বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ
১৬-২০ মার্চ, ১৯৭১
পূরব-পাঠ:
৮-১৫ মার্চ
বঙ্গবন্ধুর সাথে
ইয়াহিয়া খান আড়াই ঘণ্টা বৈঠক হয়। কিন্তু আলোচনা ফলপ্রসূ হয় নি। এই দিন
চট্টগ্রাম বন্দরের শ্রমিক-কর্মচারীরা চীন থেকে আমদানি করা সমরাস্ত্রবাহী
জাহাজের মাল খালাসে অস্বীকৃতি জানায়। স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ এক
বিবৃতিতে পূর্ব পাকিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার দাবি করে।
মুজিব-ইয়াহিয়া বৈঠক দ্বিতীয় দফায় চলে। বেসামরিক প্রশাসনকে সাহায্য করার
জন্য কোন অবস্থার প্রেক্ষিতে ২ মার্চ থেকে ৯ মার্চ পর্যন্ত সামরিক বাহিনী তলব
করা হয়েছিল, সে সম্পর্কে তদন্ত করার জন্য সামরিক কর্তৃপক্ষের কমিশন নিয়োগ করা
হয়।
এক অনিশ্চিত অবস্থার ভিতর দিয়ে দেশ চলতে থাকে। সারা দেশে কমবেশি প্রতিবাদী সভা,
মিছিলে গণবিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। অসহযোগিতা আন্দোলনের সূত্রে দেশের সকল স্কুল-কলেজ
বন্ধ থাকলেও পথে মিছিল করে এবং বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।
এই
গাজীপুরে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল। জয়দেবপুরের
সংগ্রামী জনতা পাক-হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরোধ শুরু করেছিল।
[দেখুন: ১৯ মার্চ]
এই দিনে জয়দেবপুরে (গাজীপুর) ভাওয়াল রাজবাড়িতে তৎকালীন সেনানিবাসে দ্বিতীয়
বেঙ্গল রেজিমেন্টকে নিরস্ত্র করার উদ্দেশ্যে ব্রিগেড কমান্ডার জাহানজেবের
নেতৃত্বে পাঞ্জাব রেজিমেন্টের একদল সেনা জয়দেবপুর সেনানিবাসে যাওয়ার উদ্যোগ
নেয়। এ খবরে ছড়িয়ে পড়লে, জয়দেবপুরের সর্বস্তরের মানুষ বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। তারা
রাস্তার বিভিন্ন স্থানে ব্যারিকেড দেয়। তখন জয়দেবপুর সেনানিবাসের বাঙালি
অধিনায়ক ছিলেন মেজর কে এম সফিউল্লাহ। গাজীপুরের রাজনৈতিক নেতা (সাবেক মন্ত্রী)
মরহুম শামসুল হক পাকিস্তানি বাহিনীকে প্রতিরোধ করার লক্ষ্যে বিশেষ ভূমিকা পালন
করেন। মূলত পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে স্বাধীনতাকামী জনতা এবং বাঙালি
সৈন্যদের প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ।
সূত্র: