সতী মা
কর্তাভজা ধর্মের গুরুমামূল নাম সরস্বতী। পিতার নাম গোবিন্দ ঘোষ। ধারণা করা হয়, তিনি ১১৬৫-৬৬ বঙ্গাব্দের দিকে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। আর মৃত্যু হয়েছিল ১২৪৬ বঙ্গাব্দের দিকে।

কর্তাভজা  ধর্মের কর্তাবাবা
রামশরণ পালের প্রথমা স্ত্রীর মৃত্যুর পর, তিনি সরস্বতীকে বিয়ে করেন। রামশরণ পাল তাঁর পৈতৃক বাসস্থান জগদীশপুর ত্যাগ করে সরস্বতীকে সাথে করে ঘোষপাড়ায় এসে বসবাস করতে থাকেন। কিছুদিন পর আউলচাঁদ নানা তীর্থভ্রমণ করে ঘোষ পাড়ায় আসেন। কথিত আছে রামশরণ দীর্ঘদিন রোগে ভুগছিলেন। আউলচাঁদ ঘোষপাড়ায় আসার পর তিনি সুস্থ হয়ে যান।

কথিত আছে, সরস্বতী
আউলচাঁদের মতো একটি সন্তান কামনা করেছিলেন। আউলচাঁদ সরস্বতীকে জানান যে, তিনি পুত্র রূপে তাঁর গর্ভে জন্ম নেবেন। সরস্বতী ঠাকুরের মতো সন্তান লাভের যে আজ্ঞালাভ করেছিলেন, তা তিনি লাভ করেছিলেন ঠাকুরের মৃত্যুর প্রায় ৬ বছর পরে। তাঁর পুত্রের নাম রাখা হয়েছিল দুলালচাঁদ (রামদুলাল)।

কথিত আছে তিনি আউলচাঁদকে নিজের সন্তানের মতো স্নেহ করতেন, কিন্তু ভক্তি করতেন গুরুর মতো। অনেকে মনে করেন সরস্বতী.
আউলচাঁদের অলৌকিক শক্তি লাভ করেছিলেন। এই বিশ্বাস থেকে সরস্বতী
রামশরণ পালের  মৃত্যুর পর কর্তাভজাদের পরিচালিকা পদে অধিষ্ঠিতা হন। ভক্তরা তাঁকে দেবীর মতো মান্য করতেন। এই সময় কর্তাভজা সম্প্রদায়ের অনুসারীরা তাঁর সরস্বতী নামের পরিবর্তে 'সতী মা' নামে অভিহিত করেন। উল্লখ্য, সরস্বতী নামে প্রথম ধ্বনি 'স' এবং শেষ ধ্বনি 'তী' নিয়ে সতী নামটি তৈরি হয়েছিল।

সতী মায়ের জীবদ্দশায়, কর্তাভজা সম্প্রদায়ের অনুসারীরা কর্তাবাবা রামশরণ পালের চেয়ে কর্তামাকে উচ্চতর আসনে বসান এবং আরাধ্য দেবীতে পরিণত হন। তাঁর মৃত্যুর পর, তাঁর ভক্তরা তাঁর বাসস্থানের একস্থানে সমাধিস্থ করেন। পরে ওই সমাধির উপর  'সতী মায়ের মন্দির' ্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।

সরস্বতী 'সতী মা' হিসেবে ভক্তির বন্ধনে অনুসারীদের ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন, কিন্তু এই সম্প্রদায়ের বাণী ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দিতে পারেন নি।
মূলত দুলালচাঁদ এই কাজটি করতে সক্ষম হয়েছিলেন। এবং প্রকৃত 'কর্তাভজা'কে স্বতন্ত্র ধর্মীয় সংগঠন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছিলেন।


 সূত্র: