বিষয়:
নজরুল সঙ্গীত
শিরোনাম:
(মা) ওমা তোর ভুবনে জ্বলে এত আলো
(মা) ওমা তোর ভুবনে জ্বলে এত আলো
আমি কেন অন্ধ মাগো দেখি শুধু কালো॥
মা সর্বলোকে শক্তি ফিরিস নাচি
ওমা আমি কেন পঙ্গু হয়ে আছি
ওমা ছেলে কেন মন্দ হল জননী যার ভালো॥
তুই নিত্য মহা প্রসাদ বিলাস কৃপার দুয়ার খুলি
চির শূন্য রইল কেন আমার ভিক্ষা ঝুলি।
বিন্দু বারি পেলাম না মা সিন্ধুজলে রয়ে
মা ও তোর চোখের কাছে পড়ে আছি চোখের বালি হয়ে
মোর জীবন্মুত এই দেহে মা চিতার আগুন জ্বালো॥
- ভাবসন্ধান: বিদ্যারূপিণী দেব দুর্গা জগতে প্রতিষ্ঠাতা। জ্ঞানালোকে
উদ্ভাসিতে সে জগতে জ্ঞানহীন ভক্ত শুধু দেবীর কালো রূপই দেখেন। মাতৃরূপিণী দেবী
সর্বলোকে শক্তিরূপিণী সত্তায় নৃত্যময়ী হয়ে বিরাজ করেন। কিন্তু ভক্ত তাঁর সাথে
তাল মিলিয়ে নৃত্যানন্দে নাচতে পারেন না। তিনি মায়ের সে জগতে পঙ্গু হয়ে বসে
থাকেন। তাই অভিমানী ভক্ত সকাতরে দেবীর কাছে জানতে চান- যার জননী এত উত্তমা,
তাঁর সন্তান কেন এত অধম।
মাতৃরূপিণী এই দেবী তাঁর অবারিতা হাতে করুণার প্রসাদ অকাতরে বিলিয়ে দেন, তাঁর
সন্তানের ভিক্ষার ঝুলি শূন্য পড়ে থাকে। মায়ের কৃপাসিন্ধুতে বাস করেও ভক্ত
বিন্দুমাত্র করুণা পান না। অভিমানী সন্তান সকাতরে বলেন- মায়ের কৃপাসুন্দর দৃষ্টি
থেকেও তিনি যেন মায়ের বিরাগভাজন রূপে চোখের বালি (চক্ষুশূল)
হয়ে রয়ে গেছেন। ভক্ত মনে করেন মায়ের এই চির প্রাণবন্ত জগতে তিনি যেন জীবন্মুত
হয়ে বেঁচে আছেন। তাঁর এই ভাবে বেঁচে থাকার মধ্যে ভক্ত কোনো সার্থকতা পান না।
তাই দেবীর কাছে তাঁর শেষ প্রার্থনা তিনি যেন তাঁর মূল্যহীন দেহকে চিতার আগুনে
ভস্মীভূত করে দেন।
- রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা
যায় না। ১৯৪১ খ্রিষ্টাব্দের সেপ্টেম্বর (ভাদ্র-আশ্বিন ১৩৪৮) মাসে এইচএমভি রেকর্ড
কোম্পানি থেকে এই গানটির প্রথম রেকর্ড প্রকাশিত হয়েছিল। এ সময় নজরুলের বয়স ছিল ৪১
বৎসর ৩ মাস।
- গ্রন্থ: নজরুল-সঙ্গীত সংগ্রহ, [নজরুল ইনস্টিটিউট, মাঘ ১৪১৮।
ফেব্রুয়ারি ২০১২। গান সংখ্যা ৭৮৪।
- রেকর্ড:
এইচএমভি। সেপ্টেম্বর ১৯৪১ (ভাদ্র-আশ্বিন ১৩৪৮)। এন ২৭১৮২।
শিল্পী: মৃণালকান্তি ঘোষ।
- স্বরলিপি ও স্বরলিপিকার: নিখিলরঞ্জন নাথ
[নজরুল
সঙ্গীত স্বরলিপি, তেইশতম খণ্ড, নজরুল ইন্সটিটিউট, ঢাকা। কার্তিক ১৪০৯
নভেম্বর ২০০২ খ্রিষ্টাব্দ] তৃতীয় গান।
[নমুনা]
- সুরকার:
কমল দাশগুপ্ত
- পর্যায়:
- বিষয়াঙ্গ: ধর্মসঙ্গীত। সনাতন হিন্দুধর্ম। শাক্ত। দুর্গা।
মাতৃরূপিণী, অভিমান
- সুরাঙ্গ: ভজন
- তাল:
দাদরা
- গ্রহস্বর: গমা