সমাচার চন্দ্রিকা
বাংলা
ভাষায় প্রকাশিত সাপ্তাহিক পত্রিকা।
এই পত্রিকা প্রকাশের পিছনে সাপ্তাহিক
সম্বাদ কৌমুদী-এর
বিশেষ ভূমিকা ছিল। উল্লেখ্য, ১৮২১
খ্রিষ্টাব্দের ৪ঠা ডিসেম্বর থেকে
সম্বাদ কৌমুদী
প্রকাশিত হতে থাকে। এই পত্রিকায় হিন্দু ধর্মের
প্রচলিত প্রথার বিরুদ্ধে লেখা প্রচার করা
হয়। বিশেষ করে,
সহমরণ-প্রথার বিরুদ্ধে রাজা
রামমোহন রায়-এর আন্দোলনকে এই পত্রিকা সমর্থ
করতে থাকে। সহমরণ-প্রথার বিরুদ্ধে এই পত্রিকা
ক্রমাগত বহু রচনা প্রকাশ করে। ফলে রক্ষণশীল
হিন্দুরা, এর প্রতিবাদের জন্য একটি পত্রিকা
প্রকাশের প্রয়োজন অনুভব করে। এই সূত্রে ১৮২২
খ্রিষ্টাব্দের ৫ই মার্চে আত্মপ্রকাশ করে সমাচার
চন্দ্রিকা।
সম্বাদ কৌমুদী-এর
প্রথম সম্পাদক ছিলেন ভবানীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়।
তাঁর পরিচালনায় এই পত্রিকার প্রথম ১৩টি সংখ্যা
প্রকাশিত হয়েছিল। পরে তিনি এই পত্রিকা থেকে সরে
দাঁড়ান। সমাচার দর্পণ পত্রিকা প্রকাশের সময় তিনি
এই পত্রিকার সম্পাদক হন।
এই পত্রিকার প্রতিটি সংখ্যার শিরোনামে থাকতো
সদা সমাচারঞ্জুষাং ফলার্পিকা, পদার্থচেষ্টাপরমার্থদায়িকা
বিজৃম্ভতে সর্ব্বমনোনুরঞ্জিকা শ্রিয়া ভবানীচবণস্ত চন্ত্রিকা।
১৭৫১
শকাব্দের বৈশাখ (এপ্রিল ১৮২৯ বঙ্গাব্দ) থেকে এই পত্রিকা
সপ্তাহে দুই বার প্রকাশিত হতো। রক্ষণশীল হিন্দুরা
এই পত্রিকাটি সাদরে গ্রহণ করেছিলেন। এই কারণে
দ্রুত এর গ্রাহক সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছিল। কিন্তু
১৮২৯ খ্রিষ্টাব্দের ৪ ডিসেম্বরে
সতীদাহ প্রথা আইন দ্বারা বিলুপ্ত হয়ে গেলে
আনুষ্ঠানিকভাবে সতীদাহের পক্ষে লেখা দুষ্কর হয়ে
পড়ে। এরপর থেকে পত্রিকাটি রক্ষণশীল হিন্দুদের জন্য
হিন্দুধর্মের অন্যান্য প্রথার বিষয়ে লেখা হতো। এই
অবস্থায় গ্রাহক সংখ্যা কমতে থাকে।
১৮৪৮ খ্রিষ্টাব্দে ভবানীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়
মৃত্যুবরণ করেন। এরপর তাঁর পুত্র রাজকৃষ্ণ
বন্দ্যোপাধ্যায় পত্রিকার সম্পাদক হন। কিন্তু
রাজকৃষ্ণ বিভিন্নভাবে ঋণাগ্রস্ত হয়ে পড়লে, তিনি
১৮৫২ খ্রিষ্টাব্দে ভগবতী চট্টোপাধ্যায়ের কাছে
পত্রিকার স্বত্ব বিক্রি করে দেন। ১৮৫২
খ্রিষ্টাব্দের ৭ই মে এই পত্রিকায় ভগবতী
চট্টোপাধ্যায়ের নাম প্রকাশক হিসেবে পাওয়া যায়।
১৮৫৩ খ্রিষ্টাব্দে অল্প দিনের জন্য পুরাতন সমাচার
দর্পণের কয়েকটি সংখ্যা প্রকাশিত হয়েছিল। এর
সর্বশেষ সংখ্যা কবে প্রকাশিত হয়েছিল, তা জানা যায়
না।