আল্ শামস্

১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়, পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর সহযোগী একটি গুপ্ত বাহিনী। পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর সহয়তাকারী অপর দুটি বাহিনী রাজাকার এবং আলবদর সম্পর্কে যতটা জানা যায়, আল্ শামস সম্পর্কে ততটা বিস্তারিত জানা যায় না। কারণ, রাজাকার বাহিনী পাকিস্তানী বাহিনীর সাথে থাকতো, বিভিন্ন ব্রিজ, কালভার্ট, বিদ্যুৎকেন্দ্র ইত্যাদি স্থানের পাহাড়ার থাকতো। এছাড়া মুক্তুবাহিনীর সাথে রাজাকারদের অসংখ্যবার যুদ্ধ হয়েছে। এই কারণে রাজাকার বাহিনীকে সে সময়ের সবাই চাক্ষুষভাবে উপলব্ধি করেছে। অন্যদিকে আল্ বদর বাহিনীর সৃষ্টির পর জামায়েত নেতারা সগৌরবে তাদের কার্যকলাপের বর্ণনা দিয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা ও ক্যাম্পাসের অন্যান্য মাঠে এবং মোহাম্মদপুর ফিজিক্যাল ট্রেনিং কলেজে রাজাকার-আলবদরদের নিয়মিত প্রশিক্ষণ দেয়া হতো। এবং ১৪ ডিসেম্বরের বুদ্ধিজীবী হত্যা এদের দ্বারা সংঘঠিত হয়েছিল। এই কারণে এই দলটিও বহুল আলোচিত। এই বিচারে আল্ শামস্ সম্পর্কে তেমন বিস্তারিতভাবে আলোচনা হয় নি।

পূর্ব পাকিস্তানে সামরিক হাই কমান্ডের জেনারেল আমির আব্দুল্লাহ খান নিয়াজির নির্দেশে এবং পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর নিবিড় তত্ত্বাবধানে অত্যন্ত গোপনীয়ভাবে এই বাহিনী তৈরি করা হয়েছিল। এই বাহিনী সাধারণ মানুষের ভিতরে মিশে গিয়ে গোয়েন্দার কাজ করতো। ধারণা করা হয়, এই দলের দেওয়া তথ্যানুসারে আলবদর বাহিনী বুদ্ধিজীবী হত্যার নীল-নকশা প্রণয়ন করেছিল। পাকিস্তানি বাহিনী এই দলের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের মনোভাব সম্পর্কে ধারণ গ্রহণ করতো।

আরবি আল শামশ্ (الشمس)  শব্দের অর্থ সূর্য। এই নাম থকে এই বাইনীর নামকরণ করা হয়েছিল। অপর দুটি বাহিনী রাজাকার এবং আলবদর  বাহিনীর মতোই এই বাইনীর সদস্য ছিল জামায়েত ই-ইসলামী  সমর্থকদের নিয়ে।