বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ
প্রাক্তন পাকিস্তানের
পূর্বাঞ্চল তথা পূর্ব পাকিস্তান থেকে স্বাধীন বাংলাদেশের উদ্ভবের জন্য সশস্ত্র
যুদ্ধ হলো- বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ। আনুষ্ঠানিকভাবে এই যুদ্ধের সূচনা হয়েছিল
১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ২৫ মার্চ দিবাগত রাত ১২টার পর থেকে। আন্তর্জাতিক পঞ্জিকা
অনুসারে এই সময়টা ধরা হয়, ২৬শে মার্চ। এই বছরের ১৬ই ডিসেম্বরে ভারত ও বাংলাদেশের
যৌথ বাহিনীর কাছে পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণ করে। এর ভিতর দিয়ে বাংলাদেশের
স্বাধীনতা যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে।
বাংলাদেশের ইতিহাসে ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দকে স্বাধীনতা যুদ্ধের বছর হিসেবে বিবেচনা করা
হয়। এর ভিতরে ২৬শে মার্চকে পালন করা হয় 'স্বাধীনতা দিবস' আর ১৬ই ডিসেম্বরকে পালন
করা হয় 'বিজয় দিবস' হিসেবে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়কে প্রায় নয় মাস ধরা হয়। সশস্ত্র যুদ্ধের মাধ্যমে
একটি স্বাধীন দেশের সৃষ্টি- এটি নিঃসন্দেহে একটি বিরল ঘটনা। আবার এই সময়ের ভিতরে
প্রায় ৩০ লক্ষ মানুষের জীবন হানি, ততোধিক মানুষের আহত হওয়া, প্রায় ২ লক্ষ নারীর
ধর্ষিত হওয়া, বিপুল পরিমাণ ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, কলকারখানা ধ্বংস হয়ে যাওয়াটা কম
বিস্ময়কর নয়। এই বিপুল পরিমাণ হত্যা, ধর্ষণ এবং সম্পদ ধ্বংসের কারণ ছিল-
পাকিস্তানি বাহিনীর সাধারণ মানুষ ও তাদের ঘরবাড়ির উপর আক্রমণ। এই কারণে
পাকিস্তানিরা এই যুদ্ধের বীরত্ব বলতে ছিল- নিরীহ মানুষের উপর আক্রমণ। যেদিন থেকে
মুক্তিবাহিনী প্রতি-আক্রমণ করা শুরু করলো, তখন থেকে তারা ক্রমে সকল বীরত্ব এবং
ঐতিহ্য হারাতে হারতে আত্মসমর্পণের দ্বার প্রান্তে এসে উপস্থিত হয়েছিল। ডিসেম্বর
মাসে ভারত-বাংলাদেশের যৌথবাহিনী পাকিস্তানি বাহিনীর সেই পরাজয়কে দ্রুত করেছিল
মাত্র। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের
কথা শুরু করলে, এর পিছনের দীর্ঘ ইতিহাস জানাটা প্রয়োজন। একই সাথে যুদ্ধকালীন সময়ের
ঘটনা, এর সাথে যুক্ত ব্যক্তি, অন্য রাষ্ট্রসমূহের ভূমিকা, যুদ্ধে ব্যবহৃত
অস্ত্রশস্ত্র ইত্যাদি নানা বিষয় আপনা-আপনি চলে আসে। তাই স্বাধীনতা আন্দোলনের সাথে
সম্পর্কিত বিষয়সমূহকে কয়েকটি অধ্যায়কে সাজানো হয়েছে। এই অধ্যায়গুলোকে গ্রথিত করা
হয়েছে ১৯৭১ এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের কালপঞ্জীতে। এর সহায়ক তথ্য হিসেবে
যুক্ত করা হয়েছে অন্যান্য বিষয়, সেগুলোকে সাজানো হয়েছে বিষয়ভিত্তিক সহায়ক পাঠ
হিসেবে। সব মিলিয়ে যে বিষয়সূচি তৈরি হয়েছে, তাহলো-