দীর্ঘ প্রাণায়াম
যোগশাস্ত্রে বর্ণিত একটি প্রাণায়াম বিশেষ। একে সম্পূর্ণ বা ত্রিভাগ প্রাণায়াম বলা হয়। ফুসফুসের তিনটি অংশের ব্যায়াম সম্পন্ন হয়। এর শুরুটা হয়, ফুসফুসের একদম নিচের অংশ থেকে। তারপর ক্রমান্বয়ে উর্ধ্বাভিমুখী করা হয়।

পদ্ধতি
১. বসে বা শুয়ে এই এই প্রাণায়াম করতে পারেন। প্রাথমিকভাবে খুব লম্বা করে ধীরে ধীরে নাক দিয়ে বাতাস টেনে নিয়ে, একই ভাবে ছাড়ুন।
২. যখন বাতাসে আপনার ফুসফুস পুরোটা ভরে যাবে, তখন আপনার পেট কিছুটা উঁচু হয়ে উঠবে। আপনি পেটের টান ছেড়ে দিয়ে, পেটকে ফুলতে দিন। এর ফলে, ফুসফুস বিনা বাধায় আরো বেশি ফুলে উঠতে সক্ষম হবে। ফলে ফুসফুসের নিম্নাংশ সহজেই বাতাস দ্বারা পূরণ হবে। বাতাস পূরণ হওয়ার পর ১০ সেকেন্ড পরিমাণ দম আটকে রাখুন।
৩. এরপর ধীরে ধীরে ফুসফুস থেকে পুরো বাতাস বের করে দিন। ফুসফুস থেকে সব বাতাস বেরিয়ে গেলে
, দম আটকে ১০ সেকেন্ড অপেক্ষা করুন। এবার আবার ধীরে ধীরে ফুসফুসকে আগের মতো বাতাস দ্বারা পূরণ করুন। প্রথম প্রথম এই প্রাণায়াম ১০-১২ বার করতে পারেন। পরে এই সংখ্যা বৃদ্ধি করতে পারেন।

বিশেষ কর্ম
১. এই প্রাণায়ামে পেট প্রসারণের দ্বিতীয় পর্যায়ে শ্বাসগ্রহণকালে বুকের মধ্যভাগকে ফুলানোর চেষ্টা করতে হবে। ফলে ফুসফুসের মধ্যঞ্চল প্রসারণের সুযোগ পাবে। এর ফলে, ফুসফুস ও হৃদপিন্ডের ব্যায়াম সম্পন্ন হবে। 
২. তৃতীয় পর্যায়ে এসে বুকের উপরিভাগ প্রসারণের চেষ্ট করতে হবে। ফলে ফুসফুসের উপরিভাগ প্রসারিত হবে।

প্রথম প্রথম এই তিনটি পর্যায় করাটা অসুবিধা মনে হতে পারে। তাই পৃথক পৃথকভাবে অনুশীলন দ্বারা অভ্যস্থ হতে হবে। প্রাথমিক অসুবিধা দূর হলে, আপনি একই সাথে পর্যায়ক্রমে এই প্রাণায়ামটি করবেন। এক্ষত্রে প্রথমে পেট প্রসারিত করে ধীরে বাতাস  গ্রহণ করতে শুরু করুন। পেট ফুলে উঠলে, মধ্য বুক ফুলানোর চেষ্টা করবেন। সবশেষে, বুকের উপরিভাগ ফুলানোর চেষ্টা করুন। সব মিলিয়ে আপনি ফুলানো বেলুনের মতো বাতাসে পূর্ণ হয়ে ১০ সেকেন্ড শ্বাস বন্ধ করে, ধীরে ধীরে বাতাস ত্যাগ করুন। 
 
উপকারিতা
১. শ্বাস ক্রিয়ার দ্বারা রক্তের কার্বন-ডাইঅক্সাইডের পরিমাণ কমে এবং অক্সিজেন গ্রহণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
২. ফুসফুস এবং এর সংলগ্ন অংশের ব্যায়াম হয়।
৩. কণ্ঠ সঙ্গীত শিক্পীদের যাঁরা দম সমস্যায় ভুগছেন, তাঁরা এই প্রাণায়াম করতে পারেন। 


সূত্র :
যোগাসনে রোগ আরোগ্য
। ডঃ রমেন মজুমদার
রোগারোগ্যে যোগব্যায়াম। কানাইলাল সাহা
যোগ সন্দর্শন। ডাঃ দিব্যসুন্দর দাস
যোগ ব্যায়াম। সবিতা মল্লিক