১৯০৯ খ্রিষ্টাব্দে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ভারতীয় কাউন্সিল অ্যাক্ট পাশ হয়। এ আইনের
মাধ্যমে ভাইসরয়ের এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলকে ইম্পেরিয়েল লেজিসলেটিভ কাউন্সিলে
রূপান্তরিত করা হয় এবং এতে নতুন ৩৫ জন মনোনীত সদস্য এবং ২৫ জন নির্বাচিত সদস্য
অন্তর্ভুক্ত করে এর কলেবর বৃদ্ধি করা হয়। এতে মুসলমানদের এবং জমিদারশ্রেণীর জন্য
বিশেষ প্রতিনিধিত্বের ব্যবস্থা রাখা হয়। জিন্নাহ বোম্বাইয়ের একটি নির্বাচনী এলাকা
থেকে কাউন্সিলের সদস্য নির্বাচিত হন।
১৯১১ খ্রিষ্টাব্দে ব্রিটিশ ভারতীয় আইনের অধীনে মুসলিম ধর্মীয় আইন হিসেবে ওয়াকফ
আইনের প্রণয়নেও তিনি বিশেষ সহযোগিতা করেন। এই বছরেই
বঙ্গভঙ্গ আইন বাতিল হয় এবং জিন্নাহর সাথে মুসলীম লীগের সংযোগ ঘটে।
১৯১২ খ্রিষ্টাব্দে ডিসেম্বরে জিন্নাহ মুসলিম লীগের বার্ষিক অধিবেশনে ভাষণ দেন। তবে
এসময় তিনি লীগের সদস্য ছিলেন না।
১৯১৩ খ্রিষ্টাব্দে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে মুসলিম লীগে যোগ দেন। তবে একই সাথে তিনি কংগ্রেসের সদস্য
ছিলেন। এই বছরেই ইম্পেরিয়াল লেজিসলেটিভ কাউন্সিলের কর্মকর্তা বহির্ভূতরা ভোটদানের
অধিকার পায়।
এই সময় দেরাদুনে অবস্থিত ভারতীয় সামরিক একাডেমি প্রতিষ্ঠার জন্য গঠিত কমিটিতে তাকে
নিয়োগ করা হয়েছিল। এই বছরের এপ্রিল মাসে কংগ্রেসের প্রতিনিধি হয়ে গোপালকৃষ্ণ
গোখলের সাথে জিন্নাহ ব্রিটেন যান।
১৯১৪ খ্রিষ্টাব্দে লন্ডনে কংগ্রেস প্রতিনিধি দলে জিন্নাহ নেতৃত্ব দেন। এই সময় প্রথম
বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে- ব্রিটিশ কর্মকর্তারা ভারতের সংস্কারের বিষয়ক আলোচনা স্থগিত
করে দেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় জিন্নাহ অন্যান্য ভারতীয় মধ্যপন্থীদের সাথে
ব্রিটিশ পক্ষ সমর্থন করেন। এঁরা সবাই আশা করেছিলেন যুদ্ধকালীন সময়ে আনুগত্যের
কারণে ব্রিটিশরা ভারতীয়দের রাজনৈতিক স্বাধীনতা প্রদান করবে।
১৯১৫ খ্রিষ্টাব্দের ডিসেম্বর মাসে বোম্বাই শহরে কংগ্রেস তাদের বার্ষিক অধিবেশন
অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নেয়। বোম্বাইর মুসলিম নেতাদের সম্মতি নিয়ে জিন্নাহ একটি
পত্রের মাধ্যমে মুসলিম লীগ নেতৃবৃন্দকে কংগ্রেসের সঙ্গে একই স্থানে এবং একই সময়ে
সর্বভারতীয় মুসলিম লীগকে তার বার্ষিক অধিবেশন অনুষ্ঠানের আহ্বান জানান। কিন্তু
কংগ্রেস ও মুসলিম লীগের উগ্রপন্থীরা এর তীব্র বিরোধিতা করে।
১৯১৬ খ্রিষ্টাব্দে মুসলিম লীগের প্রেসিডেন্ট থাকাবস্থায় দুই দলের মধ্যে লখনৌ
চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এতে বিভিন্ন প্রদেশে মুসলিম ও হিন্দু প্রতিনিধিদের কোটা
নির্ধারিত হয়। চুক্তিটি সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়ন করা না গেলেও তা কংগ্রেস ও মুসলিম
