কানাড়া
উত্তর
ভারতীয় সঙ্গীত পদ্ধতিতে একটি রাগের একটি বিশেষ রূপ। একে সাধারণত অঙ্গ বলা হয়।
কৃষ্ণধন বন্দোপাধ্যায় তাঁর গীতসূত্রসার গ্রন্থে–
অষ্টাদশ কানাড়ার নামোল্লেখ করেছেন। এই ১৮ প্রকার কানাড়ার মধ্যে দরবারী এবং আড়ানা
রাগের ঠাট আশাবরী। বাকি ১৬ প্রকার কানাড়া অঙ্গের রাগ কাফি ঠাটের অন্তর্গত।
বর্তমানে আরও কিছু রাগকে অঙ্গের অন্তর্ভুক্ত করা হয়ে থাকে।
কানাড়া অঙ্গের বৈশিষ্ট্য :
জ্ঞ ম র স, ণ ধ ণ প কিম্বা ণ প জ্ঞ ম স্বরগুলো কোনো না কোনোভাবে প্রয়োগ করা হয়। এক্ষেত্রে পূর্বাঙ্গে জ্ঞ ম র স এবং উত্তরাঙ্গে ণ ধ ণ প অথবা ণ প জ্ঞ ম ব্যবহার করা হয়।
জ্ঞ এবং ধ দুরবল এবং বক্রভাবে ব্যবহৃত হয়।
অধিকাংশ কানাড়া অঙ্গের রাগে গান্ধার আন্দেলিত হয়।
প্রাচীনকালের এই অঙ্গের সকল রাগেই শুদ্ধ ধৈবত ব্যবহার করা হতো। অনেকে মনে করেন, তানসেন প্রথম এই অঙ্গের রাগে কোমল ধৈবত আমাদানী করে 'দরবারী কানাড়া' তৈরি করেন। এর সমগোত্রীয় রাগ 'আড়ানা'-তেও কোমল ধৈবত ব্যবহার করা হয়।
কানাড়া অঙ্গের রাগের বর্ণনানুক্রমিক তালিকা
আড়ানা,
আভোগী কানাড়া,
কাফি-কানাড়া,
কৌশিকী কানাড়া,
গুঞ্জীকানাড়া, জয়জয়ন্তী কানাড়া,
দরবারী-কানাড়া,
দুর্গা
কানাড়া,
নায়েকী কানাড়া,
রায়সা কানাড়া,
শুদ্ধ
কানাড়া, শ্যাম কানাড়া, সুমরাই
কানাড়া, সুহা কানাড়া,
হুসেনী কানাড়া
।
শুদ্ধ কানাড়া
কানাড়া অঙ্গের রাগের শুদ্ধতম রূপ হলো শুদ্ধ কানাড়া। এই রাগের
বিশেষ রূপ যখন অন্য কোনো রাগের ভিতরে সাধারণ বৈশিষ্ট্য হিসাবে প্রকাশ করা হয়, তখন
তাকে কানাড়া অঙ্গের রাগ বলা হয়। এর গতি বিলম্বিত এবং বক্র। গান্ধার ও ধৈবত সব সময়ই
মধ্যম ও নিষাদযুক্ত থাকে। এবং এই স্বরদ্বয় আন্দোলিত হয়।
অবরোহণ
: স র ম জ্ঞ ম প ণ ধ ণ র্স
আরোহণ:
র্স
ধ ণ প ম জ্ঞ ম র স
ঠাট
:
কাফি
জাতি
: সম্পূর্ণ-সম্পূর্ণ
বাদীস্বর
: প
সমবাদী স্বর
: স
অঙ্গ
:
পূর্বাঙ্গ।
সময়
:
রাত্রি দ্বিতীয় প্রহর।
তথ্যসূত্র:
উচ্চাঙ্গ ক্রিয়াত্মক সঙ্গীত। শক্তিপদ ভট্টাচার্য। ১৪ অক্টোবর ১৯৮০।
গীতবল্লরী (১-৫ ভাগ)। শ্রীপ্রশান্ত দাশগুপ্ত।
মগন-গীত ও তানমঞ্জরী, প্রথম খণ্ড। চিন্ময় লাহিড়ী। ১৪ এপ্রিল, ১৯৮৫।
রাগ বিন্যাস (প্রথম কলি)। শ্রীশচীন্দ্র নাথ ভট্টাচার্য্য। এস, চন্দ্র এন্ড কোং।
শারদীয়া সপ্তমী, সেপ্টেম্বর ১৯৭৬।
রাগ-রূপায়ণ। সুরেশচন্দ্র চক্রবর্তী। জেনারেল প্রিন্টার্স য়্যান্ড পাব্লিশাসার্স
প্রাইভেট লিমিটেড। ?।
সঙ্গীত পরিচিত (উত্তর ভাগ)। শ্রীনীলরতন বন্দ্যোপাধ্যায়। হসন্তিকা। ৪ঠা
এপ্রিল। ১৯৭৯।
সঙ্গীত শাস্ত্র। তৃতীয় খণ্ড। শ্রীইন্দু ভূষণ রায়।