ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত
(১৮১২-১৮৫৯ খ্রিষ্টাব্দ)
বাঙালি কবি ও পত্রিকা সম্পাদক।
সাধারণভাবে পরিচিতি ছিলেন গুপ্ত কবি নামে। ছদ্মনাম 'ভ্রমণকারী বন্ধু'।

১৮১২ খ্রিষ্টাব্দে চব্বিশপরগণা জেলার কাঞ্চনপল্লী বা কাঞ্চনপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা হরিনারয়ণ দাশগুপ্ত ছিলেন আয়ুর্বেদিক কবিরাজ। মায়ের নাম শ্রীমতি দেবী।

তাঁর নয় বৎসর বয়সে মাতৃবিয়োগ হয়। এরপর তিনি কোলকাতার জোড়াসাঁকোতে তাঁর মামার বাড়িতে প্রতিপালিত হন। মাত্র ১৫ বৎসর বয়সে তিনি গৌরহরি মল্লিকের কন্যা রেবা মল্লিককে বিয়ে করেন।

১৮২৯ খ্রিষ্টাব্দ থেকে তিনি নানাধরনের সামাজিক আন্দোলনের সাথে যুক্ত হন।
১৮৩১ খ্রিষ্টাব্দের ২৮শে জানুয়ারি, যোগেন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাথে তিনি 'সংবাদ প্রভাকর' নামক একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা প্রকাশ শুরু করেন। এই পত্রিকার সম্পাদকও ছিলেন তিনি।
১৮৩২ খ্রিষ্টাব্দে তিনি  সংবাদ রত্নাবলী প্রকাশিত হয়। এই পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে নাম পাওয়া যায়- মহেশচন্দ্র পাল। প্রকৃতপক্ষে পত্রিকাটির সম্পাদক ছিলেন ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত।

১৮৩৬ খ্রিষ্টাব্দের ১৪ই জুন থেকে তাঁর উদ্যোগে 'সংবাদ প্রভাকর' দৈনিক পত্রিকা হিসেবে প্রকাশিত হওয়া শুরু করে।
১৮৪৬ খ্রিষ্টাব্দে তিনি সাপ্তাহিক পাষণ্ড পত্রিকার সঙ্গে সম্পাদনা করা শুরু করেন। উল্লেখ্য গৌরীশঙ্কর ভট্টাচার্যের সাথে 'রসরাজ' পত্রিকার কবিতাযুদ্ধ চালাবার জন্য এই পত্রিকা প্রকাশ করেন।
১৮৪৭ খ্রিষ্টাব্দে 'সংবাদ সাধুরঞ্জন' পত্রিকার দায়িত্বভার পালন করেন।
১৮৫৯ খ্রিষ্টাব্দের ২৩শে জানুয়ারি তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

তিনি গ্রাম গ্রামে ঘুরে বেড়াতেন এবং
কবিগান বাঁধতেন। এছাড়া তিনি প্রায় বারো বৎসর গ্রামে-গঞ্জে ঘুরে ঘুরে প্রাচীন কবিদের তথ্য সংগ্রহ করে জীবনী রচনা করেছেন। রামপ্রসাদ সেন, রামনিধিগুপ্ত, রামমোহন বসু, নিত্যানন্দ দাস বৈরাগী, হরঠাকুর, নৃসিংহ, লক্ষ্মীকান্ত বিশ্বাস প্রমুখের জীবনী ও রচনা সংগ্রহ ও প্রকাশ করেছিলেন। তত্ত্ববোধিনী সভা এবং হিন্দু থিয়ফিলানথ্রপিক সভার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। দুর্গাদাস লাহিড়ি সম্পাদিত 'বাঙালির গান' গ্রন্থে এঁর ১৮টি গান পাওয়া যায়।


সূত্র :
বিদ্যাসাগর রচনাবলী। তুলি কলম। জুন, ১৯৮৭ । জৈষ্ঠ্য ১৩৯৪।