লীগের মধ্যে সহযোগিতার পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছিল। এই সময় তিনি এনি বেসান্ট, তিলকসহ
অন্যান্য নেতাদের সাথে ভারতের জন্য স্বায়ত্তশাসনের দাবি জানান। এতে কানাডা,
নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার মত ডমিনিয়ন হিসেবে স্বায়ত্তশাসন দাবি করা হয়। তবে
যুদ্ধচলাকালীন সময়ে ব্রিটিশ রাজনীতিবিদরা ভারতের সাংবিধানিক সংস্কারে উৎসাহী ছিলেন
না।
১৯১৭ খ্রিষ্টাব্দে নওরোজি লন্ডনে মৃত্যুবরণ করেন। এরপ ফলে কংগ্রেসের মধ্যপন্থী দল
দুর্বল হয়ে পড়ে। এরপরও জিন্নাহ কংগ্রেস ও মুসলিম লীগকে কাছাকাছি আনার চেষ্টা
করে যান।
মরিয়ম জিন্নাহ |
১৯১৮ খ্রিষ্টাব্দে জিন্নাহ তাঁর পারসি পরিবরারের বন্ধু স্যার দিনশা পেটিটের মেয়ে
রতনবাই পেটিটকে বিয়ে করেন। এই বিয়ে নিয়ে রতনবাইয়ের পরিবার ও পারসি সম্প্রদায়
এবং মুসলিম ধর্মীয় নেতাদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। শেষ পর্যন্ত রতনবাই পরিবারের
অমতে ইসলাম গ্রহণ করেন। এরপর তার নাম হয় মরিয়ম জিন্নাহ। এঁদের তাদের একমাত্র
সন্তান দিনা জিন্নাহ ১৯১৯ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ আগস্ট জন্মগ্রহণ করেন।
১৯১৯ খ্রিষ্টাব্দে ব্রিটিশ ও ভারতীয়দের মধ্যে সম্পর্ক উত্তপ্ত হয়ে উঠে। এই সময়
ইম্পেরিয়াল লেজিসলেটিভ কাউন্সিল নাগরিক অধিকারের উপর যুদ্ধকালীন জরুরি
নিয়ন্ত্রণের মেয়াদ বৃদ্ধি করে। এর প্রতিবাদে জিন্নাহ এই কাউন্সিল থেকে পদত্যাগ
করেন।
১৯১৯ খ্রিষ্টাব্দে রাউটাল বিল বাতিলের
জন্য মহাত্মা
গান্ধী, দরখাস্ত
করেন। এপ্রিল মাসে তিনি সর্বভারতীয় সত্যগ্রহ আন্দোলন শুরু হয়।
জিন্নাহ এই আন্দোলনের বিপক্ষে ছিলেন। সত্যাগ্রহকে তিনি রাজনৈতিক নৈরাজ্য হিসেবে
গ্রহণ করেন। ১৯১৯ খ্রিষ্টাব্দের ১৩ই এপ্রিল অমৃতসরে
জালিওয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের সমগ্র ভারতবর্ষের রাজনৈতিক অস্থিরতা প্রবল আকার
ধারণ করে।
১৯২০ খ্রিষ্টাব্দের নাগপুরে কংগ্রেসের অধিবেশনে জিন্নাহ যোগ দিলেও একই শহরে অনুষ্ঠিত মুসলিম লীগের অধিবেশন জিন্নাহ যোগ দেননি।
মূলত কংগ্রেস এবং মুসলিম লীগের সাথে জিন্নাহর মত-পার্থক্য তীব্রতর হয়ে উঠে। কিন্তু
কংগ্রেসের সাথে তাঁর দ্বন্দ্ব বাড়তে থাকে। এরপর জিন্নাহ কংগ্রেস থেকে পদত্যাগ করেন।
তবে মুসলিম লীগের সদস্য হিসেবে থেকে যান।
১৯২৩ খ্রিষ্টাব্দের সেপ্টেম্বর মাসে জিন্নাহ বোম্বে থেকে নবগঠিত কেন্দ্রীয় আইন
পরিষদের মুসলিম সদস্য নির্বাচিত হন এবং সাংসদ হিসেবে তিনি দক্ষতার পরিচয় দেন।
১৯২৫ খ্রিষ্টাব্দে আইনসভায় তার কাজের স্বীকৃতি হিসেবে লর্ড রিডিং তাকে নাইটহুডের
প্রস্তাব করলে জিন্নাহ তা ফিরিয়ে দেন।
১৯২৭ খ্রিষ্টাব্দের ডিসেম্বর মাসে অধিবেশনে জিন্নাহকে মুসলিম লীগের প্রেসিডেন্ট করা
হয়।
১৯২৭ খ্রিষ্টাব্দে ব্রিটিশ সরকার, ভারত সরকার আইন ১৯১৯-এর আওতায় নেয়া প্রক্রিয়ার
উপর পর্যালোচনা গ্রহণ করে।
