বিষয়: নজরুল সঙ্গীত।
শিরোনাম: চঞ্চল শ্যামল এলো গগনে।
চঞ্চল শ্যামল এলো গগনে।
নয়ন-পলকে বিজলি ঝলকে চাঁচর অলক ওড়ে পবনে॥
রিমঝিম্ বৃষ্টির নূপুর বোলে
মৃদঙ্গ বাজে গুরু গম্ভীর রোলে;
হেরি’ সেই নৃত্য ধরার চিত্ত ডুবু ডুবু বরিষার প্রেম-প্লাবনে॥
উ
দাসী বেণু তার অশান্ত বায়ে
বাজে রহি’ রহি’ দূর বনছায়ে;
আকাশে অনুরাগে ইন্দ্রধনু জাগে ভাবের বন্যা বহে বৃন্দাবনে॥
-
ভাবার্থ: প্রকৃতি পর্যয়ের এই গানে কবি তুলে ধরেছেন-
বর্ষার প্রাকৃতিকরূপ এবং মানসলোকে এর প্রভাব। বর্ষার রূপবৈচিত্র্যের চাঞ্চল্য
এবং শ্যামল সৌন্দর্যের ছায়া পড়ে আকাশে। সে ছায়া পড়ে মনলোকের আকাশেও। চোখের পলকে
দেখা বিজুলি-ঝলকে বহ্নি-উৎসবের শিখা হয়ে বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে। এখানে চাঁচর হলো-
দোলযাত্রার পূর্বরাত্রে অনুষ্ঠিত বহ্নি-উৎসব। আর চাঁচড় অলক হলো-
বহ্নি-উৎসবের চুলের মতো অগ্নিশিখা। বর্ষার রিমিঝিম বৃষ্টির শব্দে কবি খুঁজে পান
বর্ষাকন্যার নূপুরের ধ্বনি, গুরুই-গম্ভীর মেঘের শব্দে খুঁজে পান উৎসবে বাদিত
মৃদঙ্গের ধ্বনি। বর্ষার সঞ্চল নৃত্যের মাঝে- বর্ষার প্লাবনের মতই কবির মনও
প্রেম-জোয়ারে প্লাবিত হয়।
কবির মনোলোকে থেমে থেমে বেজে উঠে- দূর বনছায়ে বাদিত শ্যামের উদাসী বেণু। তার
চিত্তাকাশে জেগে ওঠে অনুরাগে মোহিত সুরের ইন্দ্রধনু। ভাবের কল্পলোকে কবির
মন-বৃন্দবনে বহে অনুরাগের প্রবল বন্যা।
-
রচনাকাল ও স্থান:
গানটির
রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে জানা যায় না।
১৯৩৬ খ্রিষ্টাব্দের আগষ্ট (শ্রাবণ-ভাদ্র
১৩৪৩) মাসে
টুইন রেকর্ড কোম্পানি এই গানটির একটি রেকর্ড
প্রকাশ করেছিল। এই
সময় নজরুলের বয়স ছিল ৩৭ বৎসর ২ মাস।
- রেকর্ড: টুইন। আগষ্ট ১৯৩৬ (শ্রাবণ -ভাদ্র ১৩৪৩)। এফটি ৪৫২৮। শিল্পী:
দেবেন বিশ্বাস]
[শ্রবণ নমুনা]
- স্বরলিপিকার ও স্বরলিপি:
সুধীন দাশ।
[নজরুল-সঙ্গীত
স্বরলিপি, দ্বাদশ খণ্ড।
প্রথম সংস্করণ। নজরুল ইন্সটিটিউট আশ্বিন ১৪০৪/অক্টোবর ১৯৯৩। ১৪ সংখ্যক গান]
[নমুনা]
- সুরকার:
নজরুল ইসলাম
- পর্যায়: