লাইসোজোম
Lysosome

কোষের সাইটোপ্লাজমে বিদ্যমান পর্দা দ্বারা আবৃত অতিক্ষুদ্র, গোলাকার, এবং কোষীয় পরিপাকে অংশগ্রহণকারী অঙ্গানুসমূহ। lyso=হজমকারী এবং somo=বস্তু। এই বিচারে এর অর্থ দাঁড়ায় হজমকারী-বস্তু। ১৯৫৫ খ্রিষ্টাব্দে বিজ্ঞানী দ্য দুভে (de Duve) এর নামকরণ করেন।

এই অঙ্গাণু পাওয়া   প্রাণীদেহে। বিশেষ করে ক্ষরণকারী কোষ ও শ্বেত-কণিকায় বেশি পাওয়া যায়। প্লাজমাপর্দা অথবা গোল্‌গি বস্তু থেকে এর উৎপত্তি।

এর মধ্যে নানা ধরণের পাচনকারী এনজাইম পূর্ণ তরল থাকে। পিনোসাইটোসিস ও ফ্যাগাসাইটোসিস প্রক্রিয়ায় কোষে প্রবেশ করে এমন জীবাণু বা খাদ্য উপাদানকে আত্মীকরণ করে বিভিন্ন এনজাইমের সাহায্যে বিগলিত করে এবং কোষকে জীবাণুমুক্ত করে। এক্ষেত্রে লাইসোজোম কোষের পাকস্থলী হিসেবে কাজ করে থাকে। 
 অনেক সময় কোষের খাদ্যাভাব দেখা দিলে, কোষ ক্ষতিগ্রস্থ হলে, লাইবোজোমের প্রাচীর ফেটে যায় এবং আবদ্ধকৃত এনজাইম বের হয়ে কোষের অন্যান্য ক্ষুদ্রাঙ্গকে বিনষ্ট করে দেয়।  একে  বলা হয় অটোফ্যাগি
(auto-phagy)

আবার কোষ প্রতিকূল অবস্থায় পতিত হলে লাইবোজোম সম্পূর্ণ কোষকে ধ্বংস করে দেয়,একে অটোলাইসিস (autolysis) বলা হয়। দেহের রূপান্তরে পর্যায়ে এদের ধ্বাংসাত্মক কার্যক্রম বিশেষভাবে কার্যকর হয়ে উঠে। যেমন- ব্যাঙাচির লেজের অবলুপ্তির সময় এদের সক্রিয়তা প্রবলভাবে থাকে। এসকল কারণে লাইসোজোমকে অনেক সময় কোষের 'সুইসাইডাল স্কোয়াড' বলা হয়।

লাইসোজোম কেরাটিন সৃষ্টিতে সাহায্য করে। প্রজননের ক্ষেত্রে শুক্রাণু থেকে লাইসোজোম থেকে  হায়ালিউরোলিডেজ নামক এনজাইমের ক্ষরণ হয়। এর ফলে  ডিম্বাণুর আবরণের অংশবিশেষ বিগলিত হয়। ফলে ডিম্বাণুর ভেতর শুক্রাণুর প্রবেশ সহজতর হয়ে উঠে।