‘বিবাহসভায় দানসজ্জাদি সাজানো ছিল। স্বস্তি বাচন করিয়া অর্ঘ্য, অঙ্গুরীয়, মধুপর্ক ও বস্ত্রাদি দ্বারা কন্যাকা দেবেন্দ্রনাথ বরের অভ্যর্থনা করিয়াছিলেন। স্ত্রী-আচার প্রভৃতি বাদ দেওয়া হয় নাই। নূতন অনুষ্ঠানের মধ্যে, কেবল ব্ৰহ্মাপাসনা ও উপদেশ। ব্রহ্মোপাসনার পর সম্প্রদান হিন্দুরীতি অনুসারেই সম্পন্ন হয়। শুভদৃষ্টি, গ্রন্থিবন্ধন প্রভৃতি হিন্দুবিবাহের সুন্দর অনুষ্ঠানগুলিও কিছুই বাদ পড়ে নাই।তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা, শ্রাবণ ১৭৮৩ শক [পৃষ্ঠা: ৬৭-৬৮]
তত্ত্ববোধিনী পত্রিকার ভাদ্র সংখ্যার ৮১-৮৪ পৃষ্ঠায় অনুষ্ঠানটির পূর্ণাঙ্গ বিবরণ প্রকাশিত হয়।‘ব্রাহ্মবিবাহ। গত ১২ শ্রাবণ শুক্রবার ব্রাহ্ম ধর্ম্মের ব্যবস্থানুসারে শ্ৰীযুক্ত রাজারাম মুখোপাধ্যায় মহাশয়ের পুত্র শ্রীযুক্ত হেমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের সহিত শ্রীযুক্ত দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর মহাশয়ের কন্যার শুভ বিবাহ অতি সমারোহ পূৰ্ব্বক সম্পন্ন হইয়া গিয়াছে। বঙ্গদেশে ব্রাহ্মধৰ্ম্মানুযায়ী বিবাহের এই প্রথম সূত্রপাত হইল। বিবাহ সভায় লোকের বিস্তর সমারোহ হইয়াছিল। আর আহ্লাদের বিষয় এই যে প্রায় দুই শত ব্রাহ্ম সভাস্থ হইয়া যথা-বিধানে কাৰ্য্য সম্পাদন করিয়াছিলেন। যথা-নিয়মে পাত্রের অভ্যর্থনা হইলে পর ব্রহ্ম-বিষয়ক একটী সঙ্গীত সহকারে ব্রহ্মোপাসনা আরম্ভ হইল। চতুর্দ্দিক নিস্তব্ধ হইল; জন-কোলাহল আর কিছুমাত্র রহিল না—কেবল ব্রহ্মনামের মঙ্গল-ধ্বনি উঠিতে লাগিল। তৎপরে কন্যাদান কার্য্য সম্পন্ন হইলে উপাচার্য্য শ্ৰীযুক্ত আনন্দচন্দ্র বেদান্তবাগীশ মহাশয় দম্পতীকে…উপদেশ করিলেন।’