বিষয়: নজরুল সঙ্গীত।
শিরোনাম: গগনে প্রলয় মেঘের মেলা
গগনে প্রলয় মেঘের মেলা জীবন-ভেলা দোলে টলমল
নীর অপার ভব পরাবার তীর না হেরে পরান বিকল
তীর না হেরে নয়নে পরান বিকল॥
দীন দয়াল ভীত দীন জনে
মাগে শরণ তব অভয় চরণে
দুস্তর দুর্গম দুঃখ জলধি তরিতে চরণ-তরী ভরসা কেবল॥
- ভাবসন্ধান: এই গানে পরমসত্তার কাছে ভক্তের আত্মসমর্পণ ও চরম বিপদের মুহূর্তে তাঁর অভয় চরণে আশ্রয় প্রার্থনা
উপস্থাপিত হয়েছে।
ভক্ত তাঁর জীবনকে এক ভাসমান ভেলা হিসেবে দেখছেন, যা প্রলয় সৃষ্টিকারী মেঘের মেলায় (জীবনের বড় বড় বিপদ ও সংকটে) পড়ে টলমল করছে।
এই জীবন ভেলাটি এমন এক অপার সংসার-সমুদ্রে ভাসছে, যেখান থেকে আশ্রয় পাওয়ার
মতো কূলের দেখা সন্ধান মিলছে না। কূলহীন সেই অপার সংসার সাগরের তীরের সন্ধান না পেয়ে-
কবি বিপন্ন বোধ করছেন। মূলত গানের এই অংশে জীবনের চরম অস্থিরতা ও বিপন্নতার
বিষয়কে উপস্থাপন করা হয়েছে।
কবি পরম ভরসা পরম করুণাময় পরমসত্তার কাছে- কবি নিবেদন করছেন, যে ভীত দীন মানুষ
তাঁরই কাছে আশ্রয়প্রার্থী, তাঁদের প্রতি সদয় হন। কারণ তাঁর জানেন- একমাত্র পরম করুণাময় এই পরমসত্তাই
পারেন
এই অসহ ভব সংসারের দুঃখবেদনা থেকে মুক্ত করতে। সীমাহীন দুঃখ-সাগরে ভরসার
তরণী হতে পারে, তাঁরই ভরসা-চরণ। দুস্তর দুর্গম দুঃখ থেকে একমাত্র তিনি উদ্ধার
করতে পারেন দুঃখ-তাপিত শরণ্যকে।
- রচনাকাল ও স্থান:
গানটির রচনাকাল সম্পর্কে
সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। ১৯৩৩ খ্রিষ্টাব্দের জুলাই (আষাঢ়-শ্রাবণ
১৩৪০) মাসে, এইচএমভি থেকে গানটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল।
এই সময়
নজরুল ইসলামের বয়স ছিল ৩৪ বৎসর ১ মাস।
উল্লেখ্য,
নজরুল-গীতি অখণ্ড গ্রন্থটিতে (হরফ প্রকাশনী, জানুয়ারি ২০০৪, পৃষ্ঠা: ২৪৮) এই গানের রচয়িতা সম্বন্ধে কিছু তথ্য দেয়া হয়েছে―
"কোন প্রামান্য সূত্র নেই, এজন্য গীতিকার সম্পর্কে সংশয় আছে। ২৯.৫.১৯৩৩ তারিখের চুক্তিপত্রে এর জুড়ি গান 'বিজন গোঠে কে রাখাল বাজায় বেণু' কুড়ি নম্বরে রয়েছে। কিন্তু এ গানটি নেই। রেকর্ড বুলেটিনেও 'বিজন গোঠে কে' গানটিকে নজরুল রচিত বলে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু এ গানটি রচয়িতা সম্পর্কে কোন উল্লেখ নেই। পাণ্ডুলিপি সম্পর্কে কোন তথ্য নেই।"
রেকর্ড কোম্পানির রয়্যালিটি রেজিস্টার থেকেও গানটি রচয়িতা সম্পর্কে কোন হদিশ পাওয়া যায় না।
- গ্রন্থ: নজরুল-সঙ্গীত সংগ্রহ [নজরুল ইনস্টিটিউট ফেব্রুয়ারি ২০১২।
গান সংখ্যা ৩১১। তাল: কাহারবা]
- রেকর্ড:
এইচএমভি।
[ জুলাই ১৯৩৩ (আষাঢ়-শ্রাবণ ১৩৪০)। এন ৭১২২। শিল্পী:
ধীরেন্দ্রনাথ দাস] [শ্রবণ
নমুনা]
-
স্বরলিপি ও স্বরলিপিকার:
সুধীন দাশ ও ব্রহ্মমোহন ঠাকুর। [নজরুল-সঙ্গীত স্বরলিপি, একাদশ খণ্ড (নজরুল ইনস্টিটিউট জুন ১৯৯৭)]
নবম গান [নমুনা]
- পর্যায়:
- বিষয়াঙ্গ: ধর্মসঙ্গীত। সাধারণ। পরমসত্তা। প্রার্থনা
- সুরাঙ্গ: ভজন
- রাগ:
ভীমপলশ্রী
- তাল:
কাহারবা
- গ্রহস্বর: পা