বিষয়: নজরুল সঙ্গীত।
শিরোনাম: যাহা কিছু মম আছে প্রিয়তম সকলি নিয়ো হে স্বামী
রাগ: সিন্ধু-ভৈরবী, তাল: যৎ (৮ মাত্রা)
যাহা কিছু মম আছে প্রিয়তম সকলি নিয়ো হে স্বামী
যত সাধ আশা প্রীতি ভালোবাসা সঁপিনু চরণে আমি॥
ধ’রে যা’রে রাখি আমার বলিয়া
সহসা কাঁদায়ে যায় সে চলিয়া
অনিমেষ, আঁখি তুমি ধ্রুবতারা জাগো দিবসযামী॥
মায়ারি ছলনায় পুতুল খেলায়
ভুলাইয়া প্রভু রেখেছিলে আমায়
ভুলেছি সে খেলা আজি অবেলায় তোমারই দুয়ারে থামি॥
- ভাবার্থ: স্রষ্টার কাছে সমর্পণের অভিব্যক্তি এই গানে
অপূর্ব মহিমায় উপস্থাপিত হয়েছে। কবি সপ্রণয় প্রণতিতে তাঁর জাগতিক বাসনা,
প্রত্যাশা, অনুরাগ- সবই কিছু নিবেদন করতে চান তাঁর আরাধ্য প্রভুর কাছে।
অন্তরাতে কবি আক্ষেপ ও অভিমানে বলেন- অতিবাহিত জীবনে নিজের বলে যা কিছু ধরে
রাখার চেষ্টা করেছেন, তা সবই একে আকস্মিকভাবে হারিয়ে গেছে। হারানোর
গভীর দুঃখে বারবার ব্যথিত হয়েছেন। কবি অনুভব করেন, তাঁর কাঙ্ক্ষিত
সবকিছু হারিয়ে গেলেও একমাত্র তাঁর আরাধ্য পরমপ্রভু চিদাকাশে ধ্রুবতারার মতো
অনিমেষে অহর্নিশি জেগে রয়েছেন।
সঞ্চারী ও আভোগে এই ভাবনা থেকেই কবি বলেন- এ জগৎ মায়াময় প্রপঞ্চ। সেই
মায়াময় জগতের যাপিত জীবন যেন স্রষ্টারই সৃষ্ট পুতুল খেলার মতো। জগৎ-সংসারের
সেই খেলার মোহে জীবনের প্রকৃত সত্যকে ভুলে ছিলেন। সে মোহের আবরণ সরিয়ে,
অবশেষে জীবনের শেষ লগ্নে এসে তিনি দাঁড়িয়েছেন- তাঁর আরাধ্য প্রভুর দুয়ারে।
সেখানে তাঁর শেষ নৈবেদ্যের শেষ নিবেদন। এই নিবেদনে তিনি নিজেই পূজারী নিজেই
পূজার্ঘ।
- রচনাকাল ও স্থান:গানটির
রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। ১৯৩৪ খ্রিষ্টাব্দের আগষ্ট
(শ্রাবণ-ভাদ্র ১৩৪১) মাসে, এইচএমভি রেকর্ড কোম্পানি থেকে গানটির প্রথম রেকর্ড প্রকাশিত
হয়েছিল। এই সময় নজরুলের
বয়স ছিল ৩৫ বৎসর ১ মাস।
- গ্রন্থ:
- গানের মালা।
- প্রথম সংস্করণ আশ্বিন ১৩৪১ বঙ্গাব্দ (সেপ্টেম্বর-অক্টোবর ১৯৩৪ খ্রিষ্টাব্দ)।
৮৯। সিন্ধু ভৈরবী-যৎ
- নজরুল রচনাবলী। জন্মশতবর্ষ সংকলন ষষ্ঠ খণ্ড। বাংলা একাডেমী, ঢাকা। জ্যৈষ্ঠ ১৪১৯, জুন ২০১২। সিন্ধু ভৈরবী-যৎ।
গান সংখ্যা ৮৯। পৃষ্ঠা: ২৪৬-২৪৭।
- স্বরলিপি ও স্বরলিপিকার: সেলিনা হোসেন
[একবিংশ খণ্ড,
নজরুল ইন্সটিটিউট, ঢাকা] ২১ সংখ্যক গান।
[নমুনা]
- সুরকার:
নজরুল ইসলাম
- পর্যায়:
- বিষয়াঙ্গ: ভক্তি (সাধারণ)
- সুরাঙ্গ: টপ্পা
- তাল:
যৎ (৮)
- গ্রহস্বর: ধধা