১৯২৮ খ্রিষ্টাব্দের জানুয়ারি মাসের বৈঠকে জিন্নাহকে লীগের স্থায়ী প্রেসিডেন্ট
ঘোষণা করা হয়। এই বছরে ভারত বিষয়ক সাইমন কমিশন ভারতে আসে।
এই কমিশনকে ভারতের মুসলিম ও হিন্দু নেতৃবৃন্দ তাদের বয়কট করেন। অবশ্য কিছু
মুসলিম লীগ নেতা অবশ্য জিন্নাহর বিপক্ষে গিয়ে সাইমন কমিশনকে স্বাগত জানিয়েছিল। তবু
মুসলিম লীগের অধিকাংশ নেতা জিন্নাহকেই সমর্থন করে কমিশনে যাওয়া থেকে বিরত থাকেন।
এই বছরে সাংবিধানিক পরিবর্তনের ব্যাপারে আলোচনা শুরু হলে কংগ্রেস মতিলাল
নেহরুর নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করে। নেহেরু রিপোর্ট ভৌগলিক অবস্থানের উপর ভিত্তি
করে নির্বাচন এলাকা চিহ্নিত করার পক্ষে মত দেয়। জিন্নাহ এসময় মুসলিমদের
জন্য পৃথক নির্বাচনের পক্ষে হলেও তাতে ছাড় দিতে রাজি হন। এরপর উভয় দলের মধ্যে
আলোচনা হলেও তা ফলপ্রসু হয় নি। মুসলিমদের বৃহত্তর স্বার্থে তিনি আইনসভা ও
মন্ত্রীপরিষদে মুসলিমদের বাধ্যতামূলক প্রতিনিধি রাখার প্রস্তাব হিসেবে চৌদ্দ দফ পেশ
করা হয়। তাঁর প্রস্তাবটি জিন্নাহর চৌদ্দ দফা হিসেবে অভিহিত করা হয়।
১৯২৯ খ্রিষ্টাব্দের নির্বাচনে বল্ডউইন পরাজিত হওয়ার পর, লেবার পার্টির রেমসে
ম্যাকডোনাল্ড প্রধানমন্ত্রী হন এবং ভারতের ভবিষ্যত নিয়ে আলোচনার জন্য তিনি লন্ডনে
ভারতীয় ও ব্রিটিশ নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনায় আগ্রহ প্রকাশ করেন। তিনবার গোল টেবিল
বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। জিন্নাহ প্রথম দুইটি বৈঠকে অংশ নেন তবে শেষের বৈঠকে তাকে
আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। এই বছরে তাঁর স্ত্রী রতনবাইয়ের মৃত্যু হয়। এরপর জিন্নাহর
বোন ফাতেমা জিন্নাহ তাঁর এবং তাঁর কন্যা দিনার দেখাশোনার ভার নেন।
১৯৩০ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ১৯৩৪ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে অধিকাংশ সময় তিনি ইংল্যান্ডে
ছিলেন। এই সময় তিনি প্রিভি কাউন্সিলে ব্যারিস্টার হিসেবে কাজ করেন। এখানে তিনি বেশ
কিছু ভারত সংক্রান্ত মামলার তদারক করেন।
১৯৩০ খ্রিষ্টাব্দে এলাহাবাদে মুসলিম লীগের অধিবেশনে প্রদত্ত ভাষণে স্যার মুহাম্মদ
ইকবাল ভারতে একটি মুসলিম রাষ্ট্র গঠনের ডাক দেন। এটি ছিল পাকিস্তান গঠনের একটি
প্রাথমিক প্রস্তাব।
১৯৩১ সালে তার বোন ফাতেমা জিন্নাহ ইংল্যান্ডে তার কাছে চলে যান। এরপর থেকে ফাতেমা
জিন্নাহ তার ভাইয়ের দেখাশোনা শুরু করেন এবং তিনি জিন্নাহর একজন অন্যতম উপদেষ্টা
হয়ে উঠেন। জিন্নাহর মেয়ে দিনা ইংল্যান্ডে লেখাপড়া করেন। উল্লেখ্য, দিনে পারসি
বংশোদ্ভূত খ্রিষ্টান নেভিল ওয়াদিয়াকে বিয়ে করেন। এই কারণে জিন্নাহর সাথে তাঁর
মেয়ে দিনার সম্পর্কের অবনতি ঘটে। তাদের মধ্যে যোগাযোগ বজায় থাকলেও দূরত্ব রয়ে
যায়। জিন্নাহর মৃত্যুর পর দাফনের সময় ছাড়া দিনা নিজে কখনো
পাকিস্তান যান নি।
১৯৩৩ খ্রিষ্টাব্দে শুরুতে ভারতীয় মুসলিম লীগের নেতাকর্মীরা জিন্নাহকে মুসলিম লীগের
দায়িত্ব গ্রহণের আহ্বান জানান। কারণ তাঁর অনুপস্থিতিতে দলীয় কর্মকাণ্ড
আশংকাজনকভাবে হ্রাস পেয়েছিল। এই সময় জিন্নাহ দলের প্রেসিডেন্ট থাকলেও দল নিয়ে তাঁর
বিশেষ কোনো ভাবনা বা কর্মকাণ্ড ছিল না।
মুসলিম লীগের নেতাকর্মীদের ডাকে সাড়া দিয়ে তিনি ১৯৩৩ খ্রিষ্টাব্দের অধিবেশনে অংশ
নেন নি। তবে ফিরে আসার অঙ্গীকার করেন। এজন্য তিনি ডিসেম্ববর মাস পর্যন্ত সময় নেন।
কাদিয়ানি সম্প্রদায়ের আবদুল করিম দারদ, ১৯৩৩ খ্রিষ্টাব্দের মার্চ মাসে জিন্নাহর
সাথে সাক্ষাৎ করে তাঁকে ভারত ফেরার অনুরোধ করেন। এর কাছাকাছি সময়ে লিয়াকত আলি খান
জিন্নাহর সাথে সাক্ষাত করে একই অনুরোধ করেন। এই সময় চৌধুরী রহমত আলি একটি
পুস্তিকায় সিন্ধু অববাহিকায় ও ভারতের মুসলিম অধ্যুষিত অন্যান্য স্থানে মুসলিম
রাষ্ট্র গঠনের আহ্বান জানান। ১৯৩০ খ্রিষ্টাব্দে এলাহাবাদে মুসলিম লীগের সভায় স্যার
মুহাম্মদ ইকবাল ভারতে মুসলিম রাষ্ট্র গঠনের প্রস্তাবের অনুরূপ।
১৯৩৪ খ্রিষ্টাব্দের প্রথম দিকে জিন্নাহ তাঁর ব্রিটেনের বাড়ি বিক্রি করে দেন। এরপর
তিনি আইনব্যবসা বন্ধ করেন। ১৯৩৪ খ্রিষ্টাব্দের অক্টোবর মাসে জিন্নাহর অনুপস্থিতিতে
বোম্বের মুসলিমরা তাকে কেন্দ্রীয় আইনসভার সদস্য নির্বাচিত করে। ১৯৩৫ খ্রিষ্টাব্দে
আইনসভার ভারত সরকার আইনপ্রদেশগুলোকে কিছু ক্ষমতা প্রদান করেছিল। এই সময় নয়াদিল্লীর
কেন্দ্রীয় আইনসভা তেমন ক্ষমতাশালী ছিল না। তখন মূল ক্ষমতা ছিল ভাইসরয়ের হাতে।
ভাইসরয় ইচ্ছা করলে আইনসভা বাতিল করতে পারতেন বা বিশেষ ফরমানের মাধ্যমে শাসন করতে
পারতেন। অনিচ্ছাসত্ত্বেও মুসলিম লীগ তা মেনে নিয়েছিল। ১৯৩৭ খ্রিষ্টাব্দের প্রাদেশিক
নির্বাচনে ভালভাবে প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে নামে। এই নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসেবে
নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠিত করতে ব্যর্থ হয়। ফলে কংগ্রেস ও তার মিত্ররা সরকার গঠন করে।
১৯৩৬ ও ১৯৩৭ খ্রিষ্টাব্দে মুসলমানদের জন্য পৃথক রাষ্ট্র গঠনের বিষয়ে জিন্নাহ ও
ইকবাল মতবিনিময় করেন। পরের বছরগুলোতে জিন্নাহ ইকবালের ধারণাকে গ্রহণ করেন। অনেক
কংগ্রেস নেতা ভারত রাষ্ট্রের জন্য একটি ক্ষমতাশালী কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষপাতী
ছিলেন। কিন্তু জিন্নাহসহ মুসলিম রাজনীতিবিদরা এর বিরোধিতা শুরু করেন। অন্যদিকে
কংগ্রেসের অন্যান্য মুসলিম সমর্থকরা স্বাধীনতার পর ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রের ব্যাপারে
সমর্থন জানালেও মদনমোহন মালব্য, বল্লবভাই প্যাটেল ও অন্যান্য সমমনা নেতারা এর
বিরোধিতা করে এবং স্বাধীন ভারতে গরু হত্যা নিষিদ্ধের মত আইন এবং তাঁর উর্দুর পরিবর্তে হিন্দিকে
সরকারি স্বীকৃতিদানের পক্ষপাতি ছিলেন। এসব কর্মকাণ্ডের ফলে মুসলীম লীগের সমর্থকরা
উদ্বিগ্ন হয়ে উঠে।
