গ্রেগোরিয়ান অব্দ বা পঞ্জিকা
এই পঞ্জিকাটি পাশ্চাত্য পঞ্জিকা বা খ্রিষ্টীয় পঞ্জিকা নামেও পরিচিত। বর্তমানে এটি সারা বিশ্ব ব্যাপী প্রচলিত। প্রাক্তন জুলিয়ান পঞ্জিকা সংস্কার করে, এই পঞ্জিকাটি উপস্থাপন করেছিলেন পোপ গ্রেগোরি ত্রয়োদশ ( Pope Gregory XIII)। ১৫৮২ খ্রিষ্টাব্দের ২৪ ফেব্রুয়ারি তারিখে উপস্থাপিত এই পঞ্জিকা বিষয়ক অভিজ্ঞান পত্রে পোপ স্বাক্ষর করেন।  পোপ গ্রেগোরির নামানুসারে এই সংস্কারকৃত পঞ্জিকার নামকরণ করা হয়–  গ্রেগোরিয়ান পঞ্জিকা।

জুলিয়ান পঞ্জিকা-তে ৩৬৫.২৫ দিনে এক বৎসর ধরা হয়েছিল। এর ফলে চার বৎসর পর অতিরিক্ত ১ দিন সৃষ্টি হতো। এই বাড়তি ১ দিনের হিসাবকে সমন্বয় করার জন্য ৪ বৎসর অন্তর ফেব্রুয়ারি মাসের সাথে ১ দিন যুক্ত করার বিধান রাখা হয়েছিল জুলিয়ান পঞ্জিকাতে। গ্রেগোরিয়ান পঞ্জিকাতে এই বিধান রেখেই নতুন সংশোধন আনা হলো।  কারণ জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের মতে এক সৌর-বৎসরের মোট সময় হলো–  ৩৬৫ দিন ৫ ঘণ্টা ৩৯ মিনিট ১২ সেকেন্ড। ফলে দেখা গেল প্রতি বৎসর ১১ মিনিট ৪৮ সেকেন্ড অতিরিক্ত সময় গ্রহণ করা হচ্ছে। এই হিসাবে অধিবর্ষ হিসাবে যে ২৪ ঘণ্টা গ্রহণ করা হয়, তা প্রকৃত সময় থেকে বেশি। এই অতিরক্ত সময়ের সাথে প্রকৃত সময়ের সমন্বয় করার জন্য গ্রেগোরিয়ান পঞ্জিকায় নতুন বিধান যুক্ত করা হলো।

যেহেতু সৌরবর্ষের সময় নির্ধারণ হয় ৩৬৫ দিন বা ৩৬৬ দিনে। ৪০০ বৎসরের ভিতরে ৩০৩টি সাধারণ বৎসর হয় ৩৬৫ দিনে এবং বাকি ৯৭টি অধিবর্ষ হয় ৩৬৬ দিনে। ৪০০ বৎসরের শেষে এই প্রকৃত সময় পাওয়া যাবে ৩৬৫+ ৯৭/৪০০=৩৬৫.২৪২৫ দিন। তাই প্রতি ৪০০ বৎসরে এই বাড়তি একদিন যুক্ত না করলেই হিসাবের সমন্বয় হবে। এই কারণে অধিবর্ষের যে বিধান চালু করা হয়েছে, তা হলো-

  ১. যে কোনো বৎসরকে চার দ্বারা ভাগ করলে, যদি তা ভাগশেষ ছাড়া সম্পূর্ণ ফল পাওয়া যায়, তবে ওই বৎসর অধিবর্ষ হবে।
২. তবে, যদি কোনো বৎসরকে ৪০০ দ্বারা ভাগ করলে, ভাগশেষ ছাড়াই সম্পূর্ণ ফল পাওয়া যায়, তা হল ওই বৎসর অধিবর্ষ হবে না, ফলে এক্ষেত্রে ৪ দ্বারা বিভাজনের সূত্রও কার্যকরী হবে না।

গ্রেগোরিয়ান পঞ্জিকাতে বৎসরের প্রথম মাস ধরা হয় জানুয়ারি। এই মাসগুলোর দিনের সংখ্যা যেভাবে নির্ধারিত হয়, তা হলো-