১৮৩১ খ্রিষ্টাব্দের ২০শে ডিসেম্বর
মাসে অধ্যাপক টাইলারের সুপারিশে, তিনি ত্রিকোণমিতিক জরিপ বিভাগে যোগদান করেন। এই
সময় ভারতীয় জরিপ বিভাগের প্রধান ছিলেন জর্জ এভারেষ্ট। এভারেষ্ট ত্রিকোণমিতিক জরিপে
একজন বিশেষজ্ঞ ছিলেন। ভূমি জরিপের ক্ষেত্রে জর্জ এভারেষ্টের কাছে তিনি বিশেষ
প্রশিক্ষণ নেন। এই বৎসরে তিনি ব্যারাকপুর ট্রাঙ্ক রোডের দুই প্রান্তের টাওয়ারের
মধ্যে বেজ লাইন পরিমাপে এন্ড্রু এবং রেনি টেইলরকে সাহায্য করেন। পরবর্তী সময়ে
আগ্রা, চুনার, অমরকণ্টক, গোয়ালিয়র ও মুসৌরিতে জরিপের কাজ
করেন। এরপর ১৮৫১ খ্রিষ্টাব্দে তিনি কলকাতা প্রধান অফিসে যোগদান করেন।
১৮৪৫-১৮৫০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত তিনি উত্তর
হিমালয় পর্বতমালার
শৃঙ্গসমূহ এবং তৎসংলগ্ন অঞ্চলে
জরিপ করেন। এই জরিপের সময় তিনি লক্ষ করেন যে,
হিমালয় পর্বতমালার জরিপ মানের ১৫নং শৃঙ্গের (চূড়া-১৫) উচ্চতা
সবচেয়ে বেশি। এই বিষয়টি তিনি সে সময়ের জরিপ বিভাগের প্রধান এ্যান্ড্রু ওয়া জানান।
১৮৫৬ খ্রিষ্টাব্দে এ্যান্ড্রু ওয়া এই তথ্যটি ব্রিটিশ রয়্যাল জিওগ্রাফিক্যাল
সোসাইটিকে জানান। উল্লেখ্য এক্ষেত্রে রাধানাথের বিষয়টি এ্যান্ড্রু গোপন করেন। ফলে
সকল কৃতিত্ব লাভ করেন। এ্যান্ড্র এই পর্বত শৃঙ্গটির নামক করেন, মাউন্ট এভারেস্ট
(তাঁর পূর্ববর্তী জরিপ বিভাগের প্রাধন
জর্জ এভারেষ্টের নামুনুসার)।
কিন্তু পরবর্তী তদন্তে রাধানাথের অবদানের কথা ধরা পড়ে। সেই সূত্রে তাঁকে ১৮৬১
খ্রিষ্টাব্দে নাইট উপাধি দেওয়া হয়। ১৮৬২ খ্রিষ্টাব্দে তিনি জার্মানির সুবিখ্যাত
ফিলজফিক্যাল সোসাইটির ব্যাভেরিয়ান শাখার সম্মানীয় সদস্যপদ লাভ করেন ১৮৬৩
খ্রিষ্টাব্দে তিনি ব্রিটিশ রয়্যাল জিওগ্রাফিক্যাল সোসাইটির ভাইস প্রেসিডেন্ট
হন।
১৮৬২ খ্রিষ্টাব্দে তিনি
চাকরি থেকে অবসর নেন।
১৮৭০ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ই মে হুগলির চন্দননগরে মৃত্যুবরণ করেন।
উল্লেখ্য, ১৯২১-২২ খ্রিষ্টাব্দ নাগাদ, ব্রিটিশ রয়্যাল
জিওগ্রাফিক্যাল সোসাইটির সভাপতি ফ্রান্সিস ইয়ংহাজব্যান্ড রাধানাথের অবদানের কথা
উল্লেখ করেন। ১৯৮৪ খ্রিষ্টাব্দে ইন্টারন্যাশনাল এ্যাসোসিয়েশান অফ জিওডেসি'র
তদানীন্তন সভাপতি লিপন এ্যাঙ্গাস সুনিশ্চিত করেন যে, রাধানাথের জরিপেই প্রথম
এভারেষ্টের উচ্চতা ধরা পড়েছিল।
সূত্র:
স্যার রাধানাথ শিকদার/ড. নিশীথকুমার পাল [ভারতবিচিত্রা অক্টোবর ২০১৪]
http://www.veethi.com/india-people/mathematician-profession-47-2.htm