কামদেব
ঊর্ধ্বক্রমবাচকতা
{|
হিন্দু দৈবসত্তা
|
দৈবসত্তা
|
আধ্যাত্মিক সত্তা
|
বিশ্বাস
|
প্রজ্ঞা
|
জ্ঞান |
মনস্তাত্ত্বিক বিষয়
|
বিমূর্তন
|
বিমূর্ত-সত্তা
|
সত্তা
|}
সমনাম:
অকায়, অনঙ্গ,
অনন্যজ,
অতনু,
অযুগশর,
অযুগ্মবাণ,
অযুগ্মশর,
অভিরূপ,
অশরীর,
অসমবাণ,
অসমশর,
অসমসায়ক,
কন্দর্প,
কলকেলী,
কামদেব,
দর্পক,
পুষ্পকেতন,
পুষ্পকেতু,
মকরকেতন,
মকরকেতু,
মকরধ্বজ,
মদন,
মনোজ,
মনোজন্মা,
মনোমথন,
মন্মথ,
মার,
রম,
রমণ,
স্মর।
হিন্দু পৌরাণিক কাহিনি মতে– কামকলার দেবতা
এরপর কামদেব, ব্রহ্মার কাছে তাঁর পরীক্ষার কথা অকপটে শিকার করেন এবং নিজেক নিরাপরাধ দাবী করে এর প্রতিকার চান। ব্রহ্মার বলেন‒ মহাদেবের তৃতীয় নয়নে ভস্মীভূত হওয়ার পর, পুনরায় তাঁর আবার শরীর লাভ হবে। এরপর ব্রহ্মা অন্তর্হিত হলে- দক্ষ তাঁর নিজ স্বেদজল থেকে উৎপন্ন কন্যাকে মদনের সামনে এনে রতি নামে পরিচয় করিয়ে দেন এবং কামদেবের হাতে রতিকে সমর্পণ করেন।
মৎস্যপুরাণে
আছে‒ ব্রহ্মার হৃদয় থেকে এঁর জন্ম হয়েছিল।
পরে ব্রহ্মা এঁরই শরে জর্জরিত হয়ে নিজ কন্যা শতরূপাকে গ্রহণ করেছিলেন।
পরবর্তী সময় ব্রহ্মা তাঁকে এই অভিশাপ দেন যে— ইনি মহাদেবের ক্রোধে ভস্মীভূত হবেন।
পরে এঁর কাতর প্রার্থনায় প্রসন্ন হয়ে ব্রহ্মা অপর একটি বর দিয়ে বলেন, কাম প্রথমে
শ্রীকৃষ্ণের পুত্ররূপে জন্মাবেন এবং এরপর ভরতবংশে জন্মগ্রহণ করবেন।
এরপর বিদ্যাধরের পিতা হবেন এবং সবশেষে দেবত্ব লাভ করবেন।
তৈত্তিরীয় ব্রাহ্মণে আছে— ইনি ধর্মের ঔরসে এবং শ্রদ্ধার গর্ভে জন্মগ্রহণ করেছিলেন।
হরিবংশের মতে ইনি লক্ষ্মীর পুত্র মায়ী নামে অভিহিত হয়েছেন।
শ্রীমদ্ভাগবত ও ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণের মতে- সতী দেহত্যাগের পর হিমালয়ের কন্যা পার্বতীরূপে জন্ম গ্রহণ করেছিলেন। ইনি মহাদেবকে পতিরূপে পাওয়ার জন্য তপস্যা শুরু করেন। এই সময় মহাদেব গভীর তপস্যায় মগ্ন ছিলেন। পার্বতী সে কথা জানতে পেরে প্রতিদিন তাঁর পূজা করতে থাকেন। এদিকে তারকাসুর নামক এক অসুর ব্রহ্মার বরে বলীয়ান হয়ে, দেবতাদের উপর পীড়ন শুরু করলে— দেবতারা ব্রহ্মার শরণাপন্ন হন। ব্রহ্মা দেবতাদের জানান যে, শুধু মাত্র মহাদেবের ঔরসজাত সন্তানই এই অসুরকে হত্যা করতে পারবেন। মহাদেবের ধ্যানভঙ্গের জন্য, অন্যান্য দেবতাদের অনুরোধে কামদেব হিমালয়ে গিয়ে তাঁর কন্দর্প বাণ নিক্ষেপ করেন। ফলে মহাদেবের ধ্যান ভঙ্গ হয়। এতে মহাদেব ক্রুদ্ধ হয়ে তাঁর তৃতীয় নয়ন উন্মোচিত করে কামকে ভস্মীভূত করেন। এরপরে মহাদেব অনুতপ্ত হয়ে— কামদেবকে প্রদ্যুম্নরূপে জন্মগ্রহণ করতে বলেন। মহাদেবের তৃতীয় নেত্রে ভস্মীভূত হয়ে ইনি অঙ্গহীন হয়েছিলেন বলে- এর অপর নাম অনঙ্গ।
এঁর নাসিকা সুচারু, উরু, কটি ও জঙ্ঘা সুবৃত্ত, কেশরাশি নীলবর্ণের ও কুঞ্চিত, বক্ষ সুবিশাল, চক্ষু, মুখ, পদতল ও নখ রক্তবর্ণ। এর শরীর বকুল ফুলের সৌরভে সুরভিত। এর বাহন মকর।
ইনি পুষ্পময় পাঁচ প্রকার শর দ্বারা শোভিত। এই পাঁচটি শর হলো— সম্মোহন, উন্মাদন, শোষণ, তাপন, স্তম্ভন। এই পাঁচটি শর পাঁচটি ফুলের প্রতীকে শোভিত। এই ফুলগুলি হলো– অরবিন্দ, অশোক, আম্র, নবমল্লিকা বা শিরিষ ও নীলোৎপল।