ভীষ্ম
ঊর্ধ্বক্রমবাচকতা
{
পৌরাণিক সত্তা
|
কাল্পনিকসত্তা
|
কল্পনা
|
সৃজনশীলতা
|
দক্ষতা
|
জ্ঞান |
মনস্তাত্ত্বিক বিষয়
|
বিমূর্তন
|
বিমূর্ত-সত্তা
|
সত্তা
|}
হিন্দু পৌরাণিক কাহিনি মতে–
এঁর মূল নাম
দেবব্রত।
এঁর পিতার নাম শান্তনু ও মাতার নাম-গঙ্গাদেবী।
ভীষ্মের জন্মের প্রেক্ষাপট
জগতের হিতার্থে, প্রজাপতি
দক্ষেরর কন্যা নন্দিনী কশ্যপের ঔরসে গাভীরূপে জন্মগ্রহণ করেন। এই গাভী বশিষ্ঠের
কাছে তাঁর তপোবনে নির্ভয়ে বিচরণ করিতেন। একবার অষ্টবসু আমোদের উদ্দেশ্যে সস্ত্রীক
সেই তপোবনে আসেন। ভ্রমণকালে এঁরা সুরভীকে থেকে বিস্মিত ও চমৎকৃত হন। পরে দ্যু নামক
সুরভীকে পর্যবেক্ষণ করে বলেন যে, এই গাভী বশিষ্টের হোমধেনু। কোনো মানুষ যদি এই
গাভীর দুধ পান করেন, তাহলে তিনি দশ হাজার বৎসর স্থির যৌবন হয়ে জীবিত থাকবেন। এই কথা
শুনে বসুপত্নী আপন স্বামীকে দ্যুকে বললেন, মর্ত্ত্যলোকে রাজা উশীনরের কন্যা জিতবতী
তাঁর সখী আছে। সেই সখীকে এই গাভীর দুধ পান করালে সে অজরা ও অরোগিণী হইয়া থাকিবে।
পরে দ্যু এই গাভী অপহরণ করে নিয়ে যান। এদিকে বশিষ্ঠ আশ্রমে ফিরে সুরভীকে দেখতে না
পেয়ে, জ্ঞানচক্ষু উন্মীলন এই অপহরণের কথা জানতে পারলেন এবং বসুগণকে মানুষ হয়ে
জন্মগ্রহণের অভিশাপ দেন। পরে বসুরা এসে বশিষ্ঠের কাছে এসে অপরাধ স্বীকার করে ক্ষমা
প্রার্থনা করেন। মহর্ষি বললেন, 'আমি ক্রোধবশত যা করিয়াছি, তা ব্যর্থ হবে না। তবে
এইমাত্র বলতে পারি যে, তোমরা সকলেই প্রতি বৎসর শাপমুক্ত হবে; কিন্তু দ্যুকে
যাবজ্জীবন মনুয্যলোকে কালযাপন করতে হবে। তাঁকে সামান্য মনুষ্যের ঔরসে জন্মগ্রহণ
করতে হবে না।' এরপর বসুরা গঙ্গাদেবীর কাছে এসে বললেন- 'আপনি আমাদিগকে গর্ভে ধারণ
করুন, আর আমরা ভুমিষ্ঠ হওয়ার সাথে সাথে আপনি আমাদিগকে পানিতে নিক্ষেপ করবেন। এই
সূত্রে শান্তনু রাজার সাথে গঙ্গাদেবীর বিবাহ হয়। এঁদের প্রথম সাতজনের জন্মের পর,
গঙ্গা তাঁদের গঙ্গার পানিতে নিক্ষেপ করেন। অষ্টম পুত্র হিসেবে দ্যু জন্মগ্রহণ করার
পর, তিনি মানুষ হিসেবেই প্রতিপালিত হন।
শিশুকালে ইনি
তাঁর মা গঙ্গাদেবী'র
কাছে প্রতিপালিত হন।
মায়ের আদেশে ইনি বশিষ্ঠ মুনির কাছে বেদ শিক্ষা করেন।
এরপর ইনি পরশুরামের কাছে ধনুর্বেদ শিক্ষা নেন।
ছত্রিশ বৎসর বয়সে গঙ্গাদেবী দেবব্রতকে সর্ববিদ্যায় পারদর্শী করে শান্তনুর কাছে
ফিরিয়ে দেন।
পুত্রের গুণের
সবিশেষ পরিচয় পেয়ে শান্তনু দেবব্রতকে যৌবরাজ্যে অভিষিক্ত করেন।
দেবব্রতের বয়স যখন চার বৎসর,
তখন শান্তনু
যমুনানদীর তীরে ভ্রমণকালে সত্যবতীর সাক্ষাৎ লাভ করেন।
সত্যবতী'র
পালকপিতার কাছে বিবাহের প্রস্তাব দিলে,
তিনি কিছু শর্ত
দেন।
এই শর্ত না মানার কারণে বিবাহ বাধাপ্রাপ্ত হয়।
পরে ভীষ্ম পিতাকে সুখী করার জন্য,
এই সকল শর্ত
মেনে নিয়ে ইনি সত্যবতীকে মা সম্বোধন করে সাথে করে রাজধানীতে আনেন এবং সত্যবতীকে
তাঁর পিতার কাছে সমর্পণ করেন।
এই বিবাহের শর্তগুলো ছিল−
১। সত্যবতীর গর্ভজাত পুত্র ভবিষ্যতে রাজা হবে।
২। দেবব্রত কখনো রাজ্যের দাবী করতে পারবেন না।
৩। দেবব্রতের পুত্ররাও সিংহাসনের দাবী করতে পারবে না।
এইরূপ পণ করে- পিতার জন্য সত্যবতীকে আনার জন্য ইনি ভীষ্ম নামে পরিচিত হন। এই সময় শান্তনু ভীষ্মের প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে তাঁকে ইচ্ছামৃত্যুর বর দান করেন।
সত্যবতীর গর্ভে চিত্রাঙ্গদ ও বিচিত্রবীর্য নামে দুটি পুত্র-সন্তান জন্মের পর শান্তনুর মৃত্যু হয়। এরপর ভীষ্ম তাঁর বৈমাত্রেয় এই ভাই দুটিকে লালন পালন করেন। উপযুক্ত সময়ে ইনি চিত্রাঙ্গদকে সিংহাসনে বসান। তিন বত্সর রাজত্ব করার পর চিত্রাঙ্গদ- গন্ধর্বের সাথে যুদ্ধে পরাজিত ও নিহত হন। এরপর ভীষ্ম বিচিত্রবীর্যকে সিংহাসনে বসান। উপযুক্ত বয়সে ইনি বিচিত্রবীর্যের বিবাহের জন্য পাত্রী অনুসন্ধান করতে থাকেন। এই সময় কাশীরাজ তাঁর তিন কন্যার জন্য স্বয়ংবর সভা'র আয়োজন করেছিলেন। ভীষ্ম এই স্বয়ম্বর সভা থেকে তিনটি কন্যাকেই জোরপূর্বক রথে তুলে আনেন। সভাস্থলে আগত রাজারা তাঁকে আক্রমণ করলে- ইনি সবাইকে পরাজিত করেন। পথে শাম্বরাজ ভীষ্মকে আক্রমণ করলে- ইনি তাঁকেও পরাজিত করেন।
কাশীরাজের এই তিন কন্যার নাম ছিল, যথাক্রমে- অম্বা, অম্বিকা ও অম্বালিকা। ভীষ্ম এই তিনটি কন্যার সাথে বিচিত্রবীর্যের বিবাহের আয়োজনে উদ্যোগ গ্রহণ করলে- অম্বা ভীষ্মকে জানালেন যে- ইনি পূর্বেই শাম্বরাজকে মনে মনে পতিত্বে বরণ করেছেন। ভীষ্ম অম্বার এই কথা শুনে এবং অন্যান্য ব্রাহ্মণদের মত গ্রহণ করে- অম্বাকে শাম্বরাজের কাছে যাবার অনুমতি দিলেন। এরপর অম্বা শাম্বরাজার কাছে গেলে- অম্বা অপহৃত কন্যা বলে শাম্বরাজ তাঁকে প্রত্যাখান করেন। এরপর অম্বা ভীষ্মের কাছে ফিরে সেন এবং তাঁকে বিবাহ করতে অনুরোধ করলেন। ভীষ্ম কখনো বিবাহ করবেন না- এরূপ প্রতিজ্ঞা পূর্বেই করেছিলেন বলে- ইনি অম্বাকে বিবাহ করতে রাজী হলেন না। এরপর অম্বা ভীষ্মের বাল্যগুরু পরশুরামের শরণাপন্ন হন। পরশুরাম এসে ভীষ্মকে এই বিয়েতে রাজী করাতে পারলেন না। এই নিয়ে পরশুরামের সাথে ভীষ্মের ঘোরতর যুদ্ধ হয়। যুদ্ধে পরশুরাম পরাজিত হলে- অম্বা ভীষ্মবধের জন্য দৃঢ় সংকল্প নিয়ে মহাদেবের আরাধনা শুরু করেন। তপস্যা মহাদেব সন্তুষ্ট হয়ে- বর দিলেন যে, সে জন্মান্তরে দ্রুপদ-গৃহে ক্লীবরূপে জন্মগ্রহণ করবেন এবং ভীষ্মবধের কারণ হবেন। এরপর অম্বা চিতার আগুনে প্রাণত্যাগ করেন। উল্লেখ্য, অম্বা দ্রুপদ রাজার ঘরে শিখণ্ডী নামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। দেখুন : শিখণ্ডী
এরপর ভীষ্ম অম্বিকা ও অম্বালিকা'র সাথে বিচিত্রবীর্যের বিবাহ দেন। ইন্দ্রিয়পরায়ণ বিচিত্রবীর্য এই দুই স্ত্রীর সাথে অপরিমিত যৌনাচারে দুর্বল হয়ে পড়েন এবং অকালে নিঃসন্তান অবস্থায় যক্ষ্মারোগে মৃত্যুবরণ করেন। বংশ লোপ হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেওয়ায়, সত্যবতী ভীষ্মকে এই বিধবা'র গর্ভে সন্তান উত্পাদনের জন্য অনুরোধ করলে- ভীষ্ম সত্য রক্ষার্থে সে অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেন। এরপর ভীষ্মের কাছে অনুমতি নিয়ে সত্যবতী তাঁর প্রথম পুত্র ব্যাসদেবকে আনেন। ব্যাসদেব অম্বিকা'র গর্ভে ধৃতরাষ্ট্র, অম্বালিকা'র পাণ্ডু ও এক দাসীর গর্ভে বিদুরের জন্ম দেন।
এরপর ভীষ্ম এই সন্তানদের লালন পালন করেন- এবং এদের অভিভাবক হিসাবে রাজ্য পরিচালনা করতে থাকলেন। এই সময় ইনি ধর্মচক্র প্রবর্তন করেন। এই সন্তানেরা বড় হলে, ইনি এঁদের বিবাহ দেন এবং পাণ্ডুকে রাজসিংহাসনে বসান। এরপর ইনি পাণ্ডুর পাঁচটি ক্ষেত্রজ পুত্র ও ধৃতরাষ্ট্রের শত পুত্রকে লালন পালন করেন। এই রাজকুমারদের শিক্ষার জন্য ইনি দ্রোণাচার্যকে শিক্ষাগুরু হিসাবে নিয়োগ করেন। ধৃতরাষ্ট্র এবং দুর্যোধনের নানা ধরনের দুরভিসন্ধির ফলে দুর্যোধন ও অন্যান্য কৌরবগণের সাথে পাণ্ডবদের মধ্যে মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়। কৌরবেরা পাণ্ডবদের বিনাশের জন্য বিষপ্রয়োগ, জতুগৃহ নির্মাণ করে। কিন্তু এ সকল প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। এরপর অর্জুন লক্ষ্যভেদ করে দ্রুপদ রাজার কন্যা দ্রৌপদীকে লাভ করে। এই সময় ভীষ্ম ধৃতরাষ্ট্রসহ সকল কৌরবদেরকে পাণ্ডবদের সাথে বিবাদ মিটিয়ে ফেলার পরামর্শ দেন। দ্রোণাচার্য ও বিদুর ভীষ্মকে সমর্থন করলে- কৌরবেরা পাণ্ডবদেরকে অর্ধেক রাজত্ব দান করেন। পাণ্ডবেরা ইন্দ্রপ্রস্থে রাজধানী নির্মাণ করেন এবং কৃষ্ণের পরামর্শে যুধিষ্ঠির রাজসূয় যজ্ঞের আয়োজন করেন। এই অনুষ্ঠানে ভীষ্ম ও যুধিষ্ঠিরের নির্দেশে- সহদেব সর্বশ্রেষ্ঠ হিসাবে কৃষ্ণকে প্রথম অর্ঘ দান করেন। এই সময় কৃষ্ণবিদ্বেষী চেদিরাজ শিশুপাল তীব্রভাষায় ভীষ্মসহ কৃষ্ণকে তিরস্কার করে সভাত্যাগ করেন। ফলে ভীষ্ম কৃষ্ণের লৌকিক ও অলৌকিক গুণাবলী ব্যক্ত করে বলেন -যে নিয়তি অনুসারে শিশুপাল কৃষ্ণের হাতে নিহত হবে। উল্লেখ্য উক্ত সভাতেই কৃষ্ণ শিশুপালকে হত্যা করেছিলেন।
শকুনির কপট পাশাখেলায় যুধিষ্ঠির যখন দ্রৌপদীকে পণ রেখে পরাজিত হন, তখন সেখানে ভীষ্ম উপস্থিত ছিলেন। এই সময় দুর্যোধনের আদেশে দুঃশাসন দ্রৌপদীকে বিবস্ত্রা করতে উদ্যত হলে- ইনি সেখানে অসহায়ের মতো কোন পক্ষকেই সমর্থন করতে পারেন নি।
ইনি শেষ পর্যন্ত কৌরবদের সাথে পাণ্ডবদের মিলনের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন। এঁর সকল উপদেশ কৌরবেরা অগ্রাহ্য করে কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ অনিবার্য করে তোলে। এবং শেষ পর্যন্ত ইনি এই যুদ্ধে কৌরবদের পক্ষাবলম্বন করেন এবং প্রধান সেনাপতির পদ গ্রহণ করেন। কিন্তু ইনি প্রকাশ করেন যে- সে প্রতিদিন দশহাজার পাণ্ডব সৈন্যকে হত্যা করতে পারেন- কিন্তু পাণ্ডুর পুত্রদের হত্যা করতে ইচ্ছা করেন না। ইনি শিখণ্ডী (স্ত্রীরূপে জন্ম গ্রহণ করেও যে পুরুষ হয়েছিল) ও পঞ্চপাণ্ডবকে হত্যা করবেন না।
কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের সময় তাঁর বয়স ছিল প্রায় একশত বত্সর। এঁর উষ্ণীষ, বর্ম ও রথের অশ্বের বর্ণ ছিল সাদা। রথের পতাকায় পাঁচটি তারা ও সূর্য অঙ্কিত ছিল। ভীষ্ম প্রতিদিন যুদ্ধের পূর্বে সকালের প্রার্থনায় পাণ্ডবদের বিজয় কামনা করতেন। কিন্তু যুদ্ধ করতেন পাণ্ডবদের বিরুদ্ধে।
যুদ্ধে ভীষ্মকে পরাজিত করা অসম্ভব জেনে- যুদ্ধের আরম্ভে যুধিষ্ঠির রণক্ষেত্রে এসে- কি উপায়ে তাঁকে যুদ্ধে হত্যা করা যাবে, সে বিষয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসা করেন। ভীষ্ম উত্তর করেছিলেন যে তাঁর মৃত্যুর সময় তখনও হয় নাই। পরবর্তী নয়দিনের যুদ্ধে ভীষ্ম পাণ্ডব সৈন্যদের অসম্ভব ক্ষতি করলে পাণ্ডবদের পরাজয় অনিবার্য হয়ে ওঠে। ভীষ্মের এই তেজস্বীতা এতই তীব্র ছিল যে, কৃষ্ণ এই যুদ্ধে প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ না করার প্রতিজ্ঞা'র পরও যুদ্ধ ক্ষেত্রে ভীষ্মের মুখোমুখি হলেন। ভীষ্ম ছিলেন পরম কৃষ্ণ ভক্ত। ইনি কৃষ্ণকে আক্রমণ না করে তাঁর বন্দনা করে তাঁকে শান্ত করেন। নবম দিনের যুদ্ধ শেষে রাত্রিতে যুধিষ্ঠির, ভীম, অর্জুন, নকুল সহদেব ও কৃষ্ণ- ভীষ্মের শিবিরে যান। যুধিষ্ঠির সেদিনও তাঁর মৃত্যু রহস্য জানতে চাইলেন। এদিন ভীষ্ম জানালেন- শিখণ্ডীকে রথের সামনে বসিয়ে অর্জুন তাঁর প্রতি শর নিক্ষেপ করলে- তবেই তাঁর পতন হবে। অর্জুন প্রথমাবস্থায় ভীষ্মকে আঘাত করতে অনিচ্ছা দেখিয়ে কৃষ্ণকে বলেছিলেন, হে বাসুদেব, বাল্যকালে খেলার সময় শরীরে ধূলাবালি মেখে এই মহাত্মার কোলে বসেছি। সেই ধূলার দ্বারা তাঁর দেহকে মলিন করেছি। শৈশবে কোলে বসে যাকে পিতা সম্বোধন করলে- যিনি বলতেন- বত্স, আমি তোমার পিতার পিতা, সেই মহাত্মাকে আমি কিরূপে হত্যা করবো। কিন্তু পরে কৃষ্ণের পরামর্শেই অর্জুন যুদ্ধের দশমদিনে সূর্যাস্তের কিছু পূর্বে শিখণ্ডীকে রথের সামনে বসিয়ে ভীষ্মের সম্মুখে আসেন এবং শরনিক্ষেপে ভীষ্মের পতন ঘটান। অর্জুনের শর নিক্ষেপের ক্ষিপ্রতা এতই তীব্র ছিল যে- ভীষ্মের শরীরের এক ইঞ্চি পরিমাণ জায়গাও অবিদ্ধ ছিল না। দিনের শেষে ইনি রথ থেকে পড়ে যান। কিন্তু অসংখ্য শর বিদ্ধ থাকার কারণে এঁর শরীর মাটি স্পর্শ করলো না। ফলে ইনি শরশয্যায় থেকে গেলেন। আর আটদিন পর যুদ্ধের শেষ হলে- যুধিষ্ঠির রাজ্যলাভ করে অভিষিক্ত হলেন। এই সময় কৃষ্ণের পরামর্শে যুধিষ্ঠির শরশয্যায় শায়িত ভীষ্মের কাছে আসেন। সেখানে কৃষ্ণের অনুরোধে ইনি যুধিষ্ঠিরকে বিবিধ পরামর্শ দেন। শরশয্যায় মোট আটান্নদিন থাকার পর ইনি মাঘ মাসের শুক্ল পক্ষের অষ্টমী তিথিতে যোগযুক্ত হয়ে ইচ্ছামৃত্যু গ্রহণ করেন। এই দিনের স্মরণে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা ভীষ্ম-তর্পণ করে থাকেন।
সূত্র:
মহাভারত। আদিপর্ব। কৃষ্ণদ্বৈপায়ন
ষণ্ণবতিতম অধ্যায়। অভিশপ্ত বসুগণের গঙ্গাগর্ভে জন্ম।
সপ্তনবতিতম অধ্যায়। শান্তনুর জন্মবৃত্তান্ত
অষ্টনবতিতম অধ্যায়। শান্তনুকে গঙ্গার পতিত্বে বরণ
নবনবতিতম অধ্যায়। বসুগণের শাপ-বৃত্তান্ত
শততম অধ্যায়। শান্তনুচরিত। ভীষ্মচরিত। ভীষ্মের যৌবরাজ্যে অভিষেক