বিষয়: নজরুল সঙ্গীত।
শিরোনাম: জয় নারায়ণ অনন্ত রূপধারী বিশাল
রাগ: নিশাশাগ্, তাল: ঝাঁপতাল
জয় নারায়ণ অনন্ত রূপধারী বিশাল।
কভু প্রশান্ত উদার, কভু কৃতান্ত করাল॥
কভু পার্থ-সারথি-হরি
বংশীধারী কংস-অরি,
কভু গোপাল বনমালী কিশোর রাখাল॥
বিপুল মহা-বিরাট কভু বৃন্দাবন-বিলাসী,
শঙ্খ-গদা-চক্র-পাণি মুখে মধুর হাসি।
সৃষ্টি বিনাশে
লীলা-বিলাসে,
মগ্ন তুমি আপন ভাবে অনাদিকাল॥
- ভাবসন্ধান:
এই গানের মাধ্যমে কবি সনাতন হিন্দু ধর্মের অন্যতম দেবতা বিষ্ণুর বিচিত্র রূপ তুলে ধরেছেন।
গানটির স্থায়ীর প্রথম পঙ্ক্তিতে কবি অনন্তরূপ ধারী নারায়ণ তথা বিষ্ণুকে জয়ধ্বনি দিয়ে বন্দনা শুরু করেছেন। উল্লেখ্য, সৃষ্টির আদিতে বিষ্ণু প্রলয় সমুদ্রে অনন্ত নাগের উপর ভাসমান অবস্থায় যোগনিদ্রায় দশায় শায়িত ছিলেন। নার-এ (জলে) শায়িত ছিলেন বলে নারায়ণ। দ্বিতীয় পঙ্ক্তিতে বিষ্ণুকে বন্দনা করেছেন 'কভু প্রশান্ত উদার' এবং কভু কৃতান্ত (যম) করাল (ভয়ানক) অভিধায়।
অন্তরাতে কবি পৌরাণিক আখ্যান অনুসরণে বিষ্ণুর অনন্তরূপের অংশবিশেষকে তুলে ধরেছেন। তিনি মহাভারতে বর্ণিত কুরুক্ষেত্রে যুদ্ধে পার্থে (অর্জুন) রথের সারথী রূপে ছিলেন। তিনি বংশীধারী হয়ে ব্রজবাসী ছিলেন। তিনি অত্যাচারী রাজা কংসের শত্রু হয়ে তাকে বিনাশ করেছিলেন। আবার তিনিই ব্রজে গোপালক রূপে কিশোর বনমালী হয়ে বিরাজ করেছেন।
সঞ্চারীতে কবি, বিষ্ণুর দুটি বিপরীতমুখী রূপকে উপস্থাপন করেছেন। এর একদিকে রয়েছে তাঁর বিপুল মহান রূপ, অন্য দিকে রয়েছে নিতান্তই বৃন্দাবনে রাধা-বিলাসী রূপ। একদিকে শঙখ্,-গদা-চক্র হাতে ভয়ঙ্কর যোদ্ধা, অন্যদিকে প্রেমমধুর হাসি
হাতে অনিন্দ্য-সুন্দর। সৃষ্টি ও বিনাশ তাঁর কাছে যেন খেলা মাত্র এবং প্রলয় ও সৃষ্টির এই খেলাতে
তিনি মগ্ন রয়েছেন অনাদিকাল থেকে।
- রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না।
১৯৩৮ খ্রিষ্টাব্দের ডিসেম্বর (অগ্রহায়ণ-পৌষ ১৩৪৫) মাসে, এইচএমভি গানটির প্রথম
রেকর্ড প্রকাশ করে। এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ৩৯ বৎসর ৬ মাস
- গ্রন্থ:
- নজরুল-সঙ্গীত সংগ্রহ [নজরুল ইনস্টিটিউট ফেব্রুয়ারি ২০১২। গান সংখ্যা
১৩৯৮। রাগ: নিশাশাগ, তাল: ঝাঁপতাল।
পৃষ্ঠা:
৪২২]
- রেকর্ড: এইচএমভি [ডিসেম্বর ১৯৩৮ (অগ্রহায়ণ-পৌষ ১৩৪৫)। নম্বর ১৭২২৮। শিল্পী
ললিতমোহন মুখোপাধ্যায়।]
- স্বরলিপি ও স্বরলিপিকার:
- পর্যায়:
- বিষয়াঙ্গ: ভক্তি (হিন্দুধর্ম, বৈষ্ণব)
- সুরাঙ্গ: ধ্রুপদাঙ্গ
- গ্রহস্বর: সর