ক্রোমিয়াম
গ্রিক
chrōma" (χρώμα), এর রঙ>ইংরেজি : chromium

প্রতীক : Cr
পারমাণবিক সংখ্যা : ২৪
কক্ষ বিন্যাস : ২,৮,১৩,১
পারমাণবিক ওজন : ৫১,৯৯৬১
পর্যায় সারণী : ৬, ৪,
D
রঙ : নীলাভ সাদা
গলনাঙ্ক : ১৯০৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস
স্ফুটনাঙ্ক : ২৬৭১ ডিগ্রি সেলসিয়াস

এটি রাসায়নিক মৌলিক পদার্থ। এটি শক্ত এবং ভঙ্গুর ধাতু। প্রকৃতিতে চারটি সমাণুক রয়েছে। সমাণুকগুলো ৫০Cr , ৫২Cr , ৫৩Cr  এবং ৫৪Cr । তেজ রাসায়নিক বিক্রিয়ার দ্বারা একটি ৫১Cr সমাণুক তৈরি করা হয়। এই সমাণুক মৃদু গামা রশ্মি বিকিরণ করে। এবং এর অর্ধজীবন ২৭ দিন।

ক্রোমোয়ামের আবিষ্কার এবং ক্রোকোয়াইট
প্রায় ২০০০ বৎসর আগে চীনের কিন রাজবংশের আমলে চীনা অস্ত্র নির্মাতারা ক্রোমোয়াম অক্সাইড ব্যবহার করতো। কিন্তু তখন তারা জানরো না যে এতে ক্রোমোয়াম আছে। মূলত ক্রোমিয়াম আবিষ্কারের ধারাটির সূত্রপাত হয়েছিল রাশিয়াতে। আর এই আবিষ্কারের মূলে ছিল ক্রোকোয়াইট (
crocoite) নামক একটি আকরিক।

ক্রোকোয়াইট (crocoite) এর বিজ্ঞানসম্মত নাম হলো- লেড ক্রোমেট (PbCrO4)। এটি এক ধরনের একক স্ফটিকাকার (mono crystalline) পদ্ধতি পদার্থ। [দেখুন : স্ফটিক]। এই আকরিকের রঙ কমলা, লাল বা হলুদ বর্ণের দেখা যায়।  ক্রোকায়াইট মূলত ব্যবহৃত হতো হলুদ রঙের উপাদান হিসাবে।

১৭৬৬ খ্রিষ্টাব্দে উরাল পার্বত্য এলাকার একাটেরিনবার্গ কাছে বেরেযোভোস্কি খনিজ এলাকা থেকে। এই বৎসরেই জার্মান বিজ্ঞানী আই ল্যাহম্যান সেন্টা পিটার্সবার্গে থাকাকালীন সময়ে এই আকরিকটিকে সালফিউরিক এ্যাসিড দ্বারা বিশ্লেষণ করেন এবং পান্নার রঙের মতো একটি রঙিন দ্রবণ পান। তিনি ভেবেছিলেন সীসা মিশ্রিত থাকার কারণে এমন রঙ পাওয়া গেছে। ১৭৭০ খ্রিষ্টাব্দে পিটার্সবার্গের শিক্ষার্থী পি.এস. পাল্লাস দ্বিতীয়বারের মতো এই আকরিক নিয়ে গবেষণা করেন। তিন তাঁর পর্যবেক্ষণ থেকে এর কিছু ভৌত গুণাগুণ ব্যাখ্যা করেন। মূলত ইনি ছিলেন ভূপর্যটক। তাই তিনি এর রাসায়নিক বিশ্লেষণ করতে সমর্থ হন নি। এই কারণে তিনি পশ্চিম ইউরোপে রাসায়নিক পরীক্ষার জন্য নিয়ে আসেন। কিন্তু ইউরোপের অনেক গবেষক গবেষণা করেও এই আকরিকের যথার্থ বিশ্লেষণ করতে সক্ষম হন নি। ১৭৯৭ খ্রিষ্টাব্দে এই ফরাসি রসায়নবিদ লুইস নিকোলাস ভায়ুকুইলিন (Louis Nicolas Vauquelin) এই আকরিক পরীক্ষা করেন এবং একটি নতুন মৌলিক পদার্থ প্রাপ্তির ঘোষণা দেন।

লৌহ, টাইটেনিয়াম এবং ক্রোমিয়াম যুক্ত এ্যালুমিনিয়াম অক্সাইড
(Al2O3) মিলে তৈরি হয় কোরান্ডাম নামক স্বচ্ছ রত্ন।


সূত্র :
রাসায়নিক মৌল। দ,ন, ত্রিফোনভ, ভ.দ. ত্রিফোনভ। মির প্রকাশন, ১৯৮৮।
বাংলা একাডেমী বিজ্ঞান বিশ্বকোষ। আষাঢ় ১৪০৫/জুন ১৯৯৮।