বিষয়: 
নজরুল সঙ্গীত
শিরোনাম
: অনাদরে স্বামী প'ড়ে আছি আমি তব কোলে তুলে নাও
	
		অনাদরে স্বামী প'ড়ে আছি আমি তব কোলে তুলে নাও
নিয়ে ধরণীর ধূলি আছি আমি ভুলি' চরণের ধূলি দাও॥
            বিভবে বিলাসে 
	সংসার কাজে
            অশান্ত প্রাণ 
	কাঁদে বন্ধন মাঝে
বৃথা দ্বারে দ্বারে চেয়েছি সবারে এবার তুমি মোরে চাও॥
            যাহা কিছু 
	প্রিয় জীবনের মম
            হরিয়া লহ তুমি, 
	লও প্রিয়তম।
            সূর্যের পানে 
	সূর্যমুখী ফুল
           
	যেমন চাহিয়া রয় বিরহ-ব্যাকুল
তেমনি প্রভু আমার এ মন তোমার পানে ফিরাও॥
		
	
	- ভাবানুসন্ধান: সংসার-কারগারে বন্দী থেকে কবি মুক্তির আশায় উন্মুখ। 
	তিনি মনে করেন যে, জগৎ-সংসারের অপার বৈভবের মাঝে তিনি যেন পৃথিবীর তুচ্ছ ধূলি 
	কণা হয়ে, সংসারে ধূলিকণার খেলায়- পড়ে আছেন অনাদরে অবহেলায়। এই কারাগার থেকে 
	মুক্তিদাতা একমাত্র পরম স্রষ্টা। সংসারে এই বন্দীদশা থেকে মুক্তি লাভের আশায় কবি 
	স্রষ্টার করুণার পদরেণু প্রত্যাশা করেছেন এই গানে। 
	সংসার কারাগারে বন্দী
	অসহায় অবহেলিত কবির কাছে স্রষ্টাই হয়ে উঠেছে শেষ অবলম্বন। 
 
 গানটির অন্তরাতে একই অভিব্যক্তি প্রকাশ পেয়েছে। কবি মনে করেন,
	সংসারের বৈভব বিলাসে কাল কাটিয়ে, তাঁর মন অশান্ত বিপর্যস্ত।  সে বন্দী দশা থেকে মুক্তির আশায় বৃথাই দ্বারে দ্বারে ঘুরেছেন কবি। কিন্তু কোথাও 
	মুক্তির পথ খুঁজে পান নি। তাই সবশেষে পরম মুক্তিদাতা স্রষ্টার কাছে নিজেকে 
	নিবেদন করেছেন তাঁর কাঙ্ক্ষিত মুক্তির আশায়।
 
 কবির নানা প্রিয়তর বিষয়, তাঁকে সংসারে মায়া-কারাগারে বন্দী করে রেখেছে।  
	তিনি কোথায়ও তাঁর মুক্তির কোনো পথ খুঁজে পান নি। তাই সংসারের বন্ধন দশা থেকে মুক্তি লাভে 
	ব্যর্থ কবি, নিজেকে সমর্পণ করেছেন স্রষ্টার পায়ে। যেন তিনি প্রিয়তম হয়ে তাঁর 
	সংসার-মোহ থেকে মুক্তির জন্য তাঁর প্রিয়তর সবকিছু হরণ করে নেন। কবির এই 
	প্রার্থনা তুলে ধরেছেন সূর্য ও সূর্যমুখী ফুলের উপমায়। প্রিয়তম সূর্যের প্রেম-করুণা 
	পাওয়ার আশায় সূর্যমুখী যেমন বিরহ-ব্যাকুল হৃদয়ে সূর্যের দিকে চেয়ে থাকে। কবিও তেমনি পরম 
	ত্রাণকর্তারূপী স্রষ্টার করুণা পাওয়ার আশায় তাঁর দিকে চেয়ে আছেন।
 
 স্রষ্টা চান তাঁর ভক্তের কাছে একনিষ্ঠ ভক্তি। কবির সংশয় হয়তো সংসারের মোহে নিজকে 
	একনিষ্ঠ ভক্ত হয়ে উঠতে ব্যর্থ হবেন। তাই স্রষ্টার কাছে তাঁর একান্ত প্রার্থনা, 
	যেন তিনি তাঁর অপার করুণায়, একান্ত ভক্ত হয়ে ওঠার সৌভাগ্য  দান করেন।
 
- রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে জানা যায় না। ১৯৩৭ 
	খ্রিষ্টাব্দের সেপ্টেম্বর (ভাদ্র -আশ্বিন ১৩৪৪) মাসে,  টুইন রেকর্ড কোম্পানি 
	থেকে গানটির প্রথম রেকর্ড প্রকাশিত হয়েছিল। এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ৩৮ বৎসর ৩ মাস।
 
- রেকর্ড: টুইন। 
		সেপ্টেম্বর ১৯৩৭ (ভাদ্র -আশ্বিন ১৩৪৪)। এফটি
		১২০৯৭। 
	শিল্পী: 
		মোহনলাল সুকুল (শুল্কা)।
 
 এর জুড়ি গান: প্রভু তোমারে খুঁজিয়া মরি ঘুরে ঘুরে বৃথা দূরে চেয়ে থাকি  
	[তথ্য]
 
- স্বরলিপিকার ও স্বরলিপি:
	আহসান মুর্শেদ। 
	নজরুল সঙ্গীত স্বরলিপি (ঊনবিংশ খণ্ড)। প্রথম গান। ] [
	নমুনা]
- সুরকার: সুবল দাশগুপ্ত
 
- পর্যায়:
	
		- বিষয়াঙ্গ: ধর্মসঙ্গীত। সাধারণ। পরমসত্তা।  প্রার্থনা
- সুরাঙ্গ: ভজন 
- রাগ: 
		গৌড়সারং