বিষয়: নজরুল সঙ্গীত।
শিরোনাম: খুলেছে আজ রঙের দোকান বৃন্দাবনে হোরির দিনে
খুলেছে আজ রঙের দোকান বৃন্দাবনে হোরির দিনে।
প্রেম-রঙিলা ব্রজ-বালা যায় গো হেথায় আবির কিনে॥
আজ গোকুলের রঙ মহলায়
রামধনু ঐ রঙ পিয়ে যায়
সন্ধ্যা-সকাল রাঙতো না গো ঐ হোরির কুম্কুম্ বিনে॥
রঙ কিনিতে এসে সেথায় রবি শশী আকাশ ভেঙে'
এই ফাল্গুনী ফাগের রাগে অশোক শিমুল ওঠে রেঙে'।
আসে হেথায় রাধা-মাধব এই রঙেরই পথ চিনে॥
- ভাবসন্ধান: এই গানটি হোলি-উৎসব উপলক্ষে রচিত। প্রেম, প্রকৃতি ও বৈষ্ণব
ধর্মদর্শনের বিচারে উপস্থাপন করা হয়েছে এই উৎসবের মহিমা। এই গানের প্রেক্ষাপট
জুড়ে- রাধা-কৃষ্ণের মিলনোৎসবের বর্ণাঢ্য আয়োজনের রূপকতায় মিশে আছে আধ্যাত্মিক মিলনের রঙ।
এই গানের হোলির উৎসব-ভূমি বৃন্দাবন। হোলি উৎসবের জন্য প্রেমে রাঙা ব্রজবালারা
রঙ কিনতে আসছেন রঙের দোকানে। এই রঙের দোকানে কেবল হোলি উৎসবের জন্য রঙ
বিক্রয় হয় না। এর আড়ালে থাকে ভক্তের প্রেম ও ভক্তির রঙিন উচ্ছ্বাস। তাই উৎসবে
মাতোয়ারা গোকুলের প্রতিটি গলি যেন রঙে সেজেছে। এই উৎসবের আনন্দ এতই গভীর যে তা
শুধু মর্ত্যলোকে সীমাবদ্ধ থাকে না। কবি কল্পলোকে অনুভব করেন যেন রামধনু
রঙ মহলা থেকে রঙ পান করে রঙিন হয়ে ওঠে। সন্ধ্যা-সকালও এই হোলির কুমকুম ছাড়া রাঙা হয়ে ওঠতো
না। এমনকি সূর্য
ও চাঁদ আকাশ ভেঙে এই রং কিনতে আসে। হোলির রঙিন কুমকুম ছাড়া যেন দিন-রাত্রি
রঞ্জিত হয় না।
এই উৎসবের সব কিছুর মূলে রয়েছেন রাধা ও মাধব (কৃষ্ণ)। তাঁদের প্রেমলীলার পথ
ধরেই এই উৎসবের সৃষ্টি, যা ফাল্গুনের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য (অশোক-শিমুল) থেকে শুরু
করে সমগ্র বিশ্ব-ব্রহ্মাণ্ডকে রঙিন করে তোলে।
- রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায়
না। ১৯৩৭ খ্রিষ্টাব্দের এপ্রিল (চৈত্র ১৩৪৩-বৈশাখ ১৩৪৪) মাসে, টুইন রেকর্ড কোম্পানি এই গানটির রেকর্ড করেছিল।
এই সময় নজরুলের বয়স
ছিল ৩৭ বৎসর ১০ মাস।
- গ্রন্থ: নজরুল-সঙ্গীত সংগ্রহ [নজরুল ইনস্টিটিউট ফেব্রুয়ারি ২০১২।
গান সংখ্যা ২২২]
- রেকর্ড: টুইন। এপ্রিল ১৯৩৭ (চৈত্র
১৩৪৩-বৈশাখ ১৩৪৪)। এফটি ৪৮৪৪। শিল্পী: বীণাপাণি (খেঁদি)
- স্বরলিপিকার ও স্বরলিপি:
সুধীন দাশ।
নজরুল সঙ্গীত স্বরলিপি (নবম খণ্ড)।
প্রথম প্রকাশ, তৃতীয় মুদ্রণ [কবি নজরুল ইন্সটিটিউট। ২ পৌষ, ১৩৯৯ বঙ্গাব্দ/ ১৬ ডিসেম্বর, ১৯৯২ খ্রিষ্টাব্দ। পঞ্চম গান]
[নমুনা]
- সুরকার: কাজী নজরুল ইসলাম
- পর্যায়
- বিষয়াঙ্গ: ধর্মসঙ্গীত, সনাতন হিন্দুধর্ম, বৈষ্ণবসঙ্গীত। হোলি
উৎসব
- সুরাঙ্গ:
হোরি/হোলি
- তাল:
কাহারবা