আব্দুস সামাদ আজাদ
(১৯২২-২০০৫ খ্রিষ্টাব্দ)
মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, রাজনীতিবিদ।
১৯২৬ সালের ১৫ জানুয়ারি
সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর থানার বুড়াখালি গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তার
পিতার নাম মো. শফিকতউল্লাহ৷ সামাদ আজাদ শরিয়ত উলাহর ৫ম পুত্র।
গ্রামের বিদ্যালয়ে ও পরে দিরাই উপজেলার জগদল ভাটিরগাঁও বিদ্যালয়ে প্রাথমিক শিক্ষা
শেষ করেন। এই সময় তিনি ছাত্ররাজনীতিতে আসেন।
১৯৪৩ খ্রিষ্টাব্দে তিনি সুনামগঞ্জ সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মেট্রিক
পাশ করেন। এই সময় তিনি ছাত্ররাজনীতির সাথে জড়িয়ে পড়েন এবং
১৯৪৪ খ্রিষ্টাব্দে তিনি সিলেট জেলা মুসলিম ছাত্র
ফেডারেশনের সভাপতি ছিলেন। ১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত তিনি এই পদে
ছিলেন।
১৯৪৬ খ্রিষ্টাব্দে একই সংগঠনের অবিভক্ত আসামের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দে সিলেট মুরারী চাঁদ কলেজ থেকে
স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।
১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দে
ভাষা-আন্দোলনের সময় সক্রিয়ভাবে অংশ গ্রহণ করতে গিয়ে কারাবরণ করেন।
১৯৫৩ খ্রিষ্টাব্দে তিনি পূর্ব পাকিস্তান যুবলীগের
ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ছিলেন।
১৯৫৪ খ্রিষ্টাব্দে যুক্তফ্রন্টের মনোনীত প্রার্থী হিসাবে তৎকালীন প্রাদেশিক পরিষদের
সদস্য নির্বাচিত হন।
১৯৫৫-৫৭ খ্রিষ্টাব্দে
আওয়ামী লীগের
শ্রম বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।
১৯৫৬ খ্রিষ্টাব্দে সমগ্র পূর্ব পাকিস্তান ধর্মঘটে নেতৃত্ব দেয়ায় পাক সাময়িক সরকার পুনরায় তাকে আটক করে কারাগারে পাঠায়।
১৯৫৮ খ্রিষ্টাব্দে
আয়ুব খানের সামরিক শাসন জারির পর,
আইয়ুব-বিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। এই সময় তিনি
সর্বদলীয় রাজনৈতিক জোট এনডিএফ-এর দফতর সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।
এই কারণে তিনি আবার গ্রেফতার হন। এবং ৪ বছর কারাভোগ করে ১৯৬২
খ্রিষ্টাব্দে মুক্তিলাভ করেন।
১৯৬৪ খ্রিষ্টাব্দে পাকিস্তান সরকার কর্তৃক সৃষ্টষড়যন্ত্রমূলক সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সাহসিকতার সাথে মোকাবিলা করতে গিয়ে কারারুদ্ধ
হন।
১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দে তিনি তৎকালীন পাকিস্তানের গণপরিষদের সদস্যনির্বাচিত হন ।
১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তিনি মুজিবনগরে অস্থায়ী সরকারের
রাজনৈতিক উপদেষ্টা এবং ভ্রাম্যমান দূত ছিলেন।
১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ডিসেম্বর মাসে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
দায়িত্ব পান।
১৯৭৩ খ্রিষ্টাব্দের সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ
আওয়ামী লীগের
মনোনয়নে তিনি দুটি আসনে নির্বাচন করে সংসদ সদস্য
নির্বাচিত হন।
১৯৯০ খ্রিষ্টাব্দের গণঅভ্যুত্থান
সক্রিয় ছিলেন।
১৯৯৬ খ্রিষ্টাব্দে জনতার মঞ্চের অন্যতম রূপকার ছিলেন তিনি।
১৯৯১ খ্রিষ্টাব্দের নির্বাচনে সুনামগঞ্জ-৩ আসন থেকে নির্বাচিত হয়ে জাতীয় সংসদে বিরোধী দলীয়য়
উপনেতার দায়িত্বপালন করেন।
১৯৯৬ খ্রিষ্টাব্দের সংসদ নির্বাচনে একই আসন থেকে সাংসদ
নির্বাচিত হয়ে
আওয়ামী লীগ সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পুনরায় পান।
২০০১ খ্রিষ্টাব্দের অক্টোবরে অনুষ্ঠিত অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একই দলের মনোনয়নে সংসদ সদস্য
নির্বাচিত হন। চারদলীয় জোট সরকারের আমলে তিনি প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হিসাবে দায়িত্বপালন করেন।
মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি এই দায়িত্বে ছিলেন।
২০০৫ খ্রিষ্টাব্দের ২৭ এপ্রিল ঢাকায় তার মৃত্যুবরণ করেন।