নয়াপাল
পাল রাজবংশের একাদশতম রাজা। ১০৩৮ খ্রিষ্টাব্দে পাল রাজবংশের দশম রাজা মহীপাল প্রথম (৯৮৮-১০৩৮ খ্রিষ্টাব্দ)-এর মৃত্যুর পর, তাঁর পুত্র নয়াপাল রাজত্ব লাভ করেন।

কলচুরিরাজ গাঙ্গেয়দেবের পুত্র লক্ষ্মীকর্ণ বঙ্গদেশ আক্রমণ করেন। এই সূত্রে বঙ্গদেশের রাজ নয়াপালের সাথে একটি দীর্ঘকালীন যুদ্ধের সূচনা হয়। ধারণা করা হয় এই যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল ১০৪১ খ্রিষ্টাব্দে। যুদ্ধের প্রাথমিক পর্যায়ে নয়াপাল পরাজিত হন। তিব্বতীয় গ্রন্থে এই যুদ্ধের বিস্তৃত বিবরণ পাওয়া যায়। লক্ষ্মীকর্ণ মগধ আক্রমণ করে নয়াপালকে পরাজিত করেছিলেন বটে, কিন্তু তিনি পাল-রাজধানী অধিকার করতে পারেন নি। কিন্তু তিনি বহু বৌদ্ধ প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে মন্দিরের দ্রব্যাদি লুণ্ঠন করেন। এই সময় অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান মগধে বাস করছিলেন। তিনি প্রথমে কোনো প্রকারে এই যুদ্ধব্যাপারে হস্তক্ষেপ করেন নি। কিন্তু পরে যখন নয়াপাল লক্ষ্মীকর্ণকে পরাজিত করেন, তখন কলিচুর সৈন্যরা ধ্বংসযজ্ঞে মেতে উঠে। এই সময় তিনি উভয় পক্ষের মধ্যে সন্ধি স্থাপিনের উদ্যোগ নেন। শেষ পর্যন্ত উভয় রাজা এই সন্ধিতে সম্মত হন। এরপর ১০৪২ খ্রিষ্টাব্দ অতীশ দীপঙ্কর তিব্বত চলে যান।

১০৬৪ খ্রিষ্টাব্দে নয়াপাল মৃত্যুবরণ করেন। এরপরে তাঁর পুত্র বিগ্রহপাল তৃতীয়  পাল সিংহাসনে বসেন।


সূত্র :
বাংলাদেশের ইতিহাস /রমেশচন্দ্র মজুমদার।
ভারতের ইতিহাস । অতুলচন্দ্র রায়, প্রণবকুমার চট্টোপাধ্যায়।