জেনারেল আব্দুল হামিদ খান
(১৯১৭- ? খ্রিষ্টাব্দ)
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একজন সেনাপতি।

১৯১৭ খ্রিষ্টাব্দের ২৯ শে এপ্রিল জন্মগ্রহণ করেন।

ব্রিটিশ ভারতীয় সেনাবাহিনী ভর্তি হন। এই সূত্রে তিনি দেহরাদুন ইন্ডিয়ান মিলিটারি একাডেমীতে সামরিক শিক্ষা গ্রহণ  করেন। এরপর ১৯৩৯ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ই জুলাই ব্রিটিশ ভারতীয় সেনাবাহিনীর সমারসেট লাইট ইনফ্যান্ট্রি রেজিমেন্টে অস্থায়ীভাবে কমিশনপ্রাপ্ত হন। ১১ আগস্ট তারিখ থেকে তিনি অস্থায়ী কমিশন হিসেবে তাঁর কাজ শুরু করেন এবং ২৮ আগষ্টে স্থায়ী কমিশন দেওয়া হয়।

১৯৪০ খ্রিষ্টাব্দের ২৮ নভেম্বর তিনি লেফটেন্যান্ট পদে উন্নীত হয় এবং পরের মাসের ২৩ তারিখে তিনি অস্থায়ী ক্যাপ্টেন পদবীতে পদোন্নতি পান। এরপর তাঁকে ১০ম বেলুচ রেজিমেন্টে নিয়োগ দেওয়া হয়।

১৯৪২ খ্রিষ্টাব্দের অক্টোবরে, তিনি ওটির ৩য় ব্যাটেলিয়নে নিয়োগ পেয়েছিলেন।

১৯৪৪ খ্রিষ্টাব্দের ফেব্রুয়ারি মাসের ৩ তারিখ, তাঁকে স্থায়ী ক্যাপ্টেন এবং অস্থায়ী মেজর পদোন্নতি দেওয়া হয়।

১৯৪৫ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ই আগস্ট থেকে ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত তিনি ভারপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল হিসেবে ছিলেন। তিনি এরই মধ্যে স্টাফ কলেজ কোর্স সম্পন্ন করেন।

১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দের ১৪ই আগস্ট পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবসে তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেন। এই সময় তিনি স্থায়ী লেফটেন্যান্ট কর্নেল হিসেবে বেলুচ রেজিমেন্টের ষষ্ঠ ব্যাটেলিয়নের অধিনায়ক হিসেবে নিয়োগ পান এবং ১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দের এপ্রিল থেকে নভেম্বর পর্যন্ত এ পদে বহাল থাকেন। তারপর তাকে বেলুচ রেজিমেন্টের ৩য় ব্যাটেলিয়নের অধিনায়ক হিসেবে বদলী করা হয়। এখানে তিনি ১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দের নভেম্বর মাস থেকে ১৯৪৯ খ্রিষ্টাব্দের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন।

১৯৬৫ খ্রিষ্টাব্দের পাক-ভারত যুদ্ধের সময় তিনি মেজর-জেনারেল পদ লাভ করেন। এই সময় ১১তম পদাতিক ডিভিশনের অধিনায়ক ছিলেন। এই ডিভিশনটি তখন কসুর নামক এলাকায়। এই সময় তিনি জেনারেল সরফরাজের নেতৃত্বাধীন ১০ম পদাতিক ডিভিশন যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিল। এই যুদ্ধে ভারতের পাঞ্জাবে বড় ধরণের সামরিক অভিযান করে, ভারতীয় সেনাবাহিনীর ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি চালিয়েছিলেন।

১৯৬৫ খ্রিষ্টাব্দের যুদ্ধের পরে তিনি লেঃ জেনারেল পদে পদোন্নতি পান। এই সময় তিনি খরিয়াতে ১ কোরের অধিনায়ক নিযুক্ত হন।

১৯৬৯ খ্রিষ্টাব্দের ২৫শে মার্চ জেনারেল ইয়াহিয়া মার্শাল ল জারি করেন। এই সময় তিনি পূর্ণ জেনারেল পদে পদোন্নতি পান। পরে তাঁকে সেনাবাহিনী প্রধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এই সময় তিনি উপ প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক হিসেবে কাজ করেন। উল্লেখ্য জেনারেল হামিদ ঐ বছরে পাকিস্তান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্বে কয়েক মাস ছিলেন।

১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তিনি- পাকিস্তানি সেনাবাহিনী চিপ অব স্টাফ ছিলেন।
২০শে মার্চে জেনারেল আব্দুল হামিদ খানএবং লে জেনারেল টিক্কা খান ঢাকাস্থ স্টাফ অফিসে অপারেশন সার্চ লাইট-এর পরিচালনার বিষয়ে গভীরভাবে পর্যালোচনা করেন। প্রাথমিকভাবে আব্দুল হামিদ খান অপারেশন সার্চ লাইট-এর পরে তিনি ৩০শে এপ্রিল ঢাকা থেকে উত্তরাঞ্চলে সৈন্য বাহিনীর সাথে কর্মব্যস্ত দিন যাপন করেন। এই সময় পূর্বাঞ্চলের কমান্ডার ও জিওসি তাঁর সাথে ছিলেন। এই সময় তিনি হেলিকপ্টারের সাহায্যে বিভিন্ন স্থানে ঘুরে দেখেন। এই ফর কালে তিনি নাটোর, রাজশাহী, ঠাকুরগাঁ ও রংপুরে অবতরণ করেন। ২রা মে তিনি বিমানে সিলেট যান এবং একই ভাবে সামরিক বাহিনীর সদস্যের সাথে কথা বলেন।