১৯৩৭ খ্রিষ্টাব্দের প্রাদেশিক নির্বাচনের সময় যুক্ত প্রদেশে কংগ্রেস ও মুসলীম লীগ
জোট সরকার গঠনের চেষ্টা ব্যর্থ হয়। এর ফলে এই দলের ভিতরে ফাটল ধরে।
১৯৩৮ খ্রিষ্টাব্দে জিন্নাহ হিন্দুদের মুসলিম বিরোধী প্রচারণার মোকাবেলা করার জন্য,
দিল্লিতে Dawn
নামে একটি ইংরেজি দৈনিক পত্রিকার প্রকাশনা শুরু করেন।
১৯৩৯ খ্রিষ্টাব্দে ৩ সেপ্টেম্বর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী নেভিল চেম্বারলাইন জার্মানির
বিরুদ্ধে যুদ্ধের ঘোষণা করেন। ৪ঠা সেপ্টেম্বর ভাইসরয় লর্ড লিনলিথগো ভারতীয়
রাজনৈতিক নেতাদের সাথে আলাপ না করে ভারতের যুদ্ধে প্রবেশের ঘোষণা দেন। এর ফলে
ভারতজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখা দেয়। পরে জিন্নাহ ও গান্ধীর সাথে সাক্ষাতের করে
লিনলিথগো ঘোষণা দেন যে, যুদ্ধ শেষ হওয়া পর্যন্ত ভারতের স্বায়ত্তশাসনের বিষয়ে
আলোচনা মুলতবি রাখা হল।
স্বায়ত্তশাসনের ব্যাপারে ভাইসরয় জিন্নাহর কাছে মুসলিম লীগের মনোভাব জানার জানতে
চাইলে, মুসলিম লীগের সাংবিধানিক উপকমিটি একটি বৈঠক আহ্বান করে। ১৯৪০ খ্রিষ্টাব্দের
ফেব্রুয়ারি মাসে মুসলিম লীগের ওয়ার্কিং কমিটি চারদিন ধরে বৈঠক করে। এবং ৬ই
ফেব্রুয়ারি জিন্নাহ ভাইসরয়কে জানান যে মুসলিম লীগ ফেডারেশনের বদলে তাঁরা পৃথক
রাষ্ট্রের পক্ষপাতি। ১৯৪০ খ্রিষ্টাব্দে তিনি দ্বিজাতিতত্বের প্রচারণা শুরু করেন। এই
বছরের ২৩শে মার্চ নিখিল ভারত মুসলিম লীগের লাহোর অধিবেশনে তিনি সভাপতিত্ব করেন।
উল্লেখ্য এ অধিবেশনে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী এ কে ফজলুল হক উত্থাপিত ‘পাকিস্তান
প্রস্তাব’ গ্রহণ করা হয়।
১৯৪০ খ্রিষ্টাব্দের জুন মাসে লিনলিথগো জিন্নাহর সাথে সাক্ষাত করেন। এই সময় চার্চিল
ছিলেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী। আগষ্ট মাসে তিনি কংগ্রেস ও মুসলীম লীগকে যুদ্ধে
পূর্ণ সমর্থন দেয়ার আহ্বান জানান। ১৯৪০ এর দশকের শুরুর দিকে দিল্লিতে ডন পত্রিকা
চালু করতে তিনি সহায়তা করেন। মুসলিম লীগের বার্তা পৌছে দিতে এই পত্রিকা কাজ করেছে
এবং এরপর পাকিস্তানের প্রধান ইংরেজি দৈনিক হয়ে উঠে।
১৯৪১ খ্রিষ্টাব্দের ডিসেম্বর জাপান পার্ল হারবার আক্রমণ করার ফলে যুক্তরাষ্ট্র
যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। পরের মাসগুলোতে জাপানিরা দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দিকে অগ্রসর
হয়। এরপর যুদ্ধে ভারতীয় সমর্থন লাভের জন্য ব্রিটিশ সরকার স্যার স্ট্যাফোর্ড
ক্রিপসকে ভারতে প্রেরণ করে। তিনি কিছু প্রদেশকে অস্থায়ী বা স্থায়ীভাবে কেন্দ্রীয়
সরকারের বাইরে থাকার অধিকার দেয়ার প্রস্তাব করেন যাতে তারা নিজেরা ডমিনিয়ন হিসেবে
থাকতে পারে বা অন্য কনফেডারেশনের অংশ হতে পারে। এই প্রস্তাবে পাকিস্তানের স্বীকৃতি
না থাকায় জিন্নাহ তা প্রত্যাখ্যান করেন। একই সাথে কংগ্রেসও ক্রিপসের প্রস্তাব
প্রত্যাখ্যান করে।
ক্রিপস মিশনের ব্যর্থতার পর, কংগ্রেস ১৯৪২ খ্রিষ্টাব্দে আগস্টে ভারত ছাড় আন্দোলন
শুরু করে। এতে ব্যাপক সাড়া পাওয়া যায়। এই সময় কংগ্রেস প্রথম সারির অধিকাংশ
নেতারা গ্রেপ্তার হন।
১৯৪৩ খ্রিষ্টাব্দের ২৬শে জুলাই বোম্বাইয়ে জিন্নাহকে একজন খাকসার স্বেচ্ছাসেবক
তাঁকে হত্যার চেষ্টা করেন এবং কিন্তু জিন্নাহ অল্পের জন্য বেঁচে যান।
১৯৪৪ খ্রিষ্টাব্দের সেপ্টেম্বর মাসে জিন্নাহ ও গান্ধী বোম্বের মালাবার হিলে সাক্ষাত করেন। দুই
সপ্তাহ ধরে তাদের আলাপ চললেও তাঁরা কোনো সিদ্ধান্তে পৌছাতে পারেন নি। জিন্নাহর মত ছিল যে
ব্রিটিশদের বিদায়ের আগেই পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা করতে হবে। অন্যদিকে গান্ধী চাইছিলেন
যে ভারত স্বাধীন হওয়ার পর দেশ বিভাগের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হোক।
১৯৪৫ সালের প্রথম দিকে লিয়াকত আলি খান ও
কংগ্রেস নেতা ভুলাভাই দেশাই সাক্ষাত করেন। এতে সিদ্ধান্ত হয় যে যুদ্ধ শেষ হলে
কংগ্রেস ও লীগের যৌথ অস্থায়ী সরকার গঠন করা হবে এবং তাতে ভাইসরয়ের নির্বাহী
কাউন্সিলের সদস্য কংগ্রেস ও মুসলিম লীগ থেকে সমান সংখ্যায় নেয়া হবে।
ফিল্ড মার্শাল ওয়াভেল ১৯৪৩ খ্রিষ্টাব্দে লিনলিথগোর স্থলাভিষিক্ত হন। ১৯৪৫
খ্রিষ্টাব্দে জুনে কংগ্রেস নেতৃবৃন্দের মুক্তির পর ওয়াভেল সম্মেলন শুরু করেন। এতে
সিমলায় তার সাথে সাক্ষাত করার জন্য বিভিন্ন সম্প্রদায়ের নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো
হয়। লিয়াকত আলি খান ও ভুলাভাই দেশাইয়ের মধ্যকার সমঝোতার মত একটি অস্থায়ী সরকার
গঠনের জন্য তিনি প্রস্তাব করেন। তবে মুসলিমদের জন্য সংরক্ষিত আসনে শুধু লীগের
প্রার্থীরা স্থান পাবে এমন নিশ্চয়তা দিতে তিনি অনিচ্ছুক ছিলেন। আমন্ত্রিতরা
প্রার্থীদের নামের তালিকা জমা দেয়। জুলাইয়ের মধ্যভাগে ওয়াভেল কোনো সিদ্ধান্ত
ছাড়া সম্মেলন সমাপ্ত করেন।
১৯৪৫ খ্রিষ্টাব্দের ডিসেম্বরের মাসের নির্বাচনে মুসলিম লীগ মুসলিমদের জন্য সংরক্ষিত
সবকটি আসনে জয় লাভ করে। পরের বছরের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত প্রাদেশিক নির্বাচনে
মুসলিম লীগ মুসলিম ভোটের ৭৫ শতাংশ লাভ করতে সক্ষম হয়। এই জয়ের ফলে ভারতের মুসলমানদের
মনে পাকিস্তানের আকাঙ্ক্ষা প্রমাণিত হয়। কেন্দ্রীয় আইনসভায় কংগ্রেসের
সংখ্যাগরিষ্ঠতা ছিল। তবে পূর্বের চেয়ে তারা চারটি আসন কম লাভ করে।
১৯৪৬ খ্রিষ্টাব্দে গ্রেট ব্রিটেনের
নির্বাচনে লেবার পার্টি জয়ী হয়। প্রধানমন্ত্রী ক্লিমেন্ট এটলি ও তার ভারত সচিব
লর্ড ফ্রেডেরিক পেটিক লরেন্স ভারতের অবস্থা তাৎক্ষণিক পর্যালোচনা করার আদেশ দেন।
১৯৪৬ খ্রিষ্টাব্দের ফেব্রুয়ারিতে ব্রিটিশ মন্ত্রীপরিষদ ভারতের নেতাদের সাথে
আলোচনার জন্য একটি প্রতিনিধিদল পাঠায়। এই ক্যাবিনেট মিশনে ক্রিপস ও পেটিক লরেন্সও
ছিলেন। তারা মার্চ মাসে ভারতে পৌছান। প্রতিনিধিদল অচলাবস্থা কাটানোর চেষ্টা করেছিল।
মে মাসে ব্রিটিশরা কয়েকটি স্বায়ত্তশাসিত প্রদেশ নিয়ে গঠিত অখণ্ড ভারতের
পরিকল্পনা প্রস্তাব করে। এতে বলা হয় প্রতিরক্ষা, পররাষ্ট্র ও যোগাযোগ ব্যবস্থা
কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে থাকবে। ইউনিয়নে থাকা না থাকা প্রদেশের ইচ্ছার উপর নির্ভর
করবে। কংগ্রেস ও মুসলীম লীগের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি অস্থায়ী সরকার গঠনের কথাও
বলা হয়। জুন মাসে জিন্নাহ ও লীগের ওয়ার্কিং কমিটি এই পরিকল্পনা মেনে নেন। তবে
অস্থায়ী সরকারে দুই দলের কতজন সদস্য থাকবে তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দেয়।
নতুন মন্ত্রীসভায় কংগ্রেস যোগ দেয়। তবে অক্টোবর নাগাদ মুসলিম লীগের সকল সদস্য এতে
যোগ দেন নি।
জিন্নাহ, লিয়াকত ও নেহেরুর মত নেতাদের লন্ডনে নিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার জন্য
ওয়াভেল চেষ্টা করেন। লন্ডন থেকে ফেরার সময় জিন্নাহ ও লিয়াকত আলি খান কায়রোতে
কয়েকদিন অবস্থান করে প্যান ইসলামিক বৈঠকে অংশ নেন।
১৯৪৬ খ্রিষ্টাব্দের ডিসেম্বর নাগাদ তিনি
ডমিনিয়ন মর্যাদায় স্বাধীন রাষ্ট্রের বিষয়ে চাপ প্রয়োগ করেন।
জিন্নাহ আশা করেছিলেন যে, বাংলা ও পাঞ্জাব অবিভক্ত অবস্থায় পাকিস্তানের
অন্তর্ভুক্ত হবে। ডিসেম্বর মাসে লর্ড মাউন্টব্যাটেনকে ভাইসরয় করে পাঠানোর
সিদ্ধান্ত হয়।
বিশ্বযুদ্ধে কৃতিত্বের জন্য তিনি ব্রিটিশ রক্ষণশীল দলের কাছে জনপ্রিয় ছিলেন।
অন্যদিকে রাণী ভিক্টোরিয়ার প্রপৌত্র হিসেবে লেবার পার্টিও তাকে পছন্দ করত।
১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দের ২০শে ফেব্রুয়ারি এটলির ভাইসরয় হিসেব মাউন্টব্যাটেনের নিয়োগ
ঘোষণা করেন এবং বলেন যে ১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দের জুন নাগাদ ব্রিটেন ভারতের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর
করবে। ভারতে আসার দুই দিন পর ২৪ মার্চ মাউন্টব্যাটেন দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এর মধ্যে
কংগ্রেস দেশবিভাগের ব্যাপারে সম্মত হয়। জিন্নাহর আশঙ্কা ছিল যে ব্রিটিশরা ভারত
থেকে চলে যাওয়ার পর কংগ্রেস প্রধান আইনসভায় মুসলিমরা তাদের প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত
হবে। তাই তিনি দাবি করেন যে স্বাধীনতার পূর্বেই সেনাবাহিনীকে ভাগ করতে হবে। কিন্তু
মাউন্টব্যাটেনের আশা করেছিলেন যে স্বাধীনতার পর একট যৌথ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা থাকবে।
কিন্তু জিন্নাহর ইচ্ছা ছিল স্বাধীন রাষ্ট্রের আলাদা সেনাবাহিনী থাকুক। স্বাধীনতা
আন্দোলনের এক পর্যায়ে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী অখণ্ড বাংলাকে ভারত ও পাকিস্তানের
মত স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে গঠনের প্রস্তাব করেন। মুহাম্মদ আলি জিন্নাহ এ ব্যাপারে
তার একাত্মতা প্রকাশ করেন। তার বিশ্বাস ছিল কলকাতা ছাড়া বাংলা অর্থহীন তাই তিনি
বাংলাকে অখণ্ড রাখতে উৎসাহী ছিলেন। তবে শেষপর্যন্ত কংগ্রেসের বিরোধিতায় বাংলা
বিভক্ত হয়।
রমনা রেসকোর্স ময়দান কায়েদে আজমের ভাষণ |
নতুন পাকিস্তানের পশ্চিমাঞ্চলের নাম হয় পশ্চিম পাকিস্তান এবং পূর্বাঞ্চলের নাম হয়
পূর্ব-পাকিস্তান। ১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দের ১৯শে মার্চ জিন্নাহ ঢাকা আসেন। ভারত বিভাগের
পর এটাই ছিল তার প্রথম পূর্ব পাকিস্তান সফর। ২১শে মার্চ রমনা রেসকোর্স ময়দানে
(বর্তমান সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যান) কায়েদে আজমকে গণ-সংবর্ধনা দেওয়ার আয়োজন করা হয়।
সেখানে তিনি পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলাকে স্বীকৃতি দিতে অস্বীকার করেন।
তিনি
ভাষা-আন্দোলনকে পাকিস্তানের মুসলমানদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির ষড়যন্ত্র হিসেবে
উল্লেখ করেন। প্রসঙ্গক্রমে তিনি বলেন পূর্ববঙ্গের প্রাদেশিক ভাষা নির্ধারিত হবে
প্রদেশের অধিবাসীদের ভাষা অনুযায়ী। কিন্তু দ্ব্যর্থহীন চিত্তে ঘোষণা করেন— "উর্দুই
হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা, অন্য কোনো ভাষা নয়"। একই সাথে তিনি সতর্ক করে
দিয়ে বলেন, "জনগণের মধ্যে যারা ষড়যন্ত্রকারী রয়েছে, তারা পাকিস্তানের শত্রু এবং
তাদের কখনোই ক্ষমা করা হবে না"। জিন্নাহ্'র এ বিরূপ মন্তব্যে তাৎক্ষণিকভাবে
বিক্ষোভ প্রদর্শন করে উপস্থিত ছাত্র-জনতার একাংশ। উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র
রাষ্ট্রভাষা - এ ধরণের একপেশে উক্তিতে আন্দোলনকারীরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। ২৪ মার্চ
জিন্নাহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলে গিয়েও তিনি একই ধরণের বক্তব্য রাখেন।
এখানে তিনি উল্লেখ করেন যে, এ আন্দোলন সঙ্কীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গীর বহিঃপ্রকাশ এবং অভিযোগ
করেন যে, কিছু লোক এর মাধ্যমে তাদের ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করতে চাইছে। যখন তিনি
উর্দুর ব্যাপারে তাঁর অবস্থানের কথা পুনরুল্লেখ করেন, এখানেও উপস্থিত ছাত্ররা
সমস্বরে না, না বলে চিৎকার করে ওঠে। একই দিনে রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের একটি
প্রতিনিধিদল জিন্নাহ্'র সাথে সাক্ষাৎ করেন এবং বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি
জানিয়ে একটি স্মারকলিপি দেন। উল্লেখ্য, জিন্নাহর এই ইচ্ছা শেষ পর্যন্ত পূরণ হয় নি।
ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্থান পেয়েছিল বাংলা।
১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দের ১১ই সেপ্টেম্বর করাচিতে তার বাসভবনে মুহাম্মদ আলি জিন্নাহর
মৃত্যু হয়। উল্লেখ্য, তিনি দীর্ঘদিন ধরে যক্ষা রোগে ভুগছিলেন। ১২ সেপ্টেম্বর তাকে
দাফন করা হয়।