বিষয়: নজরুল সঙ্গীত।
শিরোনাম: অঝোর ধারায় বর্ষা ঝরে সঘন তিমির রাতে
অঝোর ধারায় বর্ষা ঝরে সঘন তিমির রাতে।
নিদ্রা নাহি তোমায় চাহি' আমার নয়ন-পাতে
॥
ভেজা মাটির গন্ধ সনে
তোমার স্মৃতি আনে
মনে,
বাদ্লী হাওয়া লুটিয়ে কাঁদে আঁধার আঙ্গিনাতে॥
হঠাৎ বনে আস্ল ফুলের বন্যা পল্লবেরই কূলে
নাগকেশরের সাথে কদম কেয়া ফুট্ল দুলে দুলে।
নবীন আমন ধানের ক্ষেতে হতাশ বায়ু ওঠে মেতে,
মন উ'ড়ে যায় তোমার দেশে পূর্ব-হাওয়ারই সাথে
॥
- ভাবার্থ: গানটিতে বিরহিণী প্রেমিকার উদাসী মনের সাথে বর্ষার
প্রাকৃতিক পরিবেশ একাকার হয়ে গেছে। এই গানে শৃঙ্গার রসের বিরহ ভাবের সাথে
বর্ষার রূপ গভীরভাবে মিশে গেছে।
মেঘাবৃত গভীর বর্ষণ-রাত্রিতে চোখে নেমে আসে গভীর ঘুমের প্রশান্তি, এমন রাতে
নিঃসঙ্গা প্রেমিকা তার চোখে ঘুমের পরিবর্তে দূর প্রবাসী প্রেমিকের অবয়ব
দেখার কামনা করছে। বর্ষণসিক্ত পৃথিবীর ভূমির গন্ধের সাথে, তার স্মৃতিতে মিশে
আছে প্রেমিকের সঙ্গসৌরভ। সেকথা স্মরণ করে বাদলের হাওয়ার সাথে তার মনও আঁধার
আঙিনাতে ক্রন্দনে লুটিয়ে পড়ে।
বর্ষার আকস্মিক আবির্ভাবে বনে বনে পল্লবরাশির মাঝে যেন বর্ষার ফুলের বন্যা
বয়ে যায়। নাগকেশর, কদম, কেয়া সে ফুলবন্যার তরঙ্গে ছন্দিত হয়ে উঠে। বর্ষার
এই যৌবনের খেলায় প্রকৃতি যখন মাতোয়ারা, তখন সঙ্গহীনা প্রেমিকার কাছে- নবীন
আমন ক্ষেতের আমোদিত বাতাসও হয়ে ওঠে হতাশার তরঙ্গ। তার আশাহীন মন পুবালি
বাতাসের সাথে উড়ে যেতে চায় দুর প্রবাসী প্রেমিকের কাছে।
- রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। 'গুলবাগিচা' গীতি-সংকলনের প্রথম সংস্করণে [১৩ আষাঢ় ১৩৪০, ২৭ জুন ১৯৩৩]
অন্তর্ভুক্ত হয়ে গানটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল। এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ৩৪ বৎসর ১ মাস
- গ্রন্থ:
-
গুলবাগিচা
- প্রথম সংস্করণ [১৩ আষাঢ় ১৩৪০, ২৭ জুন ১৯৩৩। মুলতান-কানাড়া মিশ্র-দাদরা। পৃষ্ঠা: ৩৯]
- নজরুল রচনাবলী, জন্মশতবর্ষ সংকলন। পঞ্চম খণ্ড। বাংলা একাডেমী। ঢাকা।
জ্যৈষ্ঠ ১৪১৮ মে, ২০১১। গুল-বাগিচা। গান সংখ্যা ৩৪। মুলতান-কানাড়া মিশ্র-দাদরা।পৃষ্ঠা ২৪৪]
- রেকর্ড:
মেগাফোন [জুন ১৯৩৪ (জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ় ১৩৪১)]। জেএনজি
১২০। শিল্পী: প্রতিভা সেন।
- স্বরলিপি ও স্বরলিপিকার:
- পর্যায়: