকে
উল্লেখ করা হয়েছে, প্রেমের দেবী
এ্যাফ্রদাইতির
পুত্র হিসাবে। এ্যাফ্রদাইতি
এই
পুত্রটি কার ঔরসে জন্মে দিয়েছিলেন,
তা নিয়ে মতভেদ আছে।
এক্ষেত্রে তিনজন দেবতার নাম পাওয়া যায়। এই তিন দেবতা হলেনে–
হের্মেজ,
এ্যারিজ
ও
জিউস।
অন্য মতে পশ্চিমা বাতাসের ঔরসে আইরিসের গর্ভে ইনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন।
এ্যাফ্রডাইটির প্রেমিক ও তাঁর সন্তানের তালিকা।
১.
হেফ্যাস্টাস : সন্তান নাই।
২.
এ্যারিজ :
সন্তান নাই।
তথ্যসূত্র
greek myth/Robert Graves, cassel & comoany, fourth edition 1995