সিলিন্ডার রেকর্ড
cylinder record
[রেকর্ড অভিধান]

শব্দ ধারণ এবং বাদন প্রক্রিয়ার আদি পদ্ধতি১৮৭৭ খ্রিষ্টাব্দে থমাস আলভা এডিসন তাঁর ফোনোগ্রাফ রেকর্ডে এর ব্যবহার করেছিলেন।

এডিসন শব্দধারণের প্রক্রিয়ায়-  কথা বলা হতো একটি চোঙের ভিতর। শব্দ তরঙ্গাকারে একটি পাতলা পর্দায় বা ডায়াফ্রামে কম্পন সৃষ্টি হতো। এই ডায়াফ্রামটি যুক্ত ছিল একটি সূঁচালো শলাকারা সুইয়ের সাথে। শলাকার অগ্রভাগ টিনের উপর এটি দাগ কেটে তরঙ্গের রৈখিক তথ্য অঙ্কন করতো। এডিসন টিনের পাতের উপর শব্দ ধারণের জন্য একটি সিলিন্ডার ব্যবহার করেছিলেন। এই টিনের পাতটি পেঁচানো হয়েছিল ওই সিলিন্ডারে। এই সিলিন্ডার হাতে ঘোরানো জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল একটি হাতল। কথা বলার সময় এই সিলিন্ডার ধীরে ধীরে ঘুরানো হতো। এরপর এই শব্দকে বাজনোর জন্য জন্যও পৃথক শলাকা ও ডায়াফ্রামের ব্যবহার করা হতো। শলাকাটি টিনের পাতে অঙ্কিত রেখার খাঁজগুলোর সাহায্যে ডায়াফ্রামে কম্পন তৈরি করতো। এরপর একটি চোঙার ভিতর দিয়ে কথা বেরিয়ে আসতো।

সিলিন্ডার রেকর্ডের আদর্শিক মাপ ছিল ৪.২৫ ইঞ্চি লম্বা এবং ব্যাস ২.১৮৭৫ ইঞ্চি। ঘূর্ণন গতি ছিল ১২০ আরপিএম। এর দাম ছিল ৫০ সেন্ট। এর বাদনকাল ছিল ২ মিনিট। এই রেকর্ডের বড় অসুবিধা ছিল, এর একাধিক কপি করা যেতো না। ফলে প্রতিবার নতুন ক্রেতার জন্য শিল্পীরা নতুন করে রেকর্ড করতেন। এর ফলে এর দাম কমানো সম্ভব হতো না। তা ছাড়া প্রতিবার রেকর্ড করার জন্য অনেক সময় ব্যয় হতো।

১৮৯৯ খ্রিষ্টাব্দে এডিসন বাজারে ছাড়েন কনসার্ট ফোনোগ্রাফ। এর দাম রাখা হয়েছিল ১২০ ডলার। এর দৈর্ঘ্য ছিল ৪.২৫ ইঞ্চি এবং দৈর্ঘ্য ছিল ৫ ইঞ্চি। এর শব্দে মান ভালো ছিল। তবে দাম বেশি হওয়ার জন্য যথেষ্ঠ ক্রেতা পাওয়া যেতো না। ফেলে ১৯১২ খ্রিষ্টাব্দে এর ঊৎপাদন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।

১৯০১ খ্রিষ্টাব্দে এডিসন আবিষ্কার করেন একাধিক সিলিন্ডার তৈরির কৌশল। এই কৌশলে স্টাইলাস দ্বারা লিখনের পরিবর্তে ছাপের পদ্ধতি ব্যবহার করা হতো। এছাড়া এত শক্ত মোম ব্যবহারের কারণে ব্যবহার জনীত ক্ষয় কম হতো। এতে স্বর্ণ ইলেক্ট্রোড পদ্ধতিতে স্বর্ণবাষ্প ব্যবহার করা হতো। এই কারণে, এর নাম দেওয়া হয়েছিল
New High Speed Hard Wax Moulded Records । ১৯০৪ খ্রিষ্টাব্দের মাঝামাঝি সময়ে এর নাম সংক্ষিপ্ত রাখা হয়েছিল Gold Moulded । এই পদ্ধতিতে ১২০ থেকে ১৫০ টি সিলিন্ডার কপি করা যেতো। ফলে নির্মাণ খরচ কমে গিয়েছিল। সে সময়ে প্রতিটি সিলিন্ডার বিক্রয় হতো ৩৫ সেন্ট। এই সিলিন্ডারগুলো ১৯০৫ খ্রিষ্টাব্দের শুরুর দিকে।

সূত্র