সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়
 (১৮৮৬-১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দ)
 
বিষ্ণুপুর ঘরানার অন্যতম সঙ্গীতজ্ঞ ও 
রবীন্দ্রসঙ্গীতের স্বরলিপিকার।  পাণ্ডিত্যের জন্য তিনি সঙ্গীতরত্নাকর নামে খ্যাতি লাভ করেছিলেন।  
 শৈশবে তিনি পিতাকে হারান। 
তাঁর দুই অগ্রজ  
রামপ্রসন্ন 
বন্দ্যোপাধ্যায় 
এবং গোপেশ্বর 
বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে ধ্রুপদ, 
ধামার ও টপ্পার তালিম নেন। এ ছাড়া  
 রামপ্রসন্ন বন্দ্যোপাধ্যায়ের 
কাছে  তিনি সেতার সুরবাহার এস্রাজ 
বাজানো শিখেছিলেন।
 
তিনি বিভিন্ন সময়ে বর্ধমান রাজদরবারে, মহারাজা যতীন্দ্র্রমোহনের সঙ্গীত সভায়, আদি 
ব্রাহ্মসমাজে ও প্রমোদা দেবী চৌধুরাণীর 'সঙ্গীত সম্মিলনী'তে গায়ক হিসাবে নিযুক্ত 
ছিলেন।  তাঁর রচিত গ্রন্থের নাম- বিষ্ণুপুর। ১৯০৮ খ্রিষ্টাব্দের দিকে রবীন্দ্রনাথের সাথে তাঁর 
প্রথম দেখা হয়েছিল ঠাকুরবাড়িতে। তিনি স্বরলিপি করতে জানেন, এই পরীক্ষা নিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ। 
প্রাথমিকভাবে তিনটি গানের স্বরলিপি করার পর রবীন্দ্রনাথ তাঁকে গ্রহণ করেছিলেন। 
যথার্থ স্বরলিপিকার হিসেব তাঁর কদরও ছিল রবীন্দ্রনাথের কাছে।  
তিনি রবীন্দ্রনাথের বহুগানের স্বরলিপি তৈরি করেছিলেন।  রবীন্দ্রনাথ তাঁকে ‘স্বরলিপির যাদুকর’ আখ্যা দেন।
আদি ব্রাহ্মসমাজের সঙ্গীতাচার্য্যের পদে তিনি বহুবছর ছিলেন। এছাড়াও তিনি বর্ধমান মহারাজের রাজসভায় এবং কলকাতার মহারাজা যতীন্দ্রমোহনের রাজসভায় সভাগায়করূপে ছিলেন। ‘সুরেশ্বরী’ ও ‘গান্ধী’ নামের দুটি রাগ তিনি সৃষ্টি করেন। তাঁর রচিত গ্রন্থের মধ্যে ‘গীত পরিচয়’, ‘এস্রাজ মুকুল’ এবং ‘সেতার শিক্ষা’ একসময় খুবই জনপ্রিয়তা অর্জন করে।
১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দের ২৩শে ফেব্রুয়ারি তিনি মৃত্যুবরণ করেন।