বিষয়: নজরুল সঙ্গীত।
শিরোনাম: বনের হরিণ আয় রে বনের হরিণ আয়
বনের হরিণ আয় রে বনের হরিণ আয়
কাজল-পরা চোখ নিয়ে আয় আমার আঙিনায় রে॥
(দেখ্) নেই বনে কেউ এক্লা দুপুর
আয় ঝরা পাতায় বাজিয়ে নূপুর, ঝুমুর ঝুমুর
তোরে ডাকে নোটন পায়রার দল ডাকে মেঘের ঝরোকায় রে॥
কি দেখে তুই ধীরি ধীরি চাস্ রে ফিরি ফিরি,
বন্-শিকারির তীর নহে ও, ঝরনা ঝিরি ঝিরি।
মাদল বাজে ঈশান কোণে
ঝড় উঠেছে আমার মনে
সেই তুফানের তালে তালে নাচ্বি চপল পায় রে॥
- ভাবার্থ: মন্মথরায়ের রচিত রেকর্ড নাটিকাতে ব্যবহৃত এই গানটিতে বন্য
হরিণীর আরণ্যক-সৌন্দর্যকে উপস্থাপিত করা হয়েছে, কল্পবাস্তবতার আলোকে। শিল্পীর
এই সৌন্দর্য বোধে তিনি বনের হরিণের কাজল-পরা মায়াবী চোখে মুগ্ধ। তাকে সাদরে বরণ
করে নেয়ার জন্য শিল্পী আহবান করেছেন গান গানে। বন্য হরিণী লোকালয়ে আসতে ভয় পায়।
তাই শিল্পী তাকে অভয় দিয়ে বলছেন- ভরা দুপুরে বন এখন নির্জন। তাই ঝরা পাতার
ঝুমুর ঝুমুর নূপুর বাজিয়ে সে যেন তার আঙিনায় আসে।
মেঘের ঝরোকাতে (ছিন্ন মেঘের জাল, এখানে ছিন্ন মেঘের ফাঁকে আলোছায়ার খেলা বুঝানো
হয়েছে) তাকে ডাকছে নোটন পায়রার দল। ঝর্নার ঝিরিঝিরি শব্দে ভীতু হরিণী শিকারীর
তীর ভেবে আসের পথে ফিরে ফিরে চায়। শিল্পী তাকে সেকথা জানিয়ে হরিণীকে অভয় দান
করেন। ঈশান কোণে ঝড়ের পূর্বাভাষে, শিল্পীর মনেও ঝড় উঠে। তিনি চান এই ঝড়ের তালে
তালে এই বনের হরিণী যেন চপল পায়ে নেচে তার অঙিনাকে ছন্দময় করে তোলে। এখানে এসে
বনের হরিণী আর মনের হরিণী একাকার হয়ে গেছে। এই হরিণী হয়ে উঠছে কল্পবাস্তবতার
প্রতিমূর্তি।
- রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে
কিছু জানা যায় না। ১৯৪০ খ্রিষ্টাব্দের জুন (জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ় ১৩৪৭) মাসে এইচএমভি
রেকর্ড কোম্পানি থেকে গানটির
একটি রেকর্ড প্রকাশিত হয়েছিল। এই সময় নজরুল ইসলামের বয়স ছিল ৪১ বৎসর ১ মাস।
- রেকর্ড:
- এইচএমভি। জুন
১৯৪০ (জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ় ১৩৪৭)। এন ১৭৪৬৯। শিল্পী: পারুল সেন
- এইচএমভি।
রেকর্ড নাটিকা
লাইলী মজনু।
নাট্যকার
মন্মথ রায়।
আগষ্ট ১৯৩৫ (শ্রাবণ-ভাদ্র ১৩৪২)। এন ৭৩৯৬। মজনুর গান। শিল্পী: ধীরেন দাস।
- স্বরলিপিকার ও স্বরলিপি:
- সুরকার: নজরুল ইসলাম
- পর্যায়:
- বিষয়াঙ্গ: প্রকৃতি (জাগতিক, বনের হরিণ)
- সুরাঙ্গ: স্বকীয় বৈশিষ্ট্য
- তাল: দ্রুত:
দাদরা
[রশিদুন্ নবী-কৃত স্বরলিপি]
- গ্রহস্বর: রা [রশিদুন্ নবী-কৃত স্বরলিপি]