চিত্রনমুনা: সংবাদপত্রে সেকালের কথা। দ্বিতীয় সংস্করণ। ব্রজেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়। বঙ্গীয়-সাহিত্য-পরিষদ্ মন্দির, কলিকাতা । ১৯৪৪। |
প্রথম সংখ্যা প্রকাশের
সঙ্গে সঙ্গে কলকাতার শিক্ষিত মহলে পত্রিকাটি আলোড়ন
তুলল। সে সময়কার হিন্দু কলেজের ছাত্ররা এই পত্রিকা
সাগ্রহে পড়তে লাগল। পত্রিকা কর্তৃপক্ষ,
প্রতিমাসে দুই কপি পত্রিকা বিদ্যালয়গুলোতে পাঠিয়ে
দিত। ২৪টি পৃষ্ঠার এই পত্রিকার প্রতি
সংখ্যার মূল্য ছিল আট আনা । 'কলিকাতা স্কুল বুক
সোসাইটি' প্রতি মাসে এক হাজার কপি কিনতেন। বাংলাতে
এই পত্রিকার বিপুল জনপ্রিয়তা লক্ষ্য করে,
ক্যাপ্টেন গোয়ান দু'জন পণ্ডিতকে শ্রীরামপুর মিশনে
পাঠান দিলেন। তাঁদের চেষ্টায় দেবনাগরী অক্ষরে
হিন্দিতে দিগ্দর্শন প্রকাশিত হল। এর ১৬টি
বাংলা দিগ্দর্শন প্রকাশিত হওয়ার পর
'কলিকাতা স্কুল বুক সোসাইটি'র তাগিদে এর ইংরেজি
সংস্করণ বের হল। প্রথম সংখ্যা দিগ্দর্শন-এর
ভূমিকায় প্রচার করা হয়েছিল ২৪ সংখ্যা পত্রিকা
প্রকাশ করা হবে কিন্তু ২৬ সংখ্যা পর্যন্ত এই
পত্রিকা প্রকাশিত হয়েছিল।
১৮২১ খ্রিষ্টাব্দে এই
পত্রিকার প্রকাশ বন্ধ হয়ে যায়। এই পত্রিকায়
ব্যবহৃত হয়েছিল বিলিতি কাগজ। পাদ্রী লঙ সাহেবের
বিবরণ অনুযায়ী জানা যায় মোট ১০৬৭৬টি পত্রিকা
প্রকাশিত হয়েছিল।
এই পত্রিকার মলাটে সম্পাদকের নাম ছাপা থাকত না। 'স্কুল বুক সোসাইটি'র রিপোর্ট থেকে জানা যায়, জসুয়া মার্শম্যানের পুত্র জন ক্লার্ক মার্শম্যান এই পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন। দিগ্দর্শন-এর লেখকদের মধ্যে কয়েকজনের নাম পাওয়া যায়। রেভারেণ্ড টমসন এই পত্রিকায় জ্যোতির্বিদ্যা-বিষয়ক প্রবন্ধ লিখতেন। গুরু নাভাজি লিখতেন ভূগোল বিষয়ক নিবন্ধ। রাজা রামমোহন রায় এই পত্রিকার লেখক ছিলেন। তাঁর লিখিত 'অয়স্কান্ত অথবা চুম্বকমণি'এবং 'মকর মাসের বিবরণ' এই পত্রিকায় ছাপা হয়েছিল। এছাড়া এই পত্রিকায় থাকতো কলকাতার বহু ধরনের সংবাদ প্রকাশিত হতো।
সূত